Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দ্বিতীয় মৈত্রী রেল চালু হচ্ছে শিগগিরই

| প্রকাশের সময় : ২১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বেনাপোল অফিস : খুলনা-বেনাপোল-কোলকাতা রুটে যাত্রীবাহী মৈত্রী রেল যোগাযোগ দ্রুত চালুর জন্য বেনাপোল রেল স্টেশনে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে নির্মাণ শ্রমিকরা। কাস্টমস, ইমিগ্রেশন ও রেল স্টেশনসহ অন্যান্য সরকারী দফতরের নির্মাণ কাজ দ্রæত সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট রেল কর্মকর্তারা তদারকি করছেন দফায় দফায়। ভারতগামী যাত্রীরা বলছেন, দীর্ঘ ৪৫ বছর পর এ পথে মৈত্রী রেল চালু হলে পাসপোর্ট যাত্রীদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে। এতে একদিকে, হয়রানি ও ভোগান্তির হাত থেকে যাত্রীরা রক্ষা পাবে, অন্যদিকে, নিরাপদে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে।
বেনাপোল রেলস্টেশন সূত্র জানায়, খুলনা-বেনাপোল-কোলকাতা রুটে মৈত্রী ট্রেন চলাচলের জন্য সবকিছু ঠিক ঠাক আছে। চলতি মাসের শেষের দিকে মৈত্রী ট্রেন চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জানা যায়, প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের এটি দ্বিতীয় মৈত্রী রেল। এর আগে ঢাকা-দর্শনা-আগরতলা রুটে চালু হয়েছে মৈত্রী রেল। দিন দিন ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা ও ভ্রমণে দুই দেশের মানুষের আগ্রহ বেড়ে চলেছে। হরতাল-অবরোধ থাকলে সড়ক পথে যাতায়াতের ক্ষেত্রে আটকে পড়ে হয়রানির শিকার হয় যাত্রীরা। যাতায়াত ব্যবস্থা সহজীকরণে এবং দুই দেশের মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সুসম্পর্ক বাড়াতেই মৈত্রী রেল চালুর উদ্যোগ নিয়েছে দু’দেশের সরকার।
রেল বিভাগ সূত্র জানায়, দেশ স্বাধীনের আগে এ পথে খুলনা-বেনাপোল-কোলকাতার মধ্যে রেল সার্ভিস চালু ছিল। কিন্তু পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। যাত্রীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে গত বছরের ডিসেম্বরে ভারত ও বাংলাদেশ সরকার রেল যোগাযোগ চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় আনুষ্ঠানিক ভাবে মৈত্রী রেল চালু করতে শুরু হয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ। আপাতত একটি ট্রেন এ পথে সপ্তাহে একবার খুলনা থেকে বেনাপোল হয়ে কোলকাতা গিয়ে ফিরে আসবে। যাত্রীদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পেলে রেলের সংখ্যা আরো বাড়বে। খুলনা থেকে রওনা হয়ে বেনাপোল রেলস্টেশন ও ভারতের পেট্রাপোল রেলস্টেশনে পৌঁছে যাত্রীদের পাসপোর্ট ও ব্যাগেজ তল্লাশির আনুষ্ঠানিকতা করবে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।
বেনাপোল বন্দর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বেনাপোল রেলস্টেশনে দ্রুতগতিতে চলছে নির্মাণ কাজ। এখানে যাত্রীদের পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন অফিস নির্মাণ কাজ চলছে। প্রয়োজনীয় পুরনো ভবনগুলোর কিছু কিছু অংশের চলছে সংস্কার কাজ। এছাড়া খুলনা থেকে বেনাপোল সীমান্ত পর্যন্ত বিভিন্ন ক্রসিংয়ে কাজও চলছে দ্রুত গতিতে। কাস্টমস, ইমিগ্রেশন ও রেল বিভাগের কর্মকর্তারা নিয়মিত এসব কাজ তদারকি করছেন।
সড়ক পথে ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রী সুনিতা বাড়ৈ জানান, দেশ ভাগ হলেও ভারতে এখনও অনেকের আত্মীয়-স্বজন রয়েছে। স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে ও ভালো চিকিৎসা পেতে অনেকেই ভারতে যায়। ভারত থেকেও অনেক আত্মীয় আসে বাংলাদেশে।
হরতাল বা অবরোধের সময় সড়ক পথের যাত্রীরা আটকা পড়ে দুর্ভোগ পোহায়। আবার অনেককে দালালদের হাতে হয়রানির শিকার হতে হয়। এ পথে যাত্রীবাহী রেল চালু হলে তারা অনেক উপকৃত হবে বলে মনে করেন তিনি।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন জানান, মৈত্রী রেল চালু হলে ভারত-বাংলাদেশে যাত্রীদের যাতায়াত আরো বাড়বে। বেনাপোল রেলস্টেশনে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস পুলিশ যাত্রীদের পাসপোর্ট ও ব্যাগেজ তল্লাশি করবে।
রেলের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী বীরবল মন্ডল জানান, বেনাপোল রেলস্টেশনে তিনটি ভবন নির্মাণে বরাদ্দ রয়েছে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণে এক কোটি, কাস্টমস ভবন নির্মাণে এক কোটি ও জিআরপি ব্যারাক নির্মাণে ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বেনাপোল রেলস্টেশন মাস্টার মিন্টু রায় জানান, বেনাপোল ও খুলনা রেলস্টেশনে অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ রেল ক্রসিংয়ের সংস্কার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। একই সঙ্গে ভারত সরকারও তাদের অংশে নির্মাণ কাজ করছে।
তিনি আরো জানান, চলতি জানুয়ারি মাসের মধ্যেই মৈত্রী রেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে দুই দেশের সরকারের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দ্বিতীয়


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ