Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বাংলাদেশকে কুফরির সমুদ্রে বিলীন হতে দেয়া যাবে না -হযরত নেছারাবাদী হুজুর

| প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নেছারাবাদ উপজেলা সংবাদদাতা : লাখো জনতার স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনের মধ্য দিয়ে দেশ-জাতি ও উম্মাহর সার্থে গুরুত্বপূর্ণ ৬দফা প্রস্তাব গ্রহণ, হযরত মাওলানা মুহম্মদ খলীলুর রহমান নেছারাবাদী হুজুরের সমাপনী ভাষণ ও আখেরি মুনাজাতের মধ্য দিয়ে (২২শে ফেব্রুয়ারি, বাদ ফজর) শেষ হল ২পর্বে অনুষ্ঠিত ঝালকাঠি নেছারাবাদের ঐতিহাসিক বার্ষিক ঈছালে ছওয়াব ওয়াজ-মাহফিল।
সমাপনী ভাষণে হযরত নেছারাবাদী হুজুর বলেন ‘কুফরির সমুদ্র-মাঝে জেগে ওঠা ছোট্ট একটি তৌহীদের দ্বীপ বাংলাদেশ। এ দেশ পীর শাহ্ নেছার-শাহজালালের, এ দেশ হযরত শাহ্ বদর-খানজাহানের, এ দেশ হযরত শরফুদ্দীন-শাহ্ মখদুমের। পীর-আওলিয়ার দেশ বাংলাদেশ। তিনদিকে অমুসলিম ভূখন্ড আর একদিকে বিশাল সাগর বেষ্টিত ছোট্ট এই ভূ-খন্ডকে আল্লাহ পাক এতোটাই পছন্দ করেছেন যে, আওলিয়ায়ে কেরামের পদধূলিতে ধন্য এই দেশ বিশ্বাবাসীর জন্য শান্তির মডেল হিসেবে পরিণত হবে, সেদিন বেশি দূরে নয়। কিন্তু‘ আফসোস! মুসলমানদের বিচ্ছিন্নতা এবং এই বিচ্ছিন্নতার সুযোগ গ্রহণকারী মুসলিম-বিদ্বেষী সাম্রাজ্যবাদী চক্রের অব্যাহত ষড়যন্ত্র রূখতে ব্যর্থ হলে তার খেসারত আমাদেরকেই দিতে হবে।’
নেছারাবাদী হুজুর বলেন ‘দলের নামে, মতের নামে, ছেলছেলার নামে ইখতেলাফী বিভিন্ন মাসয়ালাকে কেন্দ্র করে মুসলমানদের মধ্যে একদিকে যেমন অনৈক্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে নাস্তিক্য ও সাম্রাজ্যবাদী ইসলাম বিদ্বেষী চক্র ‘উগ্রবাদী ইসলাম কায়েমকারী’ সৃষ্টির মাধ্যমে ঈমান-আকীদা বিনষ্ট করে মুসলমানদের ইতিহাস-ঐতিহ্য ভুলিয়ে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে! এই আগ্রাসনকারীরা এদেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে, রাজনৈতিক দিক থেকে দেউলিয়া করে কুফরি প্রতিষ্ঠার নাপাক খাহেশ পূরণ করতে চায়! হাদিয়ে যামান, মুজাদ্দেদে মিল্লাত হযরত কায়েদ ছাহের হুজুর (রহ.) এই অশুভ শক্তিসমুহের অপতৎপরতা থেকে দেশ ও জাতির মুুক্তির লক্ষ্যে ‘ইত্তেহাদ-মায়াল ইখতেলাফ’ তথা ‘মাতনৈক্যসহ ঐক্য’ নীতির ভিত্তিতে কলেমায় বিশ্বাসী সকল মুসলমানকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্দেশেই প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ হিযবুল্লাহ জমিয়াতুল মুছলিহীন। আজ বাংলাদেশের কানায়-কানায় মুছলিহীনের বদৌলতে প্রতিধ্বনি উঠেছে তৌহিদের দ্বীপ বাংলাদেশকে কুফরির সমুদ্রে বিলীন হতে দেয়া যাবে না! ঐক্য চাই ঐক্য চাই!’
গৃহীত ৬ দফা প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে ১. নির্ভেজাল সমাজ নির্মাণে সিরাতুল মুস্তাকীম বর্জিত উগ্র ও শিথিলপন্থীদের প্রতিরোধ করা, ২. একটি সম্মিলিত ধারার সৃষ্টি এবং বিভিন্ন ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য আহলে সুন্নত অল-জামাতের অনুসারী সকল হক ছেলছেলার পীর-মাশায়েখ ও অনুসারীদের মুছলিহীনের গৃহীত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে এগিয়ে আসা, ৩. বিগত ৯/১১/২০১৬ইং তারিখে ঢাকাস্থ খানকায়ে মুছলিহীনে দেশের খ্যাতনাম পীর-ছাহেবগণের সম্মিলিত কর্মসূচি মোতাবেক ‘ইত্তেহাদ-মায়াল ইখতেলাফ’ তথা ‘মতানৈক্যসহ ঐক্য’ নীতির ভিত্তিতে হযরত কায়েদ ছাহেব হুজুর (রহ.) প্রদর্শিত নির্দেশনা অনুযায়ী নিজ-নিজ স্বকীয়তা বজায় রেখে পীর-মাশায়েখদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া, ৪. জমিয়াতুল মোদর্রেছীন, দরছে নেজামীর ওলামায়ে কেরাম, পীর-মাশায়েখ ও সচেতন ধর্ম প্রাণ মানুষের দাবি ও অনুভূতির মূল্যায়ন করে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন করায় কৃতজ্ঞতা জানিয়ে উচ্চশিক্ষা ও শসস্ত্র বাহিনীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মাদ্রাসা ছাত্রদের প্রতি বৈষম্য সৃষ্টিকারী ধর্মদ্রোহী নাস্তিকদের ফাঁদে পা দিয়ে সরকারের জনবিচ্ছিন্ন না হওয়া, ৫. সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ন্যায় বিচারের কথিত প্রতীক হিসেবে স্থাপিত গ্রীক দেবীর মূর্তি অপসারণ করা এবং ৬. মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের রক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সঙ্গে নিয়ে কূটনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণসহ তথাকথিত বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ও বর্মী সরকারকে আন্তর্জাতিক আদালতে যুদ্ধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শাস্তির ব্যবস্থা করা।
উল্লেখ্য, ২ পর্বের মাহফিলে ওয়াজ-নসীহতের পাশাপাশি ইসলামী জীবন গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় তা’লীম ও প্রশিক্ষণও প্রদান করা হয়। এছাড়া, দেশের খ্যাতনামা মুহাক্কেক ওলামায়ে কেরামগণ এতে উপস্থিত থেকে মূল্যবান নসীহত পেশ করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ