প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
অস্বীকার করার উপায় নেই, দেশের চলচ্চিত্রের আধুনিকায়ন এবং ব্যাপক পরিসরে আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে জনপ্রিয় চিত্রনায়ক, প্রযোজক ও বিশিষ্ট শিল্পপতি অনন্ত জলিলের ভূমিকা অগ্রগণ্য। তার সিনেমার মাধ্যমেই সত্যিকার অর্থে আমাদের সিনেমায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার দর্শক দেখতে পান। বিভিন্ন দেশে গিয়ে বিশাল পরিসরে শুটিং এবং সেসব দেশের শিল্পী ও কলাকুশলীদের যুক্ত করে দেশের সিনেমাকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন অনন্ত। এক্ষেত্রে তার অবদান অনস্বীকার্য। ২০১০ সালে অনন্ত’র ‘খোঁজ দ্য সার্চ’ নামে যে সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিল, সে সিনেমার মাধ্যমেই আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া দেশের চলচ্চিত্র পেয়েছিল। ভিএফএক্স-এর ব্যবহার থেকে শুরু করে গল্পের আধুনিকতা ও ভিন্ন ধরনের অ্যাকশন সে সময় দর্শক দেখেছেন এবং অবাক হয়েছেন এই ভেবে, ‘আমাদের দেশেও এ ধরনের সিনেমা নির্মাণ সম্ভব!’ অনন্ত এই একটি সিনেমা দিয়েই থেমে থাকেননি। খোঁজ দ্য সার্চকে ছাড়িয়ে যাওয়ার জন্য যেন নিজের সাথে নিজে প্রতিযোগিতা শুরু করেন। তার পরবর্তী সিনেমা নিঃস্বার্থ ভালবাসা, মোস্ট ওয়েলকাম, মোস্ট ওয়েলকাম-২ ইত্যাদি সিনেমায় তিনি নিজেকে ছাপিয়ে গিয়েছেন। দর্শক অবাক বিস্ময়ে দেখেছে, আমাদের দেশের সিনেমায় কিভাবে হলিউড-বলিউডের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের মানে নিয়ে যাওয়া যায়। অনন্তর সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘দিন দ্য ডে’র আলোচনা এখনও শেষ হয়নি। ইরানের সাথে যৌথ প্রযোজনার এ সিনেমাটি কতটা বড় ক্যানভাসে হয়েছে, তা যারা দেখেছেন, তারা বুঝেছেন। এ সিনেমাটি আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়ার ১০টি সিনেমা হলে মুক্তির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এর যাত্রা শুরু হচ্ছে। এর পরের সপ্তাহে আরও ১১টি সিনেমা হলে মুক্তি পাবে। অর্থাৎ আমাদের দেশের মূল ধারার আধুনিক প্রযুক্তির সিনেমার আন্তর্জাতিক যাত্রাকে অনন্ত অনেক দূর নিয়ে গিয়েছেন। অনন্তর সাথে কথা প্রসঙ্গে সিনেমা নিয়ে তার চিন্তাভাবনার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠে। তিনি দেশের সিনেমাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্র্যান্ডিং করতে চান। যেমন বিশ্বব্যাপী ‘হলিউড’ কিংবা ‘বলিউড’-এর সিনেমা একনামে চেনে। প্রশ্ন হচ্ছে, তিনি কেন এই উদ্যোগ নিচ্ছেন? এর কারণ সম্পর্কে আলাপচারিতায় তিনি বলেন, আমি বিজনেস পার্সন। বিজনেসটা কিভাবে করতে হয়, তা জানি। আনন্ত বলেন, আমার গার্মেন্টস শিল্প রয়েছে। এ শিল্পের কাজই হচ্ছে, বিদেশে গার্মেন্ট রফতানি এবং বিভিন্ন দেশের বায়ারদের সাথে ট্রানজেকশন করা। এ কাজটি আমাদের প্রতিনিয়ত করতে হয়। আমি চিন্তা করলাম, গার্মেন্টের মতো আমাদের চলচ্চিত্রও তো বিদেশে রফতানি করা যায়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চালিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়। যদিও কাজটি করা কঠিন, তবে কঠিন ভেবে বসে থাকলে তো হবে না। উদ্যোগ নিতে হবে। আমি আমার জায়গা থেকে চিন্তা করে উদ্যোগ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ ছিল না। কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারে যে ধরনের সিনেমা প্রয়োজন, সেই মানের সিনেমা নির্মাণ করতে না পারলে সে বাজার ধরা সম্ভব নয়। এজন্য প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়। আমি সিনেমাকে আরেকটি রফতানি খাত ধরে উদ্যোগী হই। চিন্তা করলাম বিনিয়োগ করি। একটি-দুটি করে শুরু করি। এই ভাবনা থেকেই বিনিয়োগ করি। আমার সুবিধাটা হচ্ছে, গার্মেন্ট শিল্পের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে যোগাযোগ থাকায় তাদের দেশে আমাদের সিনেমার বাজার এবং তার রিটার্ন আসা নিয়ে আলোচনা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে পারছি। তাদের সাথে প্রতিনিয়ত আলাপ করে কি ধরনের সিনেমা বানালে চলবে এবং ব্যবসা করা যাবে, এ ধারণা নিচ্ছি। এটা আমার জন্য বড় প্লাস পয়েন্ট। সবচেয়ে বড় কথা, আমি ব্যবসায়ী। ব্যবসাটা বুঝি। সিনেমাটাকেও ব্যবসা হিসেবে নিয়েছি। এই ব্যবসায় ভালো করতে হলে সিনেমা নামক পণ্যটির মানও ভাল হতে হবে। ঠিক পোশাকের মতো। আধুনিক ও আনকমন ডিজাইনের পোশাক যেমন ক্রেতাদের কাছে সবসময় আকর্ষণীয়, তেমনি সিনেমাও যদি সেভাবে নির্মাণ ও উপস্থাপন করা যায়, তবে দর্শক তা দেখবেই। আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের দেশের পোশাক যেমন ব্র্যান্ডিংয়ের পরিচিতি পেয়েছে, তেমনি সিনেমাকেও আমি ব্র্যান্ডিংয়ের পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। অনন্ত বলেন, দেশের কথা যদি ধরি, তাহলে দেখবেন, আমার সিনেমার প্রতি সবশ্রেণীর দর্শকের আলাদা আকর্ষণ ও আগ্রহ রয়েছে। একটা সময় মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে সবশ্রেণী যেমন পরিবার নিয়ে সিনেমা দেখতে যেত, আমার সিনেমা কিন্তু সে ধারাটা ফিরিয়ে এনেছে। শুধু মধ্যবিত্ত নয়, উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে যারা কালেভদ্রে সিনেমা দেখেন, তারাও আমার সিনেমা দেখতে হলে আসেন। একটি উদাহরণ দেই। মোস্টওয়েলকাম সিনেমাটি যখন বলাকায় মুক্তি পায়, তখন সেখানে গিয়েছিলাম। বলাকার সামনে বিশাল গাড়ি পার্কিং এলাকায় গাড়ি রাখার স্থান ছিল না। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, তারা সবাই মোস্টওয়েলকাম সিনেমাটি পরিবার নিয়ে দেখতে এসেছেন। এটা ছিল আমার কাছে এক অভাবনীয় বিষয়। কারণ, উচ্চবিত্ত শ্রেণীর দর্শকের আমাদের সিনেমার প্রতি অনাগ্রহ রয়েছে, সেই তারাই যখন আমার সিনেমা দেখতে এসেছেন, তখন বুঝতে বাকি থাকে না, আধুনিক ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সিনেমা নির্মাণ করলে তারাও সিনেমা দেখতে আসেন। এই উচ্চবিত্ত শ্রেণী বিদেশে যাতায়াত করেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে। তারা যখন ব্যবসায়িক কাজে বিদেশ যান, তখন আমাদের সিনেমা নিয়েও কথা বলার সুযোগ তাদের থাকে। তারা কথা বললে আমাদের সিনেমা সম্পর্কেও বিদেশে আগ্রহ সৃষ্টি হয়। এই যে আমি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গিয়ে সিনেমা নির্মাণ করছি, তা আমার ব্যবসায়িক যোগাযোগ এবং জানাশোনার কারণেই কিন্তু সম্ভব হয়েছে। তা নাহলে, কি আমার পক্ষে আন্তর্জাতিক অঙ্গণে গিয়ে সিনেমা নির্মাণ সম্ভব হতো? দিন দ্য ডে সিনেমাটি ইরানের সাথে যৌথ প্রযোজনায় করা, এর শুটিং আফগানিস্তান ও তুরস্কে গিয়ে করা এবং লেবানন, তুরস্ক, ইরানের শিল্পী ও কলাকুশলীদের দিয়ে অভিনয় করানো সবকিছুই কিন্তু হয়েছে আমার সাথে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যোগাযোগ থাকার কারণে। অনন্ত বলেন, আমি আমাদের সিনেমাকে আমার জায়গা থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। দেশের সিনেমাকে ব্র্যান্ডিং করতে চাই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।