২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
টনসিল এক ধরনের লিমফয়েড টিস্যু।
কাজ : এরা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার একটি অংশবিশেষ।
টনসিলাইটিস:
মানুষের মুখের বিতর ৪টি গ্রুপে টনসিল অবস্থান করে, লিঙ্গুয়াল, প্যালাটাইন, টিউবাল ও এডেনয়েড। ৪টি গ্রুপের কোন একটির প্রদাহ বা ইনফেকশন হলে এটি টনসিলাইটিস বা টনসিলের প্রদাহ। টনসিলাইটিস একটি অতি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। প্যালাটাইন টনসিল বেশি আক্রান্ত হয়, ফলে, গলা ব্যথা হয়।
কারণ : টনসিল প্রদাহের অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভাইরাসই দায়ী। তবে ব্যাকটেরিয়াল প্রদাহের জন্যও হতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে হেমোলাইটিক স্ট্রেপটোকক্কাস নামক ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে টনসিল প্রদাহ হয়ে থাকে।
অন্যদিকে আইসক্রিম, ফ্রিজের ঠা-া খাবার, শীতল পানিও ক্ষতির কারণ হতে পারে।
অধিকন্তু দীর্ঘদিন ধরে ঠা-া, কাশি, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, দূষণ, অপুষ্টিজনিত সমস্যা হতেও প্রদাহ হয়ে থাকে।
প্রকার: টনসিলাইটিস সাধারণত ২ প্রকারের হয়। একটি একিউট বা তরুণ প্রদাহ। অন্যটি ক্রণিক বা দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহ।
লক্ষণ: দীর্ঘদিন টনসিল প্রদাহের সময় নি¤েœাক্ত লক্ষণ দেখা দেয়।
ক. শরীর, গলা, মাথা-কান ব্যথা হয়। গলা ব্যথায় খাবার গিলতে সমস্যা হয় এবং মুখ হা করতে কষ্ট হয়।
খ. জ্বরসহ মাথাব্যথা এবং তাপমাত্রা ১০৩Ñ১০৪ক্ক ফারেনহাইট হয়।
গ. মুখ দিয়ে লালা পড়ে ও দুর্গন্ধ বের হয়।
ঘ. কণ্ঠস্বর ভারী এবং গলা ভেঙে যায়।
উপরোক্ত সমস্যা হলে এটাকে আমরা তীব্র ইনফেকশন বলি। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা করালে প্রদাহ হতে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
সমস্যা/জটিলতা:
ক. টনসিলের চারপাশে প্রদাহ ছড়িয়ে পড়তে পারে
খ. টনসিলের উপর ফোঁড়া এবং ক্ষত হতে পারে।
গ. কানে ইনফেকশন হতে পারে। এ থেকে বধিরতাও হয়ে যেতে পারে।
ঘ. টনসিলাইটিসের ফলে বাতজ্বর বা রিউমেটিক ফিভারও হতে পারে।
ঙ. প্রদাহের ফলে শ্বাসনালীতে সংক্রমণের কারণে শ্বাসনালী ফুলে যেতে পারে, ফলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
চ. জীবাণু রক্তে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমনকি রক্তের মাধ্যমে জীবাণু কিডনীতে (বৃক্কে) ছড়িয়ে প্রদাহ হতে পারে।
কোন ক্ষেত্রে শল্যচিকিৎসার প্রয়োজন: সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে ক্রণিক টনসিলাইটিসের রূপ নেয়। এক্ষেত্রে শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে যায় এবং নিঃশ্বাস গ্রহণে অত্যন্ত কষ্ট হয়। যদি বছরে ৪-৫ বার পরপর ২ বছর প্রদাহ হয়, এক্ষেত্রে শল্যচিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।
তবে অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী হলেই যে শল্যচিকিৎসা করাতে হবে এমনটা নয়। যদি প্রদাহ শরীরে ছড়িয়ে পরে, জ্বর বা ব্যথা থাকা অবস্থায় যদি কারো থ্যালসেমিয়া থাকে উচ্চ রক্তচাপের রোগী, ডায়াবেটিসের রোগীকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করে শল্যচিকিৎসা করানো যেতে পারে।
টনসিল নিয়ে কিছু ভুল ধারণা:
টনসিল ফেলে দিলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। যা ভুল ধারণা।
কারণ টনসিল হলো মানবদেহের প্রথম পাহারাদার। এছাড়া গলায় ৩০০ বা এর বেশি লালাগ্রন্থি বা স্যালিভারী গ্ল্যান্ড আছে, যেগুলো রোগ প্রতিরোধ করে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে গলার বাইরের দুই পাশে শিম বা বরইয়ের বিচির মতো দুটি দানা ফুলে উঠতে দেখা যায়, এগুলোকে ভুলবশত অনেক চিকিৎসক টনসিল মনে করেন, তবে এটি টনসিল নয়।
রোগী মুখ হা করলে মুখের ভিতরের দিকে দুটি বড় দানার মতো ফোলা দেখা যায়, সেটিই হলো টনসিলাইটিস আক্রান্ত টনসিল।
চিকিৎসা/ব্যবস্থাপনা:
টনসিলাইটিসে আক্রান্ত হলে নি¤েœাক্ত ব্যবস্থাপনা/ চিকিৎসা করালে, রোগ হতে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। প্রদাহ হলে পূর্ণ বিশ্রাম অতি প্রয়োজন। যতক্ষণ না রোগী সুস্থ হয়। এছাড়াও
প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে।
বার বার গরম পানি বা স্যালাইন দিয়ে কুলি করতে হবে।
গলায় ঠা-া লাগানো যাবে না।
লেবু বা আদা চাও খাওয়া খেতে পারে।
লক্ষণভিত্তিক হোমিও চিকিৎসা করালে রোগী সুস্থ হতে পারে।
তবে বার বার টনসিলাইটিস বা এর অন্য কোন জটিলতা সৃষ্টি হলে অস্ত্রোপচার করাই ভালো।
যেহেতু হোমিওপ্যাথিক লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি। তাই সঠিক লক্ষণগুলো সংগ্রহ করে সঠিক পদ্ধতি অনুসারে চিকিৎসা করালে টনসিল প্রদাহ হতে রেহাই পাওয়া যায়।
লক্ষণানুসারে নি¤েœাক্ত ঔষধগুলো প্রয়োগ করা যেতে পারে ব্যারাইটা কার্ব, ব্যারাইটা মিউর, বেলেডোনা, কোনিয়াম, লাইকোপোডিয়াম, ক্যালকেরিয়া আয়োড, হিপার সালক, গুয়েকাম, একোনাইট ন্যাপ, ফাইটোলক্কা, ল্যাক ক্যানাইনাম, মাকুরিয়াম সল, ফেরামফস, ক্যালকেরিয়া ফ্লোর, ক্যালি মিউর ইত্যাদি।
সবশেষে রোগীর গলা ব্যথা হলে কাপড় জড়িয়ে রাখতে হবে। মুখ গহ্বর ঠিক রাখতে লবণযুক্ত কুসুম গরম পানি দিয়ে কুলি করতে হবে। পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে। খাদ্য হিসেবে তরল খাবার (ঠা-াবাদে), ফলের রস রোগীর জন্য ব্যবস্থা করতে হবে।
ষ ডাঃ মোঃ হুমায়ুন কবীর
৮২/৮, উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪
রেনেসাঁ হোমিও মেডিকেয়ার
৮৯, সিটিকর্পোরেশন মার্কেট, নিমতলী, ঢাকা-১০০০
মোবাঃ ০১৭১৭৬১৪৫০
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।