Inqilab Logo

বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘শিম’ প্রোটিন ফাইবার ও মিনারেলে সমৃদ্ধ

| প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শীতকালীন অসংখ্য সবজির মধ্যে সুস্বাদু ও জনপ্রিয়তায় উল্লেখযোগ্য হচ্ছে শিম। দেশের প্রায় সব এলাকাতেই এ শিমের চাষ হয়ে থাকে। শিমের মধ্যে রয়েছে অসংখ্য ভেষজ গুণ। রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এবং মিনারেলও। শিম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ মানব দেহের জন্য অনেক উপকারী একটি সবজি। যারা খাদ্যে সরাসরি প্রোটিন গ্রহণ করেন না অর্থাৎ মাছ, মাংস খাওয়া হয় না, তাদের জন্য শিমের বিচি শরীরে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এই শীতে নিয়মিত শিম খেলে ত্বকও ভালো থাকে। আবার যাদের আমিষ খাওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধতা আছে, তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া ভালো।
ভেষজদের গবেষণায় শিমের মধ্যে খাকা পুষ্টি উপাদান
আহার উপযোগী শিমের প্রতি ১০০ গ্রাম কচি শুঁটিতে পানি ৮৫ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৪৮ কিলোক্যালরি, আমিষ ৩ গ্রাম, শর্করা ৬.৭ গ্রাম, চর্বি ০.৭ গ্রাম, খনিজ লবণ ০.৪ গ্রাম, ভিটামিন বি-১, ভিটামিন বি-২, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম ২১০ মিলিগ্রাম, লৌহ ১.৭ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ১৮৭ মাইক্রো মিলিগ্রাম এবং আঁশজাতীয় উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। পরিপক্ব শুঁটিতে পানি কম থাকে এবং কিছু উপাদান বেশি থাকে। যেমন শ্বেতসার ৬০ গ্রাম, আমিষ ২৫ গ্রাম, স্নেহ ০.৮০ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৬০ মিলিগ্রাম, তাপশক্তি ৩৪০ কিলোক্যালরি।
শিমের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা
* শিমের পাচক আঁশ (ডায়েটরি ফাইবার) খাবার পরিপাকে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ডায়রিয়ার প্রকোপ কমায়।
* রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস সাহায্য করে।
* পাকস্থলী ও প্লিহার শক্তি বাড়ায়, শরীরের ভেতরের গরম ভাব দূর করে।
* শিমের পুষ্টিগুণ শুধু শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় না, রোগকে শরীর থেকে দূরে রাখে।
* লিউকোরিয়াসহ মেয়েদের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে, শিশুদের অপুষ্টি দূরীভ‚ত করে।
* মাছসহ বিভিন্ন খাবারের ফুড পয়জনিং প্রতিরোধী অ্যান্টিডোট হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
* শিমের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ ও শিমের মধ্যে থাকা খনিজ গুণ চুল পড়া রোধে সহায়তা করে এবং চুলের স্বাস্থ্য সুরক্ষায়ও উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকা রাখে।
* শিমে রয়েছে সিলিকন জাতীয় উপাদান, যা হাড়কে মজবুত করে। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফলেট। এ উপাদান গর্ভবতী মায়েদের জন্য বিশেষ উপকারী।
* শীতে ত্বক হয়ে ওঠে শুষ্ক আর প্রাণহীন। নিয়মিত শিম খেলে ত্বক উজ্জ্বল ও ভালো থাকবে এবং ত্বকের রোগবালাইও দূরে থাকবে।
* শিম কোলন ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধেও কার্যকর ভ‚মিকা রাখে।
* শিমের ফুল রক্ত আমাশয়ের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যায়।
* শিমের পরিপক্ব বীজে প্রচুর আমিষ ও স্নেহজাতীয় পদার্থ আছে। শিমগাছ শিকড়ের সাহায্যে বাতাস থেকে নাইট্রোজেন আবদ্ধ করে মাটিকে উর্বর করে তোলে।
সতর্কতা
শিমে সামান্য পরিমাণে ক্ষতিকর সায়ানোজেনিক গøুকোসাইড আছে। শিম প্রতিদিন খাওয়া যাবে তবে পরিমাণে খুব বেশি খাওয়া উচিত নয়। শুকনো শিমে এই উপাদানের পরিমাণ অপেক্ষাকৃত বেশি। তাই শিমের শুকনো বিচি রান্না করার সময় অবশ্যই একবার পানি পরিবর্তন করা উচিত। অতিরিক্ত শিম খেলে অনেক সময় বমি বমি ভাব হলেও তেমন ভয়ের কিছু নেই।
কাজী এম এস এমরান কাদেরী
সাংবাদিক ও কলামিস্ট
বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন