Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

একটি সেতুর অভাবে ২৫ হাজার মানুষের দুর্ভোগ

| প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জাহেদুল হক, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) থেকে : চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের সাপমারা খালে একটি সেতুর অভাবে ছয় গ্রামের বাসিন্দারা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। দীর্ঘদিনের দাবি সত্ত্বেও সেতু না হওয়ায় এসব এলাকার প্রায় ২৫ হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকোতে চলাচল করছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উপকূলীয় দুই ইউনিয়ন রায়পুর ও জুঁইদ-ীর অন্তত ছয় গ্রামের বাসিন্দারা এ পথে চলাচল করেন। তাছাড়া রায়পুরের দক্ষিণ সরেঙ্গা, উত্তর সরেঙ্গা ও পূর্ব গহিরা গ্রামের লোকজনকে জুঁইদ-ী চৌমুহনী হয়ে জেলা ও উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। কিন্তু সেতু না থাকায় যাতায়াতসহ মালামাল আনা-নেয়ায় দারুণ দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অন্যদিকে রায়পুরের অধিকাংশ মানুষ সাগরে মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু বাঁশের সাঁকোয় আহরিত এসব মাছ বহনে যথেষ্ট সমস্যায় পড়তে হয়। এ কারণে মাছের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন এখানকার জেলেরা। এ এলাকার শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ বটতলী শাহ মোহছেন আউলিয়া ডিগ্রি কলেজ, জেকেএস উচ্চ বিদ্যালয়, জুঁইদ-ী আনোয়ারুল উলুম দাখিল মাদরাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে। এসব ছেলেমেয়েদের সাঁকো পার হতে গিয়ে অনেক সময় খালে পড়ে বইপত্র ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। স্থানীয়রা জানান, স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে উপজেলার রায়পুর ও জুঁইদ-ী ইউনিয়নের মধ্যবর্তী সাপমারা খালের মুখ নামক স্থানে সর্বস্তরের জনসাধারণ একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। একাধিকবার দোহাজারী সড়ক বিভাগ সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে জরিপ কাজও চালায়। কিন্তু পরবর্তীতে তা থমকে যায়। এ সেতুটি নির্মাণ হলে যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ এলাকার জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘব হবে। খুরুস্কুল গ্রামের বাসিন্দা আলী মুন্সী (৭৮) বলেন, ভোটের সময় এমপি-মন্ত্রীরা শুধু আশ্বাসই দিয়ে গেছেন কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। রাস্তাঘাট-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নানা সমস্যা থাকলেও তাদের কাছে বড় সমস্যা সাপমারা খালে সেতু নির্মাণ না হওয়া। সরেঙ্গা গ্রামের শিক্ষার্থী আনিসুর রহমান (১৪) জানান, ভাঙ্গাচোরা সাঁকো পার হয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া সীমাহীন কষ্ট। শীতকালে যেমন তেমন বর্ষা মৌসুমে সাঁকোতে পা পিছলে যাওয়ার ভয় বেশি। অনেকবার বহু ছেলেমেয়ে সাঁকো থেকে খালে পড়ে গেছে। সরেঙ্গায় শ্বশুর বাড়িতে বিয়ের দাওয়াত খেতে আসা গহিরা উপকূলীয় আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী মহরম আলী (৩৭) বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় তেমন একটা আসা হয় না শ্বশুর বাড়িতে। বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়ায় অনেচ্ছা সত্ত্বেও আসতে বাধ্য হলাম। আসার সময় নিজের সাইকেলটি কাঁধে নিয়ে দুটি সাঁকো পার হয়েছি। যাওয়ার পথেও একই কষ্ট ভোগ করতে হবে। এব্যাপারে জুঁইদ-ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোরশেদুর রহমান চৌধুরী খোকা জানান, একটি সেতুর অভাবে দুই ইউনিয়নের জনসাধারণ যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনেক পিছিয়ে পড়েছে। যার প্রভাব শিক্ষা, চিকিৎসা, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক। জনস্বার্থে সেতুটি নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। জানতে চাইলে রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জানে আলম ইনকিলাবকে বলেন, সাপমারা খালের সেতুটি নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ভূমি প্রতিমন্ত্রী মহোদয়কে জানানো হয়েছে। আশা করি যত শিগগির সম্ভব সেতুটি নির্মিত হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুর্ভোগ


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ