পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : নব্য জেএমবির আধ্যাত্মিক নেতা বলে পরিচিত শায়খ মুফতি মাওলানা আবুল কাশেমকে (৬০) গ্রেফতার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে সাত দিনের পুলিশি রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। সংগঠনের সদস্যরা তাকে বড় হুজুর বলে ডাকত।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম জানান, নব্য জেএমবির আধ্যাত্মিক নেতা কাশেম। সংগঠনের সদস্যরা তাকে বড় হুজুর বলে ডাকে। গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার আগে হামলাকারীরা কাশেমের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়েছিল। তিনি অনুমতি দেয়ার পরই হামলা চালানো হয়। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে কাশেমকে রাজধানীর মিরপুরের পর্বতা সেনপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তিনি একটি বিকাশের দোকান থেকে টাকা আনতে যাচ্ছিলেন। এক ভক্ত তাকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়েছিলেন।
মনিরুল ইসলাম জানান, ২০১৩ সালে তামিম চৌধুরী ও মাওলানা আবুল কাশেমের যৌথ নেতৃত্বে বাংলাদেশে নব্য জেএমবির জঙ্গিবাদী কার্যক্রমের সূচনা হয়। কাশেমের আরেক নাম শায়খ আবু মোহাম্মদ আইমান হাফিজুল্লাহ। গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামে। নামে-বেনামে দাওলার আসল রূপ, জিহাদ কেন করবেন, ইসলামী বসন্ত এরকম অনেক জঙ্গিবাদী বই লিখেছেন তিনি। কাশেম এক সময় দিনাজপুরের রানীর বন্দর এলাকার একটি মাদরাসার প্রিন্সিপাল ছিলেন। পরে তিনি স্বপরিবারে পুরাতন জেএমবির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ২০০৯ সালে জেএমবির একাংশের আমির মাওলানা সাইদুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার পর কাশেমই সংগঠনের ওই অংশের আমির হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি তার নিজস্ব মনগড়া ধর্মীয় মতবাদ দিয়ে নব্য জেএমবিকে হিংস্র করে তোলেন। তামিম চৌধুরী ২০১৩ সালে কানাডা থেকে আসার পর রাজশাহীতে একটি বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে কাশেমসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। তামিম চৌধুরী, মারজান, হাতকাটা মাহফুজ এবং রাজিব গান্ধী ওরফে জাহাঙ্গীরসহ নব্য জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতাই কাশেমের ভক্ত ছিলেন। সা¤প্রতিক সময়ে গ্রেফতার জঙ্গিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী তাকে গ্রেফতারে বেশ কিছুদিন ধরেই অভিযান চালানো হচ্ছিল। পুলিশের এ কর্মকর্তা আরো জানান, গুলশান হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধীকে গত বছর জানুয়ারিতে গ্রেফতারের পরই কাশেম সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায়। পরে মিজান ওরফে বড় মিজান নামের আরেক জঙ্গিকে গ্রেফতারের পর কাশেমের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য মিলে। মনিরুল ইসলাম জানান, ইসলামের ভ্রান্তযুক্তি তুলে ধরে তিনি তার অনুসারীদের জিহাদে উদ্ধুদ্ধ করতেন। কীভাবে সহজে বেহেশতে যাওয়া যায় সে উপায় বের করে দিতেন তিনি। এ ক্ষেত্রে তিনি কুরআন শরীফের আয়াত ও হাদীস শরিফের অপব্যাখা দিতেন।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে তাকে কল্যাণপুরের জাহাজবাড়িতে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম জানান, গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় চলতি বছরের শেষ দিকে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হতে পারে। তিনি জানান, গুলশান হামলায় এখন পর্যন্ত ২০-২২ জনের সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ১৪ জন নিহত হয়েছে। তবে পরোক্ষভাবে এ হামলায় জড়িত ব্যক্তির সংখ্যা ৩০-৩৫ জন হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১ জুলাই রাতে গুলশান সন্ত্রাসী হামলায় ১৭ জন বিদেশি নাগরিক, পুলিশের একজন সহকারী কমিশনার এবং বনানী থানার তৎকালীন ওসিসহ ২০ জন নিহত হন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।