বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মহসিন রাজু ও টিএম কামাল : শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই উত্তরাঞ্চলের খরস্্েরাতা ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা এখন শুকিয়ে প্রায় একেবারে মৃতপ্রায়। এ দু’টি নদ-নদীর নাব্যতা সংকটে বালাসী-তিস্তামুখঘাট থেকে বিভিন্ন আন্তঃনগর ও আন্তঃইউনিয়ন নৌরুটে নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। মাইলের পর মাইলজুড়ে জেগে উঠেছে অসংখ্য বালুচর। এলাকার শত শত জেলে ও মাঝি এখন বেকার হয়ে পড়েছেন। সমস্যায় পড়েছেন উত্তরঞ্চালসহ দেশের অন্যান্য এলাকার ব্যবসায়ীরাও। মালপত্র পরিবহনে তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বর্তমানে সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে। আগে কখনোই এ মৌসুমে এত আগে এভাবে ব্রহ্মপুত্রের পানি শুকিয়ে যায়নি। ফলে নৌচলাচল রুটগুলোতে জমেছে বড় ধরনের বালুচর। প্রায় একই অবস্থা যমুনা নদীতেও। অগ্রহায়ণ-মাঘ মাসেই ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে জেগেছে ছোট-বড় অসংখ্য চর। এদিকে বালাসী ঘাটের প্রবেশ পথে ব্রহ্মপুত্র নদের কালাসোনা টানিং পয়েন্ট নৌচ্যানেল ভরাট হয়ে পড়েছে। বালাসী ফেরিঘাট চালু থাকা অবস্থায় প্রতি বছর ড্রেজিং করে ফেরি ও নৌরুটের কাজ করা হতো। কিন্তু কয়েক বছর ধরে ড্রেজিংয়ের কাজ বন্ধ থাকায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে নদীর পানি হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গাইবান্ধার ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার প্রায় ২০টি নৌঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙা-গড়ায় নৌঘাটগুলো এখন অতীত ইতিহাস। এক সময় ফুলছড়ি নৌবন্দর পাট ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছিল। পক্ষান্তরে পার্শ্ববর্তী বালাসীঘাট নৌবন্দর ছিল বিশাল তেলের ডিপো। এই দুই নৌবন্দরে নিয়মিত জাহাজ ভিড়ত। ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বিশাল এলাকাসহ নদীতে হারিয়ে গেছে বন্দরগুলোর মূল কাঠামো। এ অবস্থায় পানি হ্রাস পেয়ে নদীর বুকে চর জেগে নৌযান ও জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় বন্দরের কাজকর্ম স্থবির হয়ে পড়েছে। অপরদিকে দ্রæত পানি হ্রাস পাওয়ায় ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্ব চ্যানেল জিগাবাড়ী থেকে জামিরা পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার এলাকায় ছোট-বড় দুই শতাধিক চর ও ডুবোচর জেগে উঠেছে। এতে ফুলফড়ি উপজেলার অভ্যন্তরীণ নৌরুটগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে ফুলছড়ি-বালাসী, তিস্তামুখঘাট-বাহাদুরাবাদঘাট, গজারিয়া-গলনা, সিংড়িয়া-ঝানঝাইর, শুনভরি-কালাসোনা এবং আন্তঃজেলা নৌরুট ফুলছড়িঘাট-গুঠাইল, সৈয়দপুর-রাজীবপুর, তিস্তামুখঘাট-আমতলী এবং তিস্তামুখঘাট-কাজিপুর, সরিষাবাড়ী-কাজিপুর, মেঘাই-নাটুয়ারপাড়া, মেঘাই-রঘুনাথপুর, কাজিপুর-মনসুরনগর, মেঘাই-রূপসা, কাজিপুর-সিরাজগঞ্জ নৌরুটে কোনো নৌকা চলাচল করছে না। ফলে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের অন্যান্য এলাকার ব্যবসায়ীদের মালপত্র পরিবহনে দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। কাজিপুরের সার ব্যবসায়ী আলহাজ্ব চান মিয়া জানান, তিনি সরিষাবাড়ী থেকে নৌকায় কাজিপুর সদর পর্যন্ত সার নিয়ে আসতেন মেঘাই বাজারে। এ জন্য নৌপথে তার বস্তাপ্রতি ভাড়া লাগত ১০ টাকা করে। এখন বালুচর পেরিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে বস্তপ্রতি বহন খরচ দিতে হয় ৩০ টাকা।
বালাসীঘাট রেলওয়ে মেরিন বিভাগের কর্মকর্তা জানান, রেলওয়ের পরিবহন সেক্টরে আগের মতো আর মালপত্র পার হচ্ছে না। সে কারণে আয় কমে গেছে। ঝুকি নিয়ে কিছু বার্জ চলাচল করছে। গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী বলেন, ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের কারণে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানি পলি নিয়ে আর ফিরে যেতে না পারায় এ এলাকার নদীগুলো পলিযুক্ত হয়ে পড়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।