Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে দু’বাংলার ভাষাপ্রেমীদের মিলন মেলা

একই মঞ্চে নানা কর্মসূচী

প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১:০৭ এএম, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭

বেনাপোল অফিস : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোল চেকপোস্ট নোম্যান্সল্যান্ডে দু’বাংলার ভাষাপ্রেমীদের মিলন মেলা বসছে এবার একই মঞ্চে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে মঞ্চের নামকরণসহ ব্যানারে থাকছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর যৌথ ছবি। মিলন মেলায় দু’বাংলার মানুষ দু’দেশের কাঁটাতারের ব্যবধান ভুলে গিয়ে এক ভাষা, এক সংগীত, এক নৃত্য আর একই সংস্কৃতির মহামিলনে আবদ্ধ হয়। দু’বাংলার ভাষা প্রেমীদের মিলন মেলায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোলে দুই বাংলার ভাষা প্রেমীরা নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কালো ব্যাজ ধারণ, বর্ণাঢ্য র‌্যালি, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল। একটি জাতির বিকশিত হওয়ার প্রধান অবলম্বন হলো তার মাতৃভাষা। এ দেশের মানুষ বুকের রক্ত দিয়ে মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। এ এক অনন্য ইতিহাস। বাংলা ভাষার মত কোন জাতির মাতৃভাষার রক্ষায় পৃথিবীতে কোন দ্বিতীয় দৃষ্টান্ত নেই। প্রতি বছরের মত এবারও ২১ ফেব্রæয়ারি ২০১৭ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযথ মর্যাদার সাথে পালনের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একুশে মঞ্চে বেনাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে সকাল সাড়ে ৮টা অস্থায়ী শহীদ বেদিতে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শুরু হবে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা।
ভারতের পক্ষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, তথ্য-প্রযুক্তি দফতর মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, সংসদ বনগাঁ লোকসভা শ্রীমত্যা মমতা ঠাকুর, বিধায়ক বনগাঁ বিধান সভা বিশ্বজিৎ দাস, বিধায়ক বনগাঁ দক্ষিণ বিধানসভা সুরজিত কুমার বিশ্বাস।
বাংলাদেশ’র পক্ষে থাকছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য। যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ শেখ আফিল উদ্দিন, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুজিদ, বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো. শওকত হোসেন, যশোর জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর, যশোর জেলা পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন। এ ছাড়া কবি, সাহিত্যিক, কণ্ঠশিল্পীসহ উপস্থিত থাকবেন দুই বাংলার সুধীজন ও ভাষাপ্রেমী হাজারো মানুষ। দুই বাংলার এ মিলন মেলায় অংশ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন ও বনগাঁ পৌরসভা চেয়ারম্যান শংকর আঁঢ্য।
বন্ধু প্রতীম দুই দেশ ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধও আরো সুদৃঢ় করতে প্রতি বছর বেনাপোল চেকপোস্টে বসে দু’বাংলার ভাষা প্রেমীদের মিলন মেলা। দিবসটি উপলক্ষে বেনাপোল ও পেট্রাপোল চেকপোস্টকে সাজানো হয়েছে নানা রং-এর বর্ণিল সাজে।

ছাগলনাইয়ার সীমান্তহাট নোম্যান্সল্যান্ডে ভাষার টানে ২ বাংলার মেলবন্ধন
মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, ছাগলনাইয়া থেকে
ফেনীর ছাগলনাইয়া ও দক্ষিণ ত্রিপুরার সীমান্তহাটে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। দুই বাংলার প্রায় ৪ হাজার মানুষের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো সীমান্তহাট। গতকাল মঙ্গলবার দিনভর সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান গল্প ও আলোচনায় রক্তঝরা সে দিনগুলোর কথা রোমন্থন করে হাজার হাজার বাঙালি। দুই বাংলার শিল্পীদের আবৃত্তি, নাচ, গান পরিবেশনায় মনে হয়েছে দুই বাংলা যেন একই সূত্রে গাঁথা- নেই কোনো বিভেদ। বাংলাদেশরা মাতৃভাষার জন্য বুকের রক্ত দিয়েছেন। যার কারণে এ ভাষা আজ সারাবিশ্বের মানুষের কাছে সমাদৃত। বাংলাদেশীদের এ আত্মত্যাগে গর্ববোধ করেন ভারতের বাংলাভাষী মানুষরাও। আর সে কারণেই ভাষার টানে গতকাল মঙ্গলবার দুই বাংলার মানুষ এক হয়ে পালন করছে দিবসটি। ত্রিপুরার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসেছেন সাধারণ মানুষ। এপার থেকে গিয়েছে তাদের আত্মীয় স্বজন-দুইয়ের মিলনে এখানে তৈরি হয়েছে হৃদয়ের ¯পন্দন। দুপুর ১২টার দিকে অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগে দুই দেশের কল্যাণ কামনা করে বেলুন উড়ানো ও মঙ্গল প্রদীপ জ্বালানো হয়। অস্থায়ী শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর দুই দেশের সরকারি কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য রাখেন- ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য শিরিন আখতার, ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনীর জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান, ফেনীর পুলিশ সুপার রেজাউল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যৌথভাবে বাংলাদেশের পক্ষে ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী ও ভারতের পক্ষে শ্রী নগর পঞ্চায়েত কমিটির চেয়ারম্যান বাবুল সেন।  এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিজিবি ৪ ফেনীর জয়লস্কর সদর দপ্তরের অধিনায়ক লে. কর্নেল কামরুল ইসলাম, ফেনী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বিকম, পরশুরাম উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন আক্তারসহ প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা। ভারতের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন- বিধান সভার সদস্য জীতেন্দ্র চৌধুরী, এমএল রীতাকর মজুমদার, প্রভাত চৌধুরী, দক্ষিণ ত্রিপুরার পুলিশ সুপার তাপস দেব বার্মা, ডিএম সিকে জমাতিয়া। এডিএম মনোজ কান্তিসেনসহ সেখানকার প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এরপর শুরু হয় দুই বাংলা শিল্পীদের পরিবেশনায় সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে বক্তাগণ বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারত-বাংলাদেশ যৌথভাবে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে বিতাড়িত করেছিল। সে থেকে আমাদের ঐক্য এবং মিলন কেউ রুখতে পারেনি। পারস্পরিক আদান প্রদানের মাধ্যমে আমরা সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই করে দক্ষিণ এশিয়াকে শান্তির জনপদে রূপান্তরিত করব। আমাদের শত্রু আমেরিকা, চীন, পাকিস্তান নয় আমাদের বড় শত্রু দারিদ্র্যতা, অশিক্ষা, মধ্যযোগী কুংস্কার ও ধর্মান্ধতা। আমাদের সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আন্তর্জাতিক

১৩ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ