নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটে ব্যাটিং বিনোদন দিয়ে মাঠে দর্শক টেনেছেন যারা, তাদের অগ্রভাগে থাকবেন শ্রীলঙ্কার সনাথ জয়সুরিয়া। ১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপ জয়ের নায়কও তিনি। বিশ্বকাপের সেই আসরের মোস্ট ভেল্যুয়েবল ক্রিকেটারের পুরস্কার জিতে যে জয়সুরিয়ার আবির্ভাব দেখেছে বিশ্ব, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শেষ দিন পর্যন্ত জয়সুরিয়াকে সেই পরিচিত বৈশিষ্ট্যেই দেখেছে সবাই। তিন ভার্সনের ক্রিকেট মিলে ২০১৩২ রানের এই শ্রীলঙ্কান লিজেন্ডারি ওয়ানডে ক্রিকেটে ১৩৪৩০ রানের পাশে শিকার করেছেন ৩২৩ উইকেট। এক দিবসীয় ক্রিকেটে এমন রেকর্ড নেই কারো। টেস্টে শ্রীলঙ্কার প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান ওয়ানডে ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কার পক্ষে সর্বোচ্চ ইনিংসটিরও মালিক (১৮৯ রান)। অথচ, ওয়ানডে ক্রিকেটে যে বাঁ হাতির স্ট্রাইক রেট ৯০.২০Ñসংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটের আদর্শ এই বিজ্ঞাপন টি-২০ খেলার পেয়েছেন মাত্র ৩১টি ম্যাচ। তারপরও ২২ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ‘মাতারা হ্যারিকেন’ নাকি সীমিত ওভারের ক্রিকেটের চেয়ে টেস্টকেই করেন পছন্দ বেশি! রাজনীতি ছেড়ে দিয়ে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব দ্বিতীয় মেয়াদে পালনকেও ব্রত হিসেবে নিয়েছেন। গতকাল ম্যাচের এক ফাঁকে বাংলাদেশ মিডিয়ার সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন খোলাখুলি অনেক কথা। বলেছেন শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে নিয়ে তার পরিকল্পনার কথা। বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতিতে বিসিবি’র ভুমিকাকে জানিয়েছেন ধন্যবাদ। গতকাল গলে তার সাক্ষাতকারের চৌম্বক অংশ সাজিয়েছেন দৈনিক ইনকিলাবের বিশেষ সংবাদদাতা শামীম চৌধুরী
শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করছেন। এই দলটিকে নিয়ে আপনার পরিকল্পনা?
জয়সুরিয়া : শ্রীলঙ্কার তরুণ দলটিকে নিয়ে এই মূহূর্তে তৈরি করার চেষ্টা করছি। বেশ ক’জন মেধাবী তরুণকে পেয়েছি। তাদেরকে সুযোগ দিচ্ছি এবং তারা ভাল খেলছে। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে থিতু হতে আরো কিছু সময় লাগবে। শ্রীলঙ্কায় আমরা ভাল করেছি, তবে নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দ.আফ্রিকা সফর নিয়ে আমি খুশি নই। আমরা একটা অন্তবর্তীকালীন সময়ের মধ্যে কাটাচ্ছি,খেলোয়াড়দের থিতু হতে আরো কিছু সময়ের প্রয়োজন।
ষ আপনি যখন ক্রিকেটার তখন তো শ্রীলঙ্কা বিশ্বকাপ ট্রফি জিতেছে। স্বর্ণালী অধ্যায় ফিরে পেতে শ্রীলঙ্কাকে এখন কতোটা অপেক্ষা করতে হবে?
জয়সুরিয়া : নির্দিষ্ট সময়ের কথা বলতে পারব না। আমরা শুরুতে যা করেছিলাম, এখন যারা খেলছে, তারাও সে অভিজ্ঞতা নিয়ে একসময় আসবে বলে আশা করছি। এটা নির্ভর করছে তারা কতোটা সুযোগ পাবে এবং পারফর্ম করে তারা কতোদিন দলে থাকবে, তার উপর।
ষ বিশ্বকাপে তো ট্রফি জিততে পারছে না শ্রীলঙ্কা অনেক দিন। দলের ব্যর্থতায় কি আপনি হতাশ?
জয়সুরিয়া : অন্ততঃ আমরা দু’বার ফাইনাল এবং বেশ ক’বার সেমিফাইনাল খেলতে পেরেছি। এর অর্থ আমরা সঠিক পথে আছি। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট রাজ্য দলগুলোর জন্য অনেক কিছু করছে। বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটে মেধাবি ক্রিকেটার এখন খোঁজা হচ্ছে। তাই শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে এখন কঠিন কাজ করতে হচ্ছে। বিশ্বকাপ জিততে পারিনি, তাতে কি, আমরা তো ফাইনাল এবং সেমিফাইনালে যেতে পেরেছি। এর অর্থ আমরা সঠিক পথে আছি।
ষ আপনার ক্রিকেট ক্যারিয়ার তো অনেক লম্বা। এখন নির্বাচকের দায়িত্বে আছেন?
জয়সুরিয়া : আমার জার্নিটা অনেক ভাল। ক্রিকেটে যা করেছি, তা নিয়ে আমি খুশি। এটাই আমাকে নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। এর আগের মেয়াদে ২ বছর দলকে উপরে তুলে এনেছি। ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ২০ বছরে যা কিছু করেছি, নির্বাচক হিসেবেও শ্রীলঙ্কার জন্য তা করতে চেষ্টা করেছি। তাই প্রতিটি দায়িত্ব পালনে আমি খুশি থাকতেই পারি। যতোদিন সম্ভব শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের জন্য কিছু একটা করতে চাই।
ষ এখন তো টি-২০ ক্রিকেট চলে এসেছে। যে ভার্সনের ক্রিকেটের সঙ্গে আপনাকে দারুণ মানিয়ে নিত?
জয়সুরিয়া : এটা একটা ডিপার্টমেন্ট। টি-২০ চলে এসেছে, ৫০ ওভারের ক্রিকেটও আছে, টেস্ট ক্রিকেটও আছে। ওটা (টি-২০) একটা ডিপার্টমেন্ট, যেখানে টি-২০ সবাই উপভোগ করছে। আমি নিজেও উপভোগ করি। কিন্তু আমার কাছে প্রথম অগ্রাধিকার টেস্ট ক্রিকেট। আমি টেস্ট ক্রিকেটই ভালবাসি।
ষ কিন্তু আপনার স্টাইল তো আক্রমণাত্মক ছিল?
জয়সুরিয়া : আমার স্টাইল আক্রমণাত্মক ক্রিকেট। তবে এই স্টাইলেই টেস্ট, ওডিআই, টি-২০ সব ফরমেটের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছি।
ষ একটা মাইলস্টোনের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। শততম টেস্ট খেলবে শ্রীলঙ্কায়- বাংলাদেশ দলকে কেমন দেখছেন?
জয়সুরিয়া : তারা আসলেই দারুণ উন্নতি করছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তৃনমূলের ক্রিকেটের উন্নতিতে অনেক কাজ করছে। বাংলাদেশে তরুণরা যেভাবে উঠে আসছে, তা আসলেই দারুণ। এই মূহূর্তে তারা ভাল একটা দল পেয়ে গেছে। লম্বা সময় ধরে তারা এখন খেলছে। যদিও কখনো কখনো উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে চলছে, তারপরও দলটি দারুণ। তাদের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড অনেক কিছু করছে।
ষ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য কোন উপদেশ?
জয়সুরিয়া : কেউ যদি সুযোগ পায়, তাহলে সে যদি কুশল মেন্ডিজের মতো বড় সেঞ্চুরি করে, তা দলের জন্য সহায়ক হবে।
ষ কুশল মেন্ডিজকে কেমন দেখলেন?
জয়সুরিয়া : সে লম্বা ইনিংসের ক্রিকেটার। আমরা দ.আফ্রিকায় কঠিন সময় পার করেছি। সেই সফরে সে বেশ ক’টি ফিফটি করেছে, তবে তা সেঞ্চুরিতে পরিণত করতে পারেনি। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া সিরিজে সে বড় সেঞ্চুরি করেছে,আমরা সেই সফরে জিতেছি ৩-০তে। সে এখানে একটা সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ১৯৪ করেছে। এটাই হওয়া উচিৎ ছিল। সব সময় আমাদের দরকার টপ অর্ডারে এমন ৫ জন যাদের মধ্যে অন্ততঃ একজন বড় সেঞ্চরি করতে পারে।
ষ সাঙ্গাকারা, জয়বর্ধনের রিপ্লেসমেন্ট কি পেতে যাচ্ছেন?
জয়সুরিয়া : তাদের মাপের ক্রিকেটার রাতারাতি পাওয়া সম্ভব নয়। এখনো অরবিন্দ ডি. সিলভার রিপ্লেসমেন্ট পাওয়া যাবে না। সে জন্য কাউকে না কাউকে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য সুযোগ দিতে হবে, তখন এমন একদিন আসবে যেদিন এই সব ক্রিকেটারকে নিয়ে কথা বলতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।