নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী, গল (শ্রীলঙ্কা) থেকে : -ওদের টপ অর্ডার চার ব্যাটসম্যান পড়ে গেছে। এখন ওদের প্রধান দুই ব্যাটসম্যান আছে। কাল (আজ) যদি ওদের এই ২ ব্যাটসম্যানের উইকেট তাড়াতাড়ি নিতে পারি, তাহলে লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানরা এই উইকেটে বেশি রান করতে পারবে না। আমাদের টার্গেট থাকবে রান চেক করে সকালে ওদের দু’জনের উেইকেট নেয়া Ñপ্রথম দিনের খেলা শেষে মেহেদী হাসান মিরাজ
-পাল্লেকেলেতে ডাবল সেঞ্চুরি মিস করেছি। তাই আমি ডাবল সেঞ্চুরি পেতে মুখিয়ে আছি। আমি সেট ব্যাটসম্যান বলে দল আমার কাছে বড় স্কোর প্রত্যাশা করছে। যদি বেশি নাও করা সম্ভব হয়, তাহলেও ২শ’র চেষ্টা করব Ñপ্রথম দিনের খেলা শেষে কুশল মেন্ডিজ
প্রথম দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে ২ জনের এই বক্তব্য দ্বিতীয় দিন মিলিয়ে দেখুন। কথা রাখতে পেরেছেন বাংলাদেশ অফ স্পিনার মিরাজ, পারেননি লংকান টপ অর্ডার কুশল মেন্ডিজ।
শূন্যতে জীবন পেয়েছেন, শুভাশিষের ‘নো’ বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া কুশল মেন্ডিজ প্রথম দিনে ২টি রেকর্ডে লিখিয়েছেন নাম। শ্রীলংকা ক্রিকেটারদের মধ্যে দ্রুততম হাজারী ক্লাবের সদস্য পদে নাম লেখানোর ইনিংসে বাংলাদেশের বিপক্ষে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১৯৬ রানে দিয়েছেন নেতৃত্ব। প্রথম দিন শেষে তার অবিচ্ছিন্ন ১৬৬-তে নিজের প্রথম ডাবলের স্বপ্ন দেখা কুশল দলকেও দেখিয়েছেন ৫শ’ প্লাসের স্বপ্ন। কাকতালীয় হলেও সত্য, গতকালও শুভাশিষের শিকারে পরিণত হতে গেছেন বেঁচে। ১৭৫ রানের মাথায় ডিপ ফাইন লেগে ক্যাচ নিয়ে মুস্তাফিজ বাউন্ডারী রোপ স্পর্শ করায় পেয়েছেন বোনাস ছক্কা!
কৈ মাছের প্রাণ হয়ে শ্রীলংকার ড্রেসিংরুমে স্পন্দন দেয়া এই ব্যাটসম্যান যেভাবে গতকাল প্রথম সেশনে করেছেন ইতিবাচক ব্যাটিং, তাতে গত বছর পাল্লেকেলেতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৭৬ টপকে ডাবল সেঞ্চুরির পথেই বাড়িয়েছিলেন পা। সাঙ্গাকারা (৩টি), ডি সিলভা, আতাপাত্তু, জয়বর্ধনের পর ৪র্থ শ্রীলংকান হিসেবে বাংলাদেশের বিপক্ষে কুশল মেন্ডিজের ডাবল সেঞ্চুরি অবধারিত বলে ধরেই নিয়েছিলেন গল ছড়িয়ে ছিটিতেএ খেলা দেখতে আসা হাজার দুই দর্শক। কিন্তু তাকে সে স্বপ্ন পূরণ হতে দেননি মিরাজ। দিনটিতে নিজের প্রথম ওভারে শট খেলতে প্রলুদ্ধ করে সফল হননি মিরাজ। উল্টো দিনে নিজের দ্বিতীয় বলে সুইপ শটে মিড উইকেটের উপর দিয়ে ছক্কায় ১৯০’র ঘরে কুশলকে যেতে দেখেছেন মিরাজ। ছক্কার শটে প্রলুদ্ধ করেছেন কুশলকে গতকাল নিজের তৃতীয় ওভারে আরো একবার। এবার আর বিফল হননি, ছক্কার শটে ডাবলের চেষ্টা হয়েছে ব্যর্থ, লং অনে শরীরের ভারসাম্য রেখে বাউন্ডারি রোপের দিকে তাকিয়ে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় অসাধারণ ক্যাচে কুশল মেন্ডিজকে ১৯৪ এ ফিরিয়ে দিয়েছেন তামীম।
দ্রুত সেট পার্টনারশিপের ২ ব্যাটসম্যান কুশল মেন্ডিজ, ডিকভেলাকে ফিরিয়ে দিতে পারলেই পাল্টে যাবে দৃশ্যপট, এসনটাই বিশ্বাস ছিল মিরাজের। কথাটা রেখেছেন, দুই সেট ব্যাটসম্যানকেই দিয়েছেন ফিরিয়ে। দিনের প্রথম ব্রেক থ্রু’র জন্য অপেক্ষা ১৬ ওভার। যে পর্বে ওয়ানডে মেজাজে কুশল-ডিকভেলার ব্যাটিংয়ে স্কোর শিটে যোগ হয়েছে ৭৭ রান। মিরাজের এই একটি ব্রেক থ্রু-ই ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছে বাংলাদেশকে। গতকাল ৩ ঘণ্টা স্থায়িত্ব পাওয়া শ্রীলংকার অবশিষ্ট ইনিংসে যোগ হয়েছে ১৭৩ রান, শেষ ৬ উইকেটের পতন ঘটেছে সেখানে ৯৬ রানে! তা সম্ভব হয়েছে মিরাজের ২টি স্পেলে (৮-১-৩৮-১ ও ১-০-১-১)। সাকিবকে সান্দকান ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে যেয়ে মিরাজের যে ক্যাচে পরিণত হয়েছেনÑ মিড অন থেকে বলের পেছনে ছুটে ১৫-১৬ গজ দৌড়ে ডাইভ দিয়ে নেয়া সেই ক্যাচটি এক কথায় বিশ্বমানের! মিরাজ-মুস্তাফিজ, ২ বিস্ময় বোলারে শ্রীলংকাকে হতভম্ব করতে চেয়েছিলেন হাতুরুসিংহে। এই প্রথম টেস্টে এই জুটির বন্ধন সে প্রত্যাশাই মিটিয়েছে। প্রথম দিন সময়ের সেরা লংকান ব্যাটসম্যান চান্দিমালকে মুস্তাফিজ শিকারে পরিণত করেছেন মিরাজের সহযোগিতায়। গতকাল পরিচিত কাটর ডেলিভারীতে করেছেন শিকার হেরাথকে (২/৬৮)। নিউজিল্যান্ডের ওয়েলিংটন, ক্রাইশ্চচার্চ এবং হায়দারাবাদে এক ইনিংসে ২টি তো অন্য ইনিংসে ০, এভাবেই কেটেছে অফ স্পিনার মিরাজের। তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত টেস্ট অভিষেক সিরিজে ১৯ উইকেটে ইতিহাস রচনা করা মিরাজ বিদেশের মাটিতে দ্যুতি ছড়াতে শেষ পর্যন্ত বেছে নিয়েছেন গল কেই (৪/১১৩)। টেস্টে শ্রীলংকার বিপক্ষে ৫ উইকেটের ইনিংস দু’বার আছে সাকিবের-২০০৮ সালে মিরপুরে, ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে। তবে শ্রীলংকার মাঠে বাংলাদেশ বোলারদের সফল বোলিংয়ের রেকর্ডে এনামুল জুনিয়র এবং সৈয়দ রাসেলের সঙ্গে যৌথভাবে উচ্চারিত হবে মিরাজের নাম। ২০০২ সালে পি সারায় বাঁ হাতি স্পিনার এনামুল জুনিয়র (৪/১৪৪), ২০০৫ সালে একই ভেন্যুতে সৈয়দ রাসেলের (৪/১২৯) পাশে চলমান গল টেস্টে মিরাজের ও শিকার ৪ উইকেট (৪/১১৩)। মিরাজের বোলিংয়ে শ্রীলংকার মাটিতে স্বাগতিক দলকে এই নিয়ে তৃতীয়বার অল আউট করতে পেরেছে বাংলাদেশ। এর আগে ২০০২ সালে এসএসসিতে ৩৭৩ এবং ২০১৩ সালে প্রেমাদাসায় ৩৪৬’র পর গল এ ৪৯৪এ শ্রীলংকাকে অল আউট করলো বাংলাদেশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।