Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাঘের ভরা শীত মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলে বসন্তের আবহ বোরো ধান ও গম উৎপাদন ব্যাহতের আশঙ্কা

| প্রকাশের সময় : ২৯ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বরিশাল ব্যুরো : মাঘের ভরা শীত মওশুমে বসন্তের আবহে দক্ষিণাঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তনের আভাস দিচ্ছে। তাপমাত্রার পারদ প্রায় ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠছে। যা স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। মওশুমী বায়ু দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করায় উত্তরের হাওয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দিনে মেঘলা আকাশের সাথে বৃষ্টির আবহের পাশাপাশি শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় জনস্বাস্থ্যসহ রবি ফসলের জন্য ঝুঁকি বাড়ছে। গতকাল মধ্যরাতের পর থেকে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত। শেষরাতে খুলনা থেকে বরিশাল হয়ে ঢাকা মুখি রকেট স্টিমার ‘এমভি বাঙালি’ মোংলা বন্দরের কাছে প্রায় ৩ ঘণ্টা ঘন কুয়াশায় আটকে ছিল। হয় ফলে নৌযানটি গতকাল সন্ধ্যার পরিবর্তে রাত ৮টার পরে বরিশালে পৌঁছে ৯টার দিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। কুয়াশার দাপটে বোরো বীজতলাসহ উঠতি গোল আলুর ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ছে। একইভাবে তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ওপরে ওঠায় গম উৎপাদনেও কাক্সিক্ষত ফল না মেলার আশঙ্কা বাড়ছে।
মাঘের শুরুতে গত ১৪ জানুয়ারি বরিশালে মওশুমের সর্বনি¤œ ৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হলেও পরদিন থেকেই পারদ ক্রমশে বাড়তে শুরু করে। গতকাল সকালে বরিশালে তাপমাত্রার পারদ ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে যায়। পটুয়াখালীতে তা ছিল ১৬ ডিগ্রি। সাথে মেঘলা আকাশ ও বৃষ্টির আবহ জনজীবনে অস্বস্তি আরো বাড়ায়। গত দু’দিন ধরেই দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিও লক্ষ করা গেছে।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয় পাদদেশীয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পার্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। উচ্চ বলয়ের বর্ধিতাংশ ভারতের বিহার ও সংলগ্ন এলাকা জুড়ে অবস্থান করছে। দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে মওশুমী বায়ু অবস্থান করছে। যার বর্ধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করায় দখিনা হাওয়া উত্তরের বাতাসকে বাধাগ্রস্ত করছে। ফলে মাঘের শীতের দাপট দূরের কথা স্বাভাবিক শীতেরও দেখা নেই দক্ষিণাঞ্চলসহ সারা দেশজুড়ে। শীতের তীব্রতার পরিবর্তে দক্ষিণের এখন বসন্তের আবহ। তবে আবাহাওয়ার বুলেটিনে আগামী দু’দিন রাতের তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পাবার সাথে দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধির কথাও বলা হয়েছে।
শীতের তীব্রতা হ্রাসসহ শেষ রাত থেকে কুয়াশা, আবার মেঘলা আকাশের সাথে বৃষ্টির আবহ বোরো বীজতলাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। শংকিত সারা দেশের সাথে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকগণও। চলতি রবি মওশুমে সারা দেশে ৪৮ লাখ হেক্টর জমিতে বোরা আবাদের মাধ্যমে ১ কোটি ৯০ লাখ টন চাল উৎপাদনের আশা করছে কৃষি মন্ত্রণালয় । অসময়ের কুয়াশা যার আবাদ ও উৎপাদনকে ব্যাহত করতে পারে। অনুরূপভাবে দেশে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। যা থেকে অন্তত ১২ লাখ টন গম উৎপাদনের সম্ভবনা রয়েছে। কিন্তু ভরা শীত মওশুমেও তাপমাত্রার পারদ কাক্সিক্ষত পর্যায়ে হ্রাস না পাওয়াসহ মওশুমের বেশিরভাগ সময় জুড়েই তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের ওপরে থকায় গমের উৎপাদন ব্যাহত হবার আশঙ্কা করছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষিবিদগণ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ