Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নাটকে ভরা ম্যাচ, ফাইনালে বার্সা

| প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : টানা চতুর্থবারের মতো কোপা দেল রের ফাইনালে পা রেখেছে বার্সেলোনা। পরশু ক্যাম্প ন্যুতে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে প্রথমার্ধে লুইস সুয়ারেজের গোলে ১-১এ ড্র করে বার্সা। ভিসেন্তে ক্যালডেরনে ২-১ গোলে জেতায় দুই লেগ মিলে ৩-২ ব্যবধানে ফাইনাল নিশ্চিত হয় কাতালানদের। তবে ফাইনালে দলের সেরা স্ট্রাইকার সুয়ারেজকে তারা পাচ্ছে না। শেষ সময়ে মাত্র তিন মিনিটের ব্যবধানে দুই হলুদে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় উরুগুয়ান তারকাকে।
সুয়ারেজের সাথে সার্জি রবার্তোর লাল কার্ডে নয়জনের দল নিয়ে খেলা শেষ করে বার্সা। বাদ ছিল না অ্যাটলেটিকোও। দশ জনের দল নিয়ে খেলতে হয় তাদেরও। মেসিকে হাত দিয়ে ফেলে দেয়া ফিলিপ লুইস বেঁচে যান লাল কার্ড থেকে, নইলে নয় নয় আঠোরো জনের ম্যাচই দেখা যেত এদিন। সাথে আটটি হলুদ কার্ড, দুই দলের একটি করে গোল বাতিল, লিওনেল মেসির দুর্দান্ত ফ্রি-কিক বারে লেগে প্রতিহত হওয়া, ডিয়েগো সিমিওনের দলের পেনাল্টি মিস, রেফারির উপর খেলোয়াড়দের ক্ষোভÑ এক কথায় একটি ফুটবল ম্যাচ থেকে যা পাওয়ার সবকিছুই ছিল এই ম্যাচে।
আসরে তিন হলুদ কার্ড পাওয়ায় নিষিদ্ধ ছিলেন নেইমার, চোটের কারণে ছিলেন না রাফিনহোও। হাভিয়ের মাচেরানো, সার্জিও বুসকেট, আন্দ্রেস ইনিংয়েস্তারাও শুরুর একাদশে না থাকায় প্রথম থেকে অ্যাটলেটিকোর আক্রমণ ঠেকাতেই বেশি ব্যস্ত থাকতে হয় স্বাগতিকদের। দুই দু’বার দলকে নিশ্চিত পিছিয়ে পড়ার হাত থেকে বাঁচান গোলরক্ষক ইয়াসপার সিলেসেন। তবে এগিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে কাতালানরা। পাল্টা আক্রমণে ডি বক্সের বাইরে থেকে নেয়া লিওনেল মেসির জোরালো শট গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে ঠেকালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ফিরতি বল জালে পাঠিয়ে দেন ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা সুয়ারেজ। আসরে এটি তার চতুর্থ গোল।
ম্যাচে আসল নাটকীয়তার শুরু দ্বিতীয়ার্ধে। ৫৭তম মিনিটে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রবার্তোর দ্বিতীয় হলুদ কার্ডে ১০ জনের দলে পরিণত হওয়া বার্সা চাপে পড়ে যায়। সেই সুযোগে তিন মিনিট পর জালে বলও পাঠিয়েছিলেন অঁতোয়ান গ্রিজম্যান। কিন্তু অফসাইডের অভিযোগে রেফারি তা বাতিল করে দেন। যদিও রিপ্লেতে দেখা গেছে গ্রিজম্যান অফসাইড ছিলেন না। ৬৯তম মিনিটে বেলজিয়ান মিডফিল্ডার ক্যারাসকোর দ্বিতীয় হলুদ কার্ডে অ্যাটলেটিকোও ১০ জনে পরিনত হয়। ৭৯তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে দলকে সমতায় ফেরানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন কেভিন গামেইরো। ৪ মিনিট বাদে অবশ্য গ্রিজম্যানের বাড়ানো বলে ভুলের প্রায়শ্চিত্য করেন বেলজিয়ান মিডফিল্ডার।
এনরিকের দলকে সবচেয়ে বেশি বেগ পেতে হয়েছে শেষ ৫ মিনিট। ৯০তম মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন সুয়ারেজ। এরপরও মুহূর্মুহূ আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে দর্শকদের বুকে কাঁপুনি ধরায় দুই দলই। তবে বাকি সময়টা এনরিকের শিষ্যদের পার করতে নাভিশ্বাষ ছুটে যায়। দুশ্চিন্তাও ভর করেছিল এসময়, গোল খেলেই যে অতিরিক্ত ৩০ মিনিট তাদের লড়তে হত ৯ জনের দল নিয়ে।
শেষ পর্যন্ত সেটি হয়নি। বার্সাও টানা তৃতীয় ফাইনাল জয়ের অপেক্ষায়। আরো বড় সুখবর হল মেসি-আলবাদের এদিন হলুদ কার্ড দেখতে হয়নি, তাহলেই ফাইনালে নিষিদ্ধ হতেন তারা। সুয়ারেজের লাল কার্ডটা অবশ্য বেআইনি মনে হয়েছে। কোকেকে কনুই মারার অপরাধে দ্বিতীয় হলুদে লাল কার্ড পান তিনি। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা গেছে সুয়ারেজের কনুই কোকের শরীর স্পর্শ করেনি। বার্সার পক্ষ থেকেও লাল কার্ডের বিপক্ষে আপিল করার ঘোষনা এসেছে। কোচ এনরিকে বলেন, ‘আমি আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কিন্তু যতি আপনি অতিতে তাকান তবে দেখবেন ভালো কোন আপিলও আমাদের পক্ষে আসেনি।’
ম্যাচ শেষে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুয়ারেজও, ‘আমি সেসময় হেসেছিলাম, এটা এমন এক মুহূর্ত যা দেখতে আপনি প্রস্তুত নয়। রেফারি যা চেয়েছে তাই হয়েছে। এ কারণে আমি ক্ষুব্ধ। কার্ড তো দুরের কথা এটা ফাউলও হয় না। রেফারিও এর কোন ব্যখ্যা আমাকে দেননি, যা সব সময় দেওয়া হয়।’
ম্যাচের ফলে খুশি না হতে পারলেও ফাইনালে উঠতে পেরে খুশি এনরিকে। আগামী ২৭ মের ফাইনালে তার দলের প্রতিপক্ষ সেল্টা ভিগো  অথবা আলাভেজ। যখন এই সংবাদ পড়ছেন তখন সেটাও নির্ধারিত হয়ে গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বার্সা

২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ