গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
সায়ীদ আবদুল মালিক : ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ময়লা-আবর্জনার সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য হাতে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। তারই অংশ হিসেবে দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রায় ছয় কোটি টাকা খরচ করে গত বছরের মাঝামাঝি সময় বসানো হয়েছে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার মিনি ডাস্টবিন। সিটি করপোরেশনের সঠিক তদারকির অভাবে ও জনসাধারণের অসচেতনতার কারণে এ প্রকল্পটি এখন অনেকটাই ভেস্তে যেতে বসেছে। দুই সিটির বিভিন্ন রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে এ মিনি ডাস্টবিনগুলো বসানোর আগে এ নিয়ে তাদের যথেষ্ট পর্যালোচনা ছিল না বলে নগর বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। তাদের মতে, নগরিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য এটি একটি ইতিবাচক উদ্যোগ হলেও এ নিয়ে দুই সিটি করপোরেশনেরই অবহেলা রয়েছে। এমন একটি পদক্ষেপ নেয়ার আগে পত্রিকা ও টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে নগরবাসিকে এর ব্যবহার-সংক্রান্ত বিষয়ে সচেতন করতে পারত। তবেই এর সঠিক ব্যবহার হতো। বর্তমানের এ প্রকল্পটি প্রায় ধ্বংসাবস্থায় উপনীত হয়েছে। এ অবস্থা থেকে ফেরাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ইতোমধ্যে মিনি ডাস্টবিনগুলোর সংস্কার কাজ হাতে নিয়েছে। তবে, এ বিষয়ে উত্তর সিটি করপোরেশন এখনো কোনো পরিকল্পনা নেয়নি বলে জানা গেছে।
মিনি ডাস্টবিন যে ফ্রেমের মধ্যে ঝুলানো হয়েছিল, এখন শুধুু সেটিই অবশিষ্ট রয়েছে। আর যে পাত্রটি ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য দেয়া হয়েছিল, সেটির কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। রাজধানীর গুলিস্তান, মতিঝিল, বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকা, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকাসহ উত্তর সিটির ফার্মগেট, বিজয় সরণী, মহাখালী, সৈনিক ক্লাব, বনানী, তেজগাঁও, শাহবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে একই চিত্র দেখা যায়। এ বিষয়টি নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া।
ফার্মগেট এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মোহাম্মদ সরোয়ার আলম বলেন, সিটি করপোরেশন যে কাজটি করেছিল, তার জন্য অবশ্যই তারা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। তবে এর ধারাবাহিকতার প্রয়োজন ছিল। ডাস্টবিন সংস্কারে উদ্যোগ নিচ্ছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
পুরান ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাজিন আহসান বলেন, আমরা কেনো জানি ভালো কাজগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারছি না। রাস্তার মোড়ে মোড়ে ডাস্টবিন বসানো সিটি করপোরেশনের একটি ভালো উদ্যোগ ছিল। এখন এগুলো তদারকি করা দরকার। না হলে এগুলো করতে যে টাকা ব্যয় হয়েছে সেগুলো অপচয় ছাড়া কিছু না। আশা করবÑ যারা দায়িত্বে আছেন, তারা বিষয়টি লক্ষ্য করবেন। উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, দুই সিটিতে এ মিনি ডাস্টবিনগুলো বসাতে প্রায় ছয় কোটি টাকা খরচ হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বলেন, ডিএসসিসির বিভিন্ন স্থানে পাঁচ হাজার ৭০০ মিনি ডাস্টবিন বসানো হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ডাস্টবিন নষ্ট হয়েছে, কিছু ডাস্টবিন চুরি হয়েছে কিছু ডাস্টবিন নানা কারণে ব্যবহার অনুপযোগী হয়েছে। আমাদের কাছে এর সঠিক তথ্য আছে। এগুলো মেরামত বা এ নিয়ে পরবর্তী পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের লোকেরা সেগুলো তদারকি করছে। যেগুলো একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে সেগুলো নতুন করে লাগানো হবে। আর যেগুলো মেরামতের যোগ্য, সেগুলোকে মেরামত করা হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা এক হাজার মিনি ডাস্টবিন বসিয়েছি। সেখান থেকে ১৭১টি ডাস্টবিন একেবারে ভেঙে গেছে, কোনোটির হাতল ভেঙে গেছে। এরকম তথ্য আমাদের কাছে আছে। এগুলো মেরামত করা বা পরবর্তী পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আপাতত আমাদের কোনো পরিকল্পনা নেই। পরবর্তীতে নতুন করে করা হলে তখন দেখা যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।