গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
স্টাফ রিপোর্টার : ভোক্তা অধিকার আইন সংশোধন করে টেলিযোগাযোগ ভোক্তাদের জন্য আলাদা ভোক্তা আইন তৈরি করার দাবি জানিয়েছে মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। গতকাল (সোমবার) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মুঠোফোন শিল্পের সম্ভাবনা, গ্রাহক ভোগান্তি, অধিকার আদায় ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন এই দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, দেশে এখন শুধু মুঠোফোনের গ্রাহক সংখ্যা ১২ কোটি ১০ লাখ। জীবন-যাপনের প্রায় ৯০ ভাগই পরিচালিত হয় তথ্য-প্রযুক্তি দ্বারা। আর সরকারের রাজস্ব আয়ের ১০ ভাগই আসে মুঠোফোন সেক্টর থেকে। যা মোট জিডিপি’র ৬ দশমিক ২ শতাংশ। শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর প্রায় ৮ লাখ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এ খাতে কর্মসংস্থান হয়েছে। এ খাতে দুর্নীতি প্রতিরোধ, সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা গেলে ভবিষ্যতে এ সেক্টর থেকে রাজস্ব আয়ের ১৫ ভাগই এ সেক্টর থেকে আয় করা সম্ভব। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হলো আজ পর্যন্ত এ সেক্টরের ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত করার কোন আইন বা নীতিমালা তৈরি হয়নি। তিনি বলেন, ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর ২২-এ সেবার মধ্যে টেলিযোগাযোগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখানে ৫২ ধারায় বলা আছে সেবা গ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্ন হইতে পারে এমন কোন কার্য করা যাহা কোন আইন বা বিধির অধীন নিষিদ্ধ করা হইয়াছে। শাস্তি অনূর্ধ্ব ৩ বছরের কারাদন্ড বা অনধিক ২ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দÐ। ৫৩ ধারায় বলা আছে কোন সেবা প্রদানকারী কর্তৃক অবহেলা, দায়িত্বহীনতা বা অসতর্কতা দ্বারা সেবা গ্রহিতার অর্থ, স্বাস্থ্য বা জীবন হানী ঘটানো হয়। ৪৪ ধারায় কোন পণ্য বা সেবা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অসত্য বা মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করা। শাস্তি ১ বছর কারাদন্ড বা ২ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দÐ। কিন্তু এই আইনসমূহ কেবল টেলিযোগাযোগের জন্যই নয়, সেবা খাতে সকল সেক্টরের জন্য প্রযোজ্য। এ আইন দ্বারা টেলিযোগাযোগ গ্রাহকদের মামলা করা অত্যন্ত কঠিন। কারণ সেবা ব্যবহারকারীর নিকট প্রমাণ ধরে রাখা বা সেবা ক্রয় করার কোন প্রমাণপত্র থাকে না। এ সংস্থা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে বিটিআরসি। সেই বিটিআরসি-ই কল হিসাব বা কল ড্রপের পরিসংখ্যান জানার জন্য যেখানে অপারেটরদের স্মরণাপন্ন হতে হয়, সেখানে একজন গ্রাহক কিভাবে তার অধিকার আদায়ের জন্য মামলা করবে? তাই সংগঠনটির নেতারা এই খাতে ভোক্তাদের অধিকার আদায়ের জন্য একটি আলাদা আইন বা গাইড লাইন তৈরি করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানায়। নেতারা আরও বলেন, বিটিআরসি গত ২২ নভেম্বর গ্রাহকদের সমস্যা সমাধানকল্পে যে গণশুনানি আয়োজন করেছিল সেখানে আমরাসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষেরা যে অভিযোগ করেছিল তা আজ ২ মাস পরও সমাধানের কোন নজির স্থাপন হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে গ্রাহকদের ভোগান্তি কমাতে এবং সেবা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু সুপারিশ ও দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যেÑ তথ্য-প্রযুক্তি আইনে তথ্য-প্রযুক্তির অপব্যবহার করার শাস্তি সর্বোচ্চ বিধান থাকলেও তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের সেবা করে প্রতারিত হলে তার শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের পরেও যেহেতু হয়রানি ও প্রতারণা বন্ধ হচ্ছে না। তাই নিবন্ধিত সীমসমূহের তথ্য ও উপাত্ত পুনরায় পর্যবেক্ষণ করার জন্য একটি আলাদা কমিটি গঠন, মোবাইল এক্সোসরিজ বাজারজাত ও আমদানি করার একটি আধুনিক নীতিমালা প্রণয়ন, মোবাইল ব্যাংকিং এর জন্য একটি আলাদা নিয়ন্ত্রণ কমিশন গঠন করা, নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল, রেলওয়ে, নৌকা ভ্রমণ বা বড় বিল্ডিং এর ভিতর বর্তমানে কোন সার্ভিস পাওয়া যায় না। অথচ সীমান্তের ওপারেও অনেক জায়গায় নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। যা দ্বারা সন্ত্রাসী কর্মকাÐ ও মানি লন্ডারিং হচ্ছে হর হামেশায়। অপারেটরদের যত্র-তত্র ম্যাসেজ প্রদানের ফলে গ্রাহকরা বিরক্ত হয়ে পড়েছেন। তাই যে কোন অফার বা সরকারি কোন নোটিশের ম্যাসেজ দিনে একবার প্রদান করতে হবে এবং এই ম্যাসেজ প্রদান অবশ্যই দিনের কর্মসূচির মধ্যে হতে হবে, গভীর রাতে নয়। সর্টকোর্ড থেকে ফোন করে বিরক্ত করা বা ওয়েলকাম টোন ব্যবহারের জন্য ফোন করা বন্ধ করতে হবে। ওয়েলকাম টোন যুক্ত করার জন্য অটো সিস্টেম ম্যাসেজ বন্ধ করতে হবে বা রাজি থাকলে ১ চাপুন এমন সিস্টেম বন্ধ করতে হবে। কারণ এতে করে গ্রাহকদের অজান্তেই এসকল অফার যুক্ত হলে গ্রাহকরা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ফেইসবুকের ফেইক আইডি বন্ধ করতে হবে। হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার ও স্কাইপ বন্ধ না করে এ সকল প্রতিষ্ঠানকে সরকারের সাথে কোন চুক্তিতে আনা যায় কিনা তার ব্যবস্থা করা। কল ড্রপের সংখ্যা নিরূপণ করার জন্য প্রত্যেক মুঠোফোনে একটি আলাদা অ্যাকাউন্ট তৈরি করে দিতে হবে। যাতে করে একটি গ্রাহক তার ব্যালেন্স ইস্টেটমেন্ট দেখতে পারে। যার দ্বারা তার মোবাইলের সকল হিসাব নিশ্চিত করতে পারে। মাসের শেষে কল ড্রপের সকল ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। ইন্টারনেট ডেটা বান্ডিলের মেয়াদ নির্দিষ্ট না করা। অবশিষ্ট ব্যালেন্স পরবর্তী রিচার্জের সাথে সমন্বয় করতে হবে। সিটিসেল গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। এমএনপি ও ভয়েস কল চালুর প্রতিশ্রæতি দ্রæত বাস্তবায়ন করতে হবে। এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, এড. ইসরাত হাসান, দুর্নীতি প্রতিরোধ আন্দোলনের সভাপতি হারুন-অর-রশীদ, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের সভাপতি কবির চৌধুরী তন্ময়, সংগঠনের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা সীমা আক্তার, প্রচার সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।