পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফারুক হোসাইন : প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির প্রায় ৭০ হাজার পদ খালি থাকলেও নিয়োগ পাচ্ছে না ৩৫তম বিসিএস উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার পদপ্রত্যাশীরা। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) আন্তরিকতা থাকলেও মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর অনীহা এবং অলসতার কারণে শূন্যপদগুলোতে মেধাবীরা নিয়োগ পাচ্ছে না বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ও ভুক্তভোগীদের। আবার নিয়োগ দিলেও সেখানেই থাকছে বড় ধরনের জটিলতা। শূন্যপদ থাকার পরও চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মেধাবীরা। অন্যদিকে প্রার্থী না পাওয়ার পরও (কোটার পদগুলোতে) বছরের পর বছর ধরে ফাঁকা থাকছে অসংখ্য পদ। তাই অবিলম্বে নিয়োগে দীর্ঘসূত্রতা নিরসন করে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ বিধিমালা সংশোধনের মাধ্যমে সরকারি নবম ও দশম গ্রেডের নন-ক্যাডার পদে শতভাগ নিয়োগ, মন্ত্রণালয়সমূহ থেকে শূন্যপদের অধিযাচনপত্র দ্রুত প্রেরণ এবং কোটার প্রার্থী না পাওয়া গেলে মেধাবীদের মধ্য থেকে নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন ৩৫তম বিসিএস উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার পদপ্রত্যাশীরা।
ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পদসহ সরকারি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে নিয়োগ দিয়ে থাকে পাবলিক সার্ভিস কমিশন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের চাহিদার ভিত্তিতে সেসব পদে মেধাবীদের নিয়োগ দিয়ে থাকে সংস্থাটি। সর্বশেষ ৩৫তম বিসিএস থেকে ক্যাডার পদে দুই হাজার ২৫৮ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করেছে পিএসসি। এর আগে ৩৪তম বিসিএস থেকে ক্যাডার পদে দুই হাজার ১৭৭ জন এবং নন-ক্যাডার পদে দুই হাজার ২৫৯ জনসহ মোট চার হাজার ৪৩৬ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে। ৩৪তম বিবিএসের নন-ক্যাডারদের নিয়োগ দিলেও এখনো ৩৫তম বিসিএসের নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ দিতে পারেনি কমিশন। কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অধিযাচনপত্র না পাওয়ায় এখনো নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ দেয়া হয়নি। মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো থেকে শূন্যপদের অধিযাচনপত্র পেলে ৩৫তম বিসিএস থেকে তিন হাজারেরও বেশি প্রার্থীকে নন-ক্যাডার পদে সুপারিশ করা যাবে।
পিএসসি সূত্রে জানা যায়, নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ বিধিমালা-২০১০ (সংশোধিত-২০১৪) সংশোধনের পর ২০১৪ সাল থেকে পদ স্বল্পতার কারণে ক্যাডার পদে এবং নন-ক্যাডার প্রথম শ্রেণির পদে সুপারিশপ্রাপ্ত না হওয়া প্রার্থীদের নন-ক্যাডার (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির) পদে নিয়োগ দিয়ে থাকে। কিন্তু পিএসসির আগ্রহ থাকলেও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর অনীহা এবং অলসতার কারণে শূন্যপদগুলোতে মেধাবীদের নিয়োগ দিতে পারছে না কমিশন। পিএসসির পক্ষ থেকে বলা হয়, শূন্যপদের তালিকা চেয়ে জনপ্রশাসনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে চিঠি দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো চাহিদা জানালেই প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদগুলোতে আমরা নিয়োগ দিতে পারব।
এদিকে দীর্ঘ তিন বছর ধরে চাকরি প্রত্যাশায় থাকা চাকরিপ্রার্থীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। অবিলম্বে নন-ক্যাডারের শূন্যপদে নিয়োগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী, সচিব ও জেলা প্রশাসকদের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে তারা। এসব স্মারকলিপিতে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ বিধিমালা-২০১৪ সংশোধন করে সরকারি নবম ও দশম গ্রেডের নন-ক্যাডার পদসমূহে শতভাগেই নিয়োগ প্রদান করা। মন্ত্রণালয় ও বিভাগসমূহ থেকে পিএসসিতে শূন্যপদের অধিযাচনপত্র দ্রুত প্রেরণ করা এবং সরকারি নন-ক্যাডার পদে কোটা শিথিল করার (কোটার প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা থেকে নিয়োগ দেয়া) দাবি জানিয়েছে।
বঞ্চিত হচ্ছে মেধাবীরা : সরকারি চাকরিতে মেধাবীদের জন্য ৪৫ শতাংশ এবং মুক্তিযোদ্ধা, নারী, জেলা এবং ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠীর প্রার্থীদের জন্য ৫৫ শতাংশ পদ সংরক্ষিত রাখা হয়। প্রতিটি নিয়োগের ক্ষেত্রে এর ওপর ভিত্তি করেই নিয়োগ দিয়ে থাকে পিএসসি। পিএসসি ও সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের তুলনায় পদসংখ্যা থাকে খুবই সীমিত। অন্যদিকে সংরক্ষিত (কোটা) পদের বিপরীতে প্রার্থীসংখ্যা থাকে অনেক কম। আর বাধ্যবাধকতা থাকায় পিএসসিও এই পদগুলোর বিপরীতে মেধাবীদের নিয়োগ দিতে পারে না। ফলে বছরের পর বছর ধরে সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অসংখ্য পদ খালি থাকছে আর বঞ্চিত হচ্ছেন চাকরি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মেধাবীরা। তাই কোটার প্রার্থীদের নিয়োগ দেয়ার পর যেসব পদ খালি থাকে সেসব পদে মেধা থেকে নিয়োগ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন ৩৫তম বিসিএস উত্তীর্ণ প্রার্থীরা।
৩৫তম বিসিএস উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার পদপ্রত্যাশী নাজমুস সাকিব বলেন, নন-ক্যাডার পদে আমাদের নিয়োগ দিতে পিএসসি খুবই আন্তরিক। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ও ইতোমধ্যে অধিযাচনপত্র পাঠিয়েছে বলে আমরা জেনেছি। আশা করছি দ্রুতই পিএসসি নিয়োগ দেবে। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটার পদগুলোতে প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধাবীদের নিয়োগ প্রদান এবং নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করে শতভাগ নিয়োগ প্রদানের দাবি জানান।
এ বিষয়ে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, আমরা মেধাবীদের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদগুলোতে নিয়োগ দিতে চাই। মন্ত্রণালয় ও বিভাগসমূহ থেকে চাহিদা পাওয়া গেলেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। তাদের নিয়োগ দিলে বেকারদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি প্রজাতন্ত্রেরও ভালো হবে। এছাড়া কোটার পদগুলোতে মেধাবীদের নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এটি পিএসসির আওতায় নয়। নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ীই নিয়োগ দেয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।