নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী হাদ্রাবাদ (ভারত) থেকে : ২০০৪ সালে রাজিব গান্ধি স্টেডিয়াম প্রতিষ্ঠার পর পেয়েছে মাত্র ৩টি টেস্ট, ৫ ওয়ানডে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজন কালে ভদ্রে করার সুযোগ পায় বলে বাংলাদেশ-ভারত টেস্ট আয়োজন নিয়ে খুব একটা তৎপরতা চোখে পড়েনি হায়দারাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের। তবে বাংলাদেশের ৯৮তম এই টেস্টটিই পাচ্ছে ঐতিহাসিক টেস্টের উত্তাপ। টেস্ট অভিষেকের পর ১৬ বছর ২ মাস ২৯ দিনের প্রতীক্ষার অবসান হচ্ছে আজ। ১৯ বছর আগে এই হায়দারাবাদে সূচিত হয়েছিল বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে জয়, আকরাম, রফিকদের উত্তরসূরীদের হাত ধরে সেই হায়দারাবাদেই দ্বি-পাক্ষিক সফরে ভারতের মাটিতে প্রথম টেস্ট খেলার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশকে নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে করতে শেষ পর্যন্ত বিসিসিআই’র কৃপায় পাওয়া এই একমাত্র টেস্টটি দিচ্ছে উত্তাপ।
গত বছর ভারতকে ২-১এ ওয়ানডে সিরিজ হারিয়ে দিয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে আলোচনার ঝড়
তুলছে বাংলাদেশ দল। সর্বশেষ টি-২০ বিশ্বকাপে বেঙ্গালুরুতে ৩ বলে ২ রানের সহজ লক্ষ্যটা পূরণ করতে না পারার কস্টটাও পুষে রেখেছে বাংলাদেশ দল। তার উপর বাংলাদেশ দলকে অবজ্ঞা, অবহেলা করে দ্বি-পাক্ষিক সফর সূচীতে ভারতে আতিথ্য থেকে বিরত রাখার জবাবটাও পারফরমেন্স দিয়ে দিতে চায় মুশফিকুররা। হোক না প্রতিপক্ষ টেস্টের নাম্বার ওয়ান, যেখানে বাংলাদেশ দলের অবস্থান টেস্টের তলানীতে (৯ নম্বরে)।
র্যাংকিংয়ের এই যোজন যোজন দূরত্ব, সর্বশেষ ১৮ টেস্টে অপরাজেয় ভারত পর্যন্ত বাংলাদেশের বিপক্ষে হায়দারাবাদ টেস্টকে সামনে রেখে আত্মতুস্টিতে ভুগছে না। সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডকে ৪-০তে টেস্ট সিরিজ হারিয়েও ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলী বাংলাদেশকে দেখছেন শ্রদ্ধার চোখেÑ ‘যুদ্ধ ক্ষেত্রটা সমানই দেখছি। বাংলাদেশের ব্যাটিংকে খাটো করে দেখার কিছুই নেই। ওয়ানডে ক্রিকেটে তারা (বাংলাদেশ) বিশ্বের সব দলকেই হারিয়েছে। কারণ তারা জানে, এই ফরম্যাটে কীভাবে খেলতে হয়। তারা এটা নিয়মিত খেলছে। টেস্টে তারা নিয়মিত খেলছে না। তবে নিউজিল্যান্ড সফরে তারা দারুণ করেছে। এক দিনে তুলেছে সাড়ে তিনশ’ রান। ওভারপ্রতি সাড়ে ৪ রান করে তোলা অসাধারণ। তাদের দলে আছে কোয়ালিটি ক্রিকেটারের সমাবেশ। আমি নিশ্চিত যে যদি তারা এই ফরম্যাটে বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পায় তাহলে বাংলাদেশ পরিপূর্ণ টেস্ট দল হয়ে উঠবে। তাদের সেই সামর্থ আছে। তাই আমরা চাই দল হিসেবে নিজেদেরকে মেলে ধরতে।’
ভারতের মাটিতে টেস্টে প্রথম আতিথ্যের সুযোগ পেয়ে অবজ্ঞাকারীদের একটা জবাব দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমÑ ‘বেশি টেস্ট আমি ১১ বছর ধরে ক্রিকেট খেলছি। দুই আড়াই বছর পর বিদেশের মাটিতে আমরা টেস্ট খেলেছি। এটা কখনোই একটা টেস্ট দলের জন্য কাম্য হতে পারে না। যে টিমকে সবাই বলছে টেস্ট খেলতে পারে না কিংবা জানে না; তাদেরকে আপনারা খেলার সুযোগও দেবেন না। তাহলে কিভাবে বুঝতে পারবেন টিম উন্নতি করছে।’
২০০০ সালের ২৬ জুন বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদারা স্বীকৃতিতে রেখেছে ভারত বিশেষ অবদান। বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদার সমর্থক ভারত সে বছরের ১০ নভেম্বর বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট ইতিহাসেরও অংশ। অথচ, সেই দলটিই কি না বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে টেস্ট খেলতে প্রথম আতিথ্য দিতে করেছে সময়ক্ষেপণ, কাটিয়ে দিয়েছে ১৬ বছর ২ মাস ২৯ দিন! বিষয়টি জেনে নিজেই যেনো লজ্জিত ভারত অধিনায়ক কোহলীÑ ‘মাত্র ক’দিন আগেই আমি জানতে পারলাম বাংলাদেশ দল ভারতে খুব বেশি সফর করেনি। আমরা বাংলাদেশে বেশ ক’বার গিয়েছি, কিন্তু এবারের আগে ওরা দ্বিপাক্ষিক টেস্ট সিরিজ খেলতে আসেনি। সেদিক থেকে অবশ্যই এটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। দুই দলের জন্যই শুধু নয়, দুই দেশের জন্যও এটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এটা একটা বিশেষ উপলক্ষ্য, এটা এমন একটা সময়ে হতে যাচ্ছে যখন আমি অধিনায়ক। তাই আমার জন্যও দিনটি বিশেষ কিছু।’ ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলার প্রতীক্ষাটা বড় হলেও সঠিক সময়ে ভারতে টেস্ট খেলতে এসেছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ দলের হেড কোচ হাতুরুসিংহেÑ ‘বাংলাদেশ এখন বড় দলগুলোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ভাল করা এখানে একটা ফ্যাক্টর হতে পারে। সঠিক সময়ে আমরা এখানে খেলতে এসেছি। হোমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভাল খেলেছি, নিউজিল্যান্ড সফরেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে।’
প্রতীক্ষার প্রহর এতো লম্বা বলেই অন্য এক শিহরণ অনুভব করছেন বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমÑ ‘টেস্ট খেলুড়ে দেশ হিসেবে এমন ঘটনা আশ্চর্যজনকই বটে। দেশে এবং দেশের বাইরে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট খেলার স্বপ্ন সবারই থাকে। দেশে দেশের বাইরে ভারতের বিপক্ষে খেলা আমাদের জন্য একটা বড় উপলক্ষ্য। অনেক দিন পর এমনটা হচ্ছে বলে আমাদের দলের সবাই এখন শিহরণ অনুভব করছে। বিশ্বের নাম্বার ওয়ান দলের বিপক্ষে খেলার সুযোগ পেয়ে আমরা আমাদের স্কিল প্রদর্শন করতে চাই।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।