Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ক্যানসার সতর্কতা ও করণীয়

| প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দেহের যে কোন কোষের অসামঞ্জস্য বৃদ্ধিই হল ক্যানসার রোগের কারণ। দ্রুত গতিতে অসামঞ্জস্য কোষ দেহে ছড়াতে থাকে। লসিকাগ্রন্থি ও রক্ত প্রবাহের ভেতর দিয়ে এ রোগ শরীরের নানাস্থানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং শরীরের সুস্থ কোষগুলিকে অসুস্থ করে তোলে।
ক্যানসারের প্রকৃতি বা ধরণ : ক্যানসার এক ধরনের টিউমার যা গতিময় ও দ্রুত আক্রান্ত মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। এটি দ্রুততার সাথে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে আর এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়াকে বলে মেটাস্ট্যাসিস।
ক্যানসারের সাধারণ লক্ষণ : শীর্ণতা, ওজন হ্রাস, নিদ্রাহীনতা, শারীরিক ও মানসিক কাজে অনীহা, মৃত্যুভয়, আরোগ্য সম্বন্ধে হতাশা, দুর্বলতা ও মাথাঘোরা।
ধরণগত লক্ষণ : যে কোন জায়গায় টিউমার ক্রমে ক্রমে শক্ত হয়। প্রথমে ওই টিউমারকে নাড়ানো যায় কিন্তু পরে তা স্থির হয়ে যায়। তখন আর নাড়ানো যায় না। ল্যারিংসে আক্রান্ত হলে লাগাতার গলাভাঙা থাকবে। ফুসফুসে আক্রমণ হলে বুকে অস্বস্তিভাব, কাশি, ভারী ভারী ভাব এবং শ্বাস কষ্ট থাকবে। মলদ্বারে ক্যানসারে কোষ্ঠবদ্ধতা ও শেষে পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়। পাকস্থলীর রোগে-খালি পেট ও খাওয়ার পর কোন সময়েই স্বস্থি থাকে না। লিভার প্রদেশে ব্যথা, জনডিস, লিভার বড় ও শক্ত হয়ে গেলে বুঝতে হয় যে লিভারের ক্যানসার হয়েছে। যোনিদ্বার দিয়ে অনবরত রক্ত¯্রাব ও সাদা¯্রাব বিশেষ করে রজনিবৃতির পর বা মাসিক বন্ধের পর সেটা জরায়ুর ক্যানসারের ইঙ্গিত দেয়। আঁচিল, জড়–ল প্রভৃতির হঠাৎ পরিবর্তন হলে। কোন ঘা কোন কোক্রমেই না সারার কারণে।
ক্যানসারের বৈশিষ্ট্য : সময়মতো চিকিৎসা নেয়া একান্ত দরকার। সামান্যতম লক্ষণ অনেক অনুরূপ অন্য লক্ষণের ভেতর পৃথক করা বেশ কঠিন। চিকিৎসা না করলে চিকিৎসার বিলম্ব হলে বিপদ ঘটে।
ক্যানসার হওয়ার কারণ : অসংযত জীবন-যাপন ও ভেজাল খাদ্য গ্রহণ। তেজষ্ক্রিয় রশ্মির পুনঃ পুনঃ অপব্যবহার এবং বার বার এক্সরে করা। আলট্রাভায়লেট রশ্মি, এক্সরে ও সূর্যরশ্মি। প্রচুর খাদ্যশস্য গ্রহণ করা। ক্যানসার এক রকমের প্যারাসাইট। ধুমপান, জর্দা, পান ও মদ্যপান-এর অভ্যাস। জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য নানা কৃত্রিম পদ্ধতি ও ওষুধ প্রয়োগ অধিক প্রয়োগ। বার বার বিষাক্ত ওষুধ দিযে গর্ভ¯্রাব বা গর্ভপাত করা। দীর্ঘদিন কোন জায়গায় আঘাত, ঘর্ষণ ও তাপলাগা।
ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিৎ
হোমিওপ্যাথি ওষুধ শক্তিশালী, ফলকারী ওষুধ। রোগ সারানোর ক্ষমতা আমাদের বিশৃংখল জীবনীশক্তিকে উজ্জীবিত করে তোলে। আমাদের দুর্বল ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে, ক্ষত সারিয়ে তোলে, রোগাক্রান্ত কোষ, টিস্যুদের সারিয়ে তোলে, অসুস্থ শরীরকে সুস্থ করে তোলে। হোমিওপ্যাথিক ওষুধ অন্যান্য ওষুধের তুলনায় কম দামে বাজারে পাওয়া যায়। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সাধ্যের মধ্যে থাকে। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি নিরাপদ ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক রোগের নয় রোগীর চিকিৎসা করেন। তাই কোন্ রোগটি ভাল হবে আর কোন্ রোগটি হবে না, একথা বিচারের প্রশ্নই ওঠে না। একজন হোমিওপ্যাথের নিকট বিবেচ্য বিষয় হল-কোন্ রোগীটি ভাল হবে আর কোনটি ভাল হবে না। যে সব রোগী আরোগ্য সীমার ভেতর রয়েছেন, তারা খুব শীঘ্র আরোগ্যলাভ করবেন। হোমিওপ্যাথিক ওষুধ শুধুমাত্র শারীরিক কষ্ট সারিয়ে তোলে তা নয়, মানসিক দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা সারিয়ে সুস্থ করে তোলে।
ক্যানসার প্রতিরোধে করণীয়
টাটকা ফল যেমন মালটা, আঙ্গুর, আনারস, বাতাবীলেবু, কমলালেবু, আমলকি, তরমুজ, কালোজাম, স্ট্রবেরি, চেরীফল ইত্যাদি। টাটকা সবজি (সার ব্যতিত) টমাটো, ব্রকলি, ক্যাপসিকাম, বীট, গাজর, কুমড়ো,  পালং শাক। সামুদ্রিক মাছ, নদীর মাছ। টক দই, স্যালাড, গ্রীন টি ও প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা।
ক্যানসার প্রতিরোধে কি কি বর্জন করা উচিৎ
লিপস্টিক, ফাউন্ডেশন, সানস্ক্রীন ব্যবহার। বেশি লবণ দেয়া, ঝলসানো, পোড়ানো বা তন্দুরী খাবার, রঙ মেশানো খাবার, ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড, কৃত্রিম মিষ্টি মেশানো খাবার। অত্যাধিক চর্বিযুক্ত খাবার, বেশি ঘি, মাখন। কীটনাশক ও সার মেশানো সবজি, ফল।  বায়ু ও পানি দূষণ, শব্দ দূষণ। গাড়ির ধোঁয়া, আলকাতরা, কলকারখানার দূষিত বায়ু দূষণ।
প্রত্যহ পালণীয় : প্রত্যহ সকাল ও বিকালে আধঘণ্টা হাঁটা, ধর্ম পালনে প্রতিদিন সময় দেয়া। প্রত্যহ ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা। মনকে সুস্থ সুন্দর রাখার জন্য টেনশন, দুঃখ, কষ্ট ভুলে ২৫ মিনিট মেডিটেশন করা দরকার। সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠা ও তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ার অভ্যাস করা উচিৎ। সবাইকে ভালবাসা ও ক্ষমা করার গুণসহ হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে যাওয়া। হোমিওপ্যাথিতে ক্যানসার চিকিৎসা সম্ভব বিস্তারিত জানতে ও চিকিৎসা নিতে যোগাযোগ করুন।
ষ ডাঃ মোঃ দেলোয়ার হোসেন
সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ ডিএইচএমএস চিকিৎসক সমিতি, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অফ হোমিওপ্যাথি (বাংলাদেশ চ্যাপ্টার)
জননী হোমিও হল : ১ন ওয়াল্টার রোড, সূত্রাপুর, ঢাকা-১১০০। মোবাইল : ০১৭১১-১৫৪২০৮, ফৎ.ফবষড়ধিৎযড়ংংধরহ@ুধযড়ড়.পড়স



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন