বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্টাফ রিপোর্টার, কুষ্টিয়া থেকে : মেলা আয়োজনের আবেদন বাতিল করেছেন জেলা প্রশাসক। তারপরও থেমে নেই কুষ্টিয়া মডেল থানা সংলগ্ন হাইস্কুল মাঠের মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলা। অনুমতি না থাকলেও শহরের প্রধান সড়কে অবস্থিত হাইস্কুল মাঠের চারপাশ টিন দিয়ে ঘেরা হয়েছে। শতাধিক দোকানীকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে স্টল। ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধশত দোকানি তাদের পসরা সাজিয়েছেন। আরো বেশ কিছু স্টলের সাজসজ্জার কাজ চলছে। নির্মাণ করা হয়েছে সুদৃশ্য গেইট। মেলা মাঠে করা হয়েছে লাইটিং। পুলিশ ও জেলা প্রশাসন মেলার কোনো অনুমতি না দিলেও বেশ কিছুদিন ধরেই চলছে মেলার আয়োজন। মেলায় লোক সমাগম তেমন না হলেও সন্ধ্যার পর আনাগোনা বাড়ে। কেনাবেচাও চলছে অল্পস্বল্প।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সিডাপ সংগঠনের ব্যানারে বাদশা নামের একজন ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে মাসব্যাপী মেলার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন। জানুয়ারির ৫ তারিখ থেকে মেলার শুরুর জন্য তিনি আবেদন জানান। এ জন্য বাদশা জেলা প্রশাসকের এলআর ফান্ডে মোটা অংকের টাকা দেয়ার কথা বলেন। তবে জেলা প্রশাসক এ প্রস্তাব নাকচ করে দেন। এসএসসি পরীক্ষার আগে শহরের মধ্যে কোনো মেলার অনুমতি দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের কিছু নেতা বসে একটি ঘরের মধ্যে আড্ডা দিচ্ছেন। আর কেনাবেচা না থাকায় ব্যবসায়ীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। এদিকে স্টলের পাশাপাশি বাচ্চাদের খেলাধুলার জন্য নানা সামগ্রী স্থাপন করা হয়েছে মাঝমাঠে। এ ছাড়া লটারিসহ অন্যান্য জুয়ার আয়োজনও চলছে ভিতরে ভিতরে।
কুষ্টিয়া হাইস্কুলের পরিচালনা পর্ষদের অন্যতম প্রভাবশালী সদস্য শাহজাহান জানান, মাঠ ব্যবহারের জন্য কোনো টাকা নেয়া হয়নি। এর আগে কয়েকবছর মেলা চলায় মাঠটি নষ্ট হয়ে যায়। তাই মাঠটি মাটি ও বালু দিয়ে সমান করে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। যারা মেলার আয়োজক তাদের বলা হয়েছে মাঠটি সমান করে দিলে আগামী তিন বছর তারা মেলার জন্য এটি ব্যবহার করতে পারবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের হরিপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা জনৈক বাদশা মিয়া কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের নিকট হাইস্কুল মাঠে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলার আবেদন জানান। তবে আবেদন করার আগেই হাইস্কুল মাঠটি স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মৌখিকভাবে বরাদ্দ নিয়ে সেখানে দোকান নির্মাণের কাজ শুরু করেন বাদশা। তবে সামনে ফেব্রæয়ারি মাস থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ায় মেলার আবেদনটি নাকচ করে দেন জেলা প্রশাসক মো. জহির রায়হান। তারপরও যুবলীগের কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে হাইস্কুল মাঠে মেলার আয়োজন পুরোদমে চলতে থাকে।
গত রোববার হাইস্কুল মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের চারপাশ টিন দিয়ে ঘেরা হয়েছে। ভিতরে স্টল বরাদ্দ নিয়েছেন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা। তারা দোকান খুলে রীতিমতো কেনাবেচা করছেন।
খাবার, খেলনা, প্রসাধনী, মেয়েদের পোশাকসহ বিভিন্ন ধরনের প্রায় অর্ধশত স্টলে কম পরিসরে হলেও কেনাবেচা চলছে। দেলোয়ার নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, মেলা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়নি, আয়োজকরা বলেছেন ১৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে। এখন তেমন কোনো কেনাবেচা হচ্ছে না, অনেকেই দেখতে আসছেন। তিনি বলেন, তার স্টলের জন্য ৪৫ হাজার টাকা নিয়েছেন মেলার মালিক।’
আরো কয়েকজন ব্যবসায়ীর জানান, দোকানের জন্য মেলার আয়োজকরা আগেই টাকা নিয়েছেন। গত ১০ দিন আগে তারা দোকান পেতে বসেছেন। এখনো নাকি মেলার অনুমতি পায়নি। এ কারণে প্রচার-প্রচারণা না থাকায় লোকজন তেমন আসছে না। ২০১৬ সালেও হাইস্কুল মাঠে মেলা আয়োজন করেছিলেন বাদশা। প্রশাসন মেলার অনুমতি দিলেও জুয়া খেলাসহ লটারির কোনো নির্দেশনা ছিল না। প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে মেলায় জুয়া ও লটারি চালানো হয়। পরে প্রশাসন এসব বন্ধ করে দেন।
জেলা প্রশাসক মো. জহির রায়হান বলেন, সামনে এসএসসি পরীক্ষা। এ কারণে কোনো মেলার অনুমতি দেয়া হবে না। অনুমতি ছাড়া কোনো মেলা চলবে না।’
তবে অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, আয়োজকরা ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ম্যানেজ করে মেলা করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ কারণে কুষ্টিয়া হাইস্কুল মাঠটি দখল করে রাখা হয়েছে।
মেলার আয়োজক বাদশা মিয়ার সাথে মোবাইলে কথা হলে জানান, আমাদের আবেদন রিজেক্ট করে দিয়েছেন প্রশাসক। আমরা আর মেলা করছি না। এখন চেম্বারের ব্যানারে হবে মেলা। এখনো চ‚ড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। চেম্বারের সভাপতি ব্যস্ত থাকায় কবে উদ্বোধন হবে বলা যাচ্ছে না। তবে কয়েকদিনের মধ্যে একটা কিছু হতে পারে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।