Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রথম ইনিংসকেই ব্যবধান মানছেন মুশফিক

| প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শামীম চৌধুরী হায়দারাবাদ (ভারত) থেকে : ভারতের মাটিতে ভারত এমনিতেই সেরা, তার উপর টসে জয় হয়েছে তাদের সহায়ক। ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি উইকেটে প্রথম ইনিংসে ভারতের রান পাহাড়ে চাপা পড়ায় (৬৮৭/৬ডি.) বাংলাদেশকে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে হায়দারাবাদ টেস্ট। স্বাগতিকদের এত বড় স্কোরে বাংলাদেশ বোলারদের বেশ কিছু ত্রæটির পাশে বাজে ফিল্ডিং নিয়েও কথা হচ্ছে বেশ। সুযোগগুলো হাতছাড়া করায় তাই আক্ষেপ করতে হচ্ছে মুশফিকুর রহিমকে ‘আমরা অনেক সুযোগ পেয়েছি। সুযোগগুলো হাতছাড়া করেছি। প্রথম ইনিংসে ওদেরকে যদি সাড়ে ৫শ’ রানেও আটকাতে পারতাম, তাহলে হয়ত দ্বিতীয় ইনিংসে ওরা হয়তো আরেকটু সময় ব্যাট করত। আমাদেরকে ছাড়ত শেষ দিনে। তখন দ্বিতীয় ইনিংসে চার সেশনের বদলে তিন সেশন ব্যাট করতে হতো আমাদের। তখন ব্যপারটি অন্যরকম হতে পারত। প্রথম ইনিংসে ১৫০-১৭০ রান বেশি দিয়ে ফেলেছি আমরা। প্রথম চার ব্যাটসম্যানের কেউ বড় স্কোর করলে আমরা ওদের প্রথম ইনিংসের স্কোরের কাছাকাছি যেতে পারতাম। অন্তত ৫৫০ করতে পারতাম।’

টি ব্রেক পর্যন্ত কম উইকেট হারিয়ে পার করাটাই ছিল বাংলাদেশ দলের গেম প্লান। গেম প্লানটা পুরোপুরি অনুসরণ করতে না পারায় তাই হতাশ মুশফিক ‘ডিফেন্স করে কখনোই কোনো ম্যাচকে বাঁচানো কিংবা জেতা সম্ভব নয়। সাকিব আজ (গতকাল) একটা বলও মারতে যায়নি, তারপরও আউট হয়ে গেছে। আমি প্রথম ইনিংসে একটা বাজে বলও খেলেনি। তারপরও আউট হয়ে গেছি। আমাদের প্রথম দুই ঘণ্টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রথমে সাকিব আউট হওয়ার পর আমি আউট হয়ে গেলাম। রিয়াদ ভাই, সাব্বির লাঞ্চ পর্যন্ত ভালোই খেলেছে। আমাদের পরিকল্পনা ছিল লাঞ্চ পর্যন্ত আমরা যতটা কম উইকেট হারিয়ে যেতে পারি। তারপর চা বিরতি পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া। শেষ সেশনে ভিন্ন পরিকল্পনা। সে ক্ষেত্রে নতুন বলে ভিন্ন কিছু হতো। কিন্তু তার আগে আমরা আউট হয়ে গেছি। অবশ্যই তাদের বোলারদের কৃতিত্ব দিতে হবে। রিয়াদ ভাই যেভাবে আউট হয়েছে, সেটাতে তার দোষ দেয়া যায় না। সাব্বির লাইন মিস করেছি। ভুল ধরার চেয়ে, আমার মনে হয় এ কন্ডিশনে আমার আরো কতক্ষণ খেলার সুযোগ তৈরি করতে পারতাম। সেটা আমরা পারিনি। হেরেছি, খারাপ লাগছে। তারপরও আমার মনে হয় এখান থেকে ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে যাওয়া উচিত।’
অশ্বিনের উপর চড়াও হয়ে খেলতে চেয়ে আউট হয়ে অবশ্য নিজের উপর অভিযোগ নেই। বরং ভারতের ফিল্ডিং ছড়িয়ে দিয়ে সহজে সিঙ্গল নেয়ার উপায় বের করতেই নাকি সেটাই ছিল বাংলাদেশ অধিনায়কের পরিকল্পনা ‘পরিকল্পনা ছিল ইতিবাচক থাকা। পঞ্চম দিনের উইকেট কিছুটা রাফ ছিল। সেটাও কঠিন। অশ্বিন যদি একই লাইনে বল করে যেতে থাকে, কাছ ঘিরে থাকা ফিল্ডারদের নিয়ে ফিল্ডিং সাজিয়ে সে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। আমি চেয়েছি পায়ের ব্যবহার করতে এবং অশ্বিনের লাইন লেংথ এলোমেলো করতে। শটটা খারাপ ছিল না। স্রেফ ঠিকভাবে বাস্তায়ন করতে পারি। চার মারতে পারলে ফিল্ডার পিছিয়ে নিত ওরা। তখন সিঙ্গেল নেয়া সহজ হতো। এটিই ছিল ভাবনা। হতে পারত যে আরো তিন-চার ওভার থাকার পর অশ্বিনকে ওই শট খেলতে পারতাম।’
ভারতের মাটিতে প্রথম টেস্টের জন্য ১৬ বছর দুই মাস ২৯ দিন অপেক্ষা! এমন প্রতীক্ষিত টেস্টে লড়াই করে পঞ্চম দিনে রোমাঞ্চকর পরিস্থিতি তৈরি করে একটা বার্তা দিতে পেরেছে বলে মনে করছেন মুশফিক। ক্যারিয়ার থাকতে থাকতে ভারতের মাটিতে অন্তত একটি টেস্ট হলেও খেলতে চান মুশফিকুর রহিম ‘চার পাঁচ বছর আগে এক টেস্টে ভালো খেললে আর একটি টেস্ট ভালো খেলতে আট-নয় মাস লেগে যেতো। সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছি আমরা যদিও শেষ চরাটা টেস্টের চারটাতেই হেরেছি, তারপরও আমরা কিন্তু প্রতিটি টেস্টই ধারাবাহিক ছিলাম। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে আমরা পাঁচদিন পর্যন্ত একরকম খেলেছি, দ্বিতয়ি টেস্টটিতে জিতেছি। নিউজিল্যান্ডে দু’টি টেস্টেই আমরা তিনদিন পর্যন্ত প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেছি। এই টেস্টে আমরা সাড়ে তিনদিন পর্যন্ত ছিলাম ম্যাচে। বোলিং এবং ফিল্ডিং ইউনিটে আমাদের উন্নতি করা দরকার। তাহলে আমরা দুই এক বছরের মধ্যে আমরা আরো ভালো টেস্ট টিম হতে পারব। আমারও ইচ্ছা অবসরের আগে যেন আমি অন্তত আরো একটা টেস্ট ভারতের মাটিতে খেলেত পারি। আশা করছি, তারা যদি আমন্ত্রণ জানায় আরো ভালো খেলার চেষ্টা করব।’
প্রশ্নটি অবধারিতই ছিল। তবে এই ধরনের স্পর্শকাতর প্রশ্ন সাধারণত সংবাদ সম্মেলনের পরের দিকেই হয়। তবে এবার দ্বিতীয় প্রশ্নটিই। সেটিও বাংলাদেশের কেউ নন, করলেন ভারতীয় সংবাদকর্মীদের একজন। দলের সেরা ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে কি সর্বোচ্চটা পাচ্ছে বাংলাদেশ? কিপিং ছেড়ে ব্যাটিংয়ে ওপরে আসা বা নেতৃত্বের ভার কমানো, সেই ইচ্ছে নেই?



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুশফিক

১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২
৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২
৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ