Inqilab Logo

সোমবার, ১০ জুন ২০২৪, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৩ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মাদারীপুর মডেল থানা স্টাফ কোয়ার্টার নির্মাণ অসমাপ্ত রেখেই বিল তুলে নিয়েছে ঠিকাদার

| প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা : ৮ বছর আগে মাদারীপুর সদর মডেল থানা স্টাফ কোয়ার্টার নির্মাণ কাজ অসমাপ্ত রেখে পিডবিøউডি (গণপূর্ত) বিভাগের কর্মকর্তাদের সহায়তায় সম্পূর্ণ বিল ৩৩ লাখ ৭৯ হাজার তুলে নিয়ে গেছে ঠিকাদার সৈয়দ নুরুল হক। দোতলা এই ভবনের ৮টি ইউনিট নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে দেখিয়ে ঠিকাদারকে সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ করা হলেও প্রকৃতপক্ষে নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। বাইরে থেকে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে কিছুটা বোঝা গেলেও ভিতরের দরজা, জালানা, গ্রীল,বাথরুম ফিটিংস, বৈদ্যুতিক লাইন পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের কোন কাজই করা হয়নি। যে কারণে এই ভবনের ৪টি কোয়ার্টারে থাকার জন্য বরাদ্দ প্রদান সম্ভব হয়নি। ফলে ৮ বছর ধরে খালি পড়ে থাকায় সরকারের গচ্ছা গেছে কোটিরও বেশি টাকা। এছাড়া ৮ বছর ধরে খালি পড়ে থাকায় ভবনটি এখন এমনিতেই প্রায় অকেজো হয়ে পড়েছে।
গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালে মাদারীপুর সদর থানার ৮শ’ বর্গফুট কোয়ার্টার নীচতলা ৪ ইউনিট ও ২ ইউনিট দোতলা ভবন নির্মাণ কাজ পায় ঠিকাদার সৈয়দ নুরুল হক। গণপূর্ত বিভাগের একটি প্রতিবেদনে দেখা যায় ৪তলা ভিত্তি (১৭৮২.৫০ বর্গফুট) যার প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ লক্ষ ১২ হাজার টাকা, নীচতলা এপ্রোন, ড্রেন ও কলাপসিবল গেটসহ ১৭৮২.৫০ বর্গফুট নির্মাণ ব্যয় ১০ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা, দোতালা ১৭৮২.৫০ বর্গফুট, নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা, তিনতলা চিলাকোঠা ১৮২.৫০ বর্গফুট, নির্মাণ ব্যয় ৯৯ লক্ষ টাকা, জলছাদ,কার্নিশ ও প্যরাপেট (র্৩ -র্র্র্০র্ ) ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা, আরসিসি পানির ট্যাংক (১৬০০ গ্যালন) যার নির্মাণ ব্যয় ৮৮ হাজার টাকা, আভ্যন্তরীণ পয়ঃপ্রণালী ও পানি সরবরাহ বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা, অভ্যন্তরীণ বিদ্যুতায়ন বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা, বিটুমিনাস কার্পেটিং রাস্তা ১২০০ বর্গফুট যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৪০ হাজার টাকা সর্বমোট বরাদ্দ- ৩৩ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা। গণপূর্ত বিভাগ পানি সরবরাহ ও বিদ্যুতায়নে ৭৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বললেও অন্যান্য কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে বলে মনগড়া প্রতিবেদন তৈরি করে ঠিকাদারকে শতভাগ বিল পরিশোধ করে দিয়েছে। কিন্তু সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, পানির ট্যাংকি, অভ্যন্তরীণ বিদ্যুতায়ন-এর কোন কাজই করা হয়নি এছাড়াও বাথরুমের দরজা জালনা, ফিটিংস, গ্রীলসহ কোন রুমেরই দরজা জানালা লাগানো হয়নি। শুধু বাইরের গ্রীল বাইরের দুটি দরজা লাগানো হয়েছে।
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: জিয়াউল মোর্শেদ জানান, সদর থানা স্টাফ কোয়ার্টারের নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় এ পর্যন্ত কোন কর্মকর্তাকে তা বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হয়নি। বরাদ্দ দেওয়া হলে গত ৮ বছরে সরকারের কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আদায় হতো। আর বসবাস উপযোগী হলে বিল্ডিংও ভালো থাকতো। ৫০ থেকে ৬০ ভাগ কাজ শেষ হলেও কি করে ঠিকাদারকে সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ করা হলো তা বুঝা যাচ্ছে না। এব্যাপারে ব্যক্তিগতভাবে তিনি গণপূর্ত বিভাগে গিয়ে এবং পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে গণপূর্ত বিভাগকে বার বার জানানোর পরও গণপূর্ত বিভাগ এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাদারীপুর

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ