Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফেনী নদীতে মৈত্রী সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু : ভারতের দরপত্র আহ্বান

| প্রকাশের সময় : ২১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ত্রিপুরাসহ উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর বাণিজ্যিক সুবিধা আরও বাড়বে
মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, ছাগলনাইয়া থেকে : পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশের সড়ক পথকে আরও অধিকহারে ব্যবহার করতে চায় ভারত। ইতোমধ্যেই সড়কপথে ত্রিপুরাসহ ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর বাণিজ্যিক আদান প্রদান আরও বৃদ্ধি করতে ফেনী নদীর উপর মৈত্রী সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই মৈত্রী সেতু চালু হলে চট্টগ্রাম বন্দরও ভারতের নাগালের মধ্যে চলে আসবে।
জানা যায়, ফেনী নদীর উপর বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু নির্মাণে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি রুপি। আন্তর্জাতিক মানের দুই লেনের এ সেতুতে থাকবে ফুটওয়ে এবং এ্যাপ্রোচ রোড। নির্মাণের সময়সীমা ধরা হয়েছে দুই বছর পাঁচ মাস।
২০১৫ সালের ৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ নামে ফেনী নদীর ওপর প্রস্তাবিত সেতুটির ভিত্তি প্রস্তরের ফলক উন্মোচন করেন। জানা যায়, রামগড় সাব্রুম স্থল বন্দর চালুর লক্ষ্যে মৈত্রী সেতু-১ নির্মাণের ঠিকাদার নিয়োগের জন্য ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েস এন্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল) নামে সংস্থাটি অনলাইন দরপত্রটি আহ্বান করে।
ত্রিপুরার বহুল প্রচারিত পত্রিকা দৈনিক সংবাদ ও এনএইচআইডিসিএল’র নিজস্ব ওয়েবসাইটে গত ১২ জানুয়ারী দরপত্র বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশিত হয়। ফেনী নদীর উপর এক্সট্রা ডোজড/ক্যাবল স্টেইড আরসিসি সেতু নির্মাণের দরপত্র দাখিলের শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয় আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারী।
এদিকে, রামগড় সাব্রুম স্থলবন্দর চালুর প্রথম ধাপ হিসেবে ফেনী নদীর বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দরপত্র আহবান করায় রামগড় এবং সাব্রুমের বাসিন্দাদের মধ্যে আনন্দের জোয়ার বইছে। দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার এবং মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের আশায় দীর্ঘদিন ধরে এ বন্দর চালুর অপেক্ষায় রয়েছে দু’পাড়ের মানুষ।
গত বৃহস্পতিবার ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের উদয়পুর সেক্টরের আইজি মি. ইউপি সারেঙ্গীর নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মৈত্রী সেতু নির্মাণের প্রস্তাবিত স্থান সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।
সীমান্তের ওপারের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, রামগড়ের মহামুনি এলাকার বিপরীতে ভারতের সাব্রুম মহকুমার সীমান্তবর্তী আনন্দপাড়া ও নবীনপাড়ায় সেতু নির্মাণের প্রস্তাবিত এলাকাটি তারা বেলা একটার দিকে পরিদর্শন করেন। পরিদর্শক দলে বিএসএফের ডিআইজি (অপারেশন) ডিকে বোড়া, ৫১ বিএসএফের কমান্ডিং অফিসার জিএন মিনাসহ মহকুমা প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তারাও ছিলেন।
ত্রিপুরার আগরতলা থেকে প্রকাশিত ডেইলি দেশের কথা পত্রিকায় ১৫ জানুয়ারি “ফেনী সেতুর অনলাইন টেন্ডার ডাকা হলো ” শিরোনামে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়, ফেনীর নদীর উপর প্রস্তাবিত এই আন্তর্জাতিক সেতু নির্মিত হলে শুধু ভারতের পূর্বাঞ্চলই নয়, খুলে যাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সাথে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা।
সেতুটি হলে বাংলাদেশের সঙ্গে সড়কপথে ত্রিপুরাসহ উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর বাণিজ্যিক আদান প্রদানের সম্ভাবনা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, কাছে এসে যাবে চট্টগ্রাম নৌ বন্দর। সমুদ্র পথে পণ্য পরিবহনের সুযোগ মিলবে।
গত ১৩ জানুয়ারী রামগড়ে অনুষ্ঠিত ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরামের এক অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে ভারতের লোসভার পূর্ব ত্রিপুরার এমপি ও ত্রিপুরা রাজ্যসভার প্রাক্তন মন্ত্রী কমডর জীতেন্দ্র চৌধুরীও বলেছেন, ১-২ মাসের মধ্যে মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে। আর সেতুটি নির্মিত হলে দু’দেশের বাণিজ্যিকসহ সার্বিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।
সেতু নির্মাণের বিষয় নিয়ে গত ৭ ডিসেম্বর রামগড়ে বাংলাদেশ ও ভারতের পদস্থ কর্মকর্তাদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঐ মাসেই দু’দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যৌথভাবে সরেজমিনে পরিদর্শন-পরিমাপ করে সেতু নির্মাণের প্রস্তাবিত মহামুনি এলাকায় সেতুর এলাইনমেন্টের কাজ সম্পন্ন করেন।
জানা যায়, সর্বশেষ গত ২ জানুয়ারী খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের আহ্বানে রামগড় স্থলবন্দর উন্নয়ন বিষয়ে এক গণপরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।



 

Show all comments
  • সোহেল ২১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১:০৯ পিএম says : 0
    ভারতকে সব সুবিধা দেয়া হচ্ছে কিন্তু আমরা কী পাচ্ছি ?
    Total Reply(0) Reply
  • Kamal ২১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১:১০ পিএম says : 0
    tara ja chaibe seta e ki hobe....
    Total Reply(0) Reply
  • হারুন ২১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১:১১ পিএম says : 0
    তিস্তার পানির কী খবর ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ