পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেখতে দেখতে শেষ হতে চললো বাংলা একাডেমি আয়োজিত বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে বইমেলা। মেলা প্রাঙ্গনে বাজছে বিদায়ের সুর। আর মাত্র একদিন পরই পর্দা নামবে মাসব্যাপী চলা এই মেলার। এখন শেষ সময়ে গ্রন্থমেলায় যারা আসছেন তাদের বেশির ভাগই ক্রেতা-পাঠক। করোনা মহামারির পরে এবারই প্রথম পূর্ণ পরিসরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে গ্রন্থমেলা। তবে শুরু থেকে স্টল-মালিক ও প্রকাশকদের কিছুটা আক্ষেপ ছিল মেলায় যে পরিমাণ দর্শনার্থী হচ্ছে সে পরিমাণ বই বিক্রি হচ্ছে না। গত কয়েকদিনে সে আক্ষেপ কিছুটা কমেছে।
গতকাল মেলার সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান অংশে গিয়ে দেখা যায় আগত বেশির ভাগেরই হাতে নতুন বই। ঘোরাঘুরি, ছবি তোলা ও গল্প-আড্ডার চেয়ে স্টলে সাজানো বইয়ের দিকেই বেশি মনোযোগী ছিলেন আগতরা। পছন্দের বিষয় ও প্রিয় লেখকের বই কেনার জন্য বিভিন্ন স্টলে খোঁজ করছিলেন তাদের অনেকে।
মেলা ঘুরে দেখা যায় পাঠকদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে কালজয়ী কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসগুলো। কবি নজরুল ও রবীন্দ্রনাথের বইয়েও ভালোবাসা খুঁজে পান অনেকে।
মেলা প্রাঙ্গনে দেখা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ওনিকের সাথে। তিনি বলেন, বই কিনলাম ৪টা, তার মাঝে ৩টা হুমায়ূন আহমেদের লিখা ও একটি লুৎফর হাসানের লিখা জোনাকির নিজস্ব অন্ধকার। হুমায়ূন আহমেদের কোন কোন বই কিনেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এপিটাফ, বারণের দেশে আমি এবং আমরা ও তারা তিনজন বইগুলো কিনেছি। রাজধানীর মহাখালী থেকে আসা ৮ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানান, তিনিও কিনেছেন হুমায়ূন আহমেদের লিখা উপন্যাস আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, হুমায়ূন স্যারের লিখা আমার সবসময়ই ভালো লাগে। তাই এবারের মেলায়ও স্যারের বই কিনেছি। গতকাল মেলা ঘুরে দেখা যায়, অন্যপ্রকাশ, ঐতিহ্য, মাওলা ব্রাদার্স, আগামী প্রকাশনী এরকম পরিচিত প্রকাশনীগুলোর স্টলে ক্রেতাদের ছিল উপচেপড়া ভিড়। তবে মেলায় পাঠকদের আগ্রহের শীর্ষবিন্দুতে ছিল হুমায়ূন সাহিত্য। মেলা ঘুরে দেখা যায়, হুমায়ূন আহমেদের বইয়ের জন্য পরিচিত প্রকাশনী ‘অন্যপ্রকাশ’ ও ‘কাকলী প্রকাশনী’র স্টলে ছিল অন্যান্য স্টলগুলোর চাইতে অনেক বেশি ভিড়। তারাও তাদের প্রকাশিত অন্যান্য বইয়ের চেয়ে স্টলে বেশি সাজিয়ে রেখেছেন হুমায়ূন আহমেদের বিভিন্ন গল্প, উপন্যাস ও সায়েন্স ফিকশনের সংকলনসমূহ। পাঠকদের সুবিধার জন্য এবার তারা হুমায়ূন আহমেদের বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত গল্প, উপন্যাস ও নানা লেখাসমূহের সংকলন প্রকাশ করেছেন।
মেলার বিক্রয়কর্মী ও প্রকাশকরা জানান, মেলায় হুমায়ূন আহমেদের বাইরে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের বইয়ের চাহিদাও খুব ভালো, বিক্রিও সন্তোষজনক। রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের ছোটো ছোটো বই, রচনাবলি এসবের চাহিদা বেশি। সকল বয়সের পাঠকই নজরুল-রবীন্দ্রনাথের বই খুঁজতে খুঁজতে নির্দিষ্ট স্টলে পৌঁছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এবারের বইমেলায় রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলকে নিয়ে নেই কোনও নতুন গবেষণাধর্মী বই। এর কারণ হিসেবে জানা যায়, পাঠকদের আগ্রহ কম ও মানসম্মত গবেষকের অভাব। নজরুল গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিক্রয়কর্মী মো. রাসেল বলেন, আমাদের এবার নজরুল গবেষণাধর্মী কোনও নতুন বই নেই। তবে দুটি বই নতুন করে প্রকাশ করা হয়েছে। গবেষণাধর্মী বই কম আসার কারণ গবেষকের অভাব। তাছাড়াও বড় কারণ পাঠকদের এই ধরনের বইয়ের প্রতি আগ্রহ কম। তারা রচনাবলি আর তার বই খোঁজেন বেশি। আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সকল বয়সের পাঠকই নজরুলের খোঁজে আমাদের এখানে আসেন।
বাংলা একাডেমির বিক্রয়কর্মী মনীষা বলেন, সকল শ্রেণির পাঠকের আগ্রহ রয়েছে রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের প্রতি। সবাই এসে রচনাবলি খোঁজ করেন। এবার মেলা উপলক্ষে নতুন কোনও বই আসেনি।
ঐতিহ্য প্রকাশের বিক্রয়কর্মী জাবের হোসেন বলেন, আমাদের এখানে রবীন্দ্রনাথের বই আছে বেশ কিছু। সবাই আসছেন, কিনছেন। তবে এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গবেষকরা। ওনাকে নিয়ে গবেষণাধর্মী নতুন কোনও বই নেই।
পুথিনিলয় প্রকাশের বিক্রয়কর্মী বৃষ্টি বলেন, আমাদের এখানকার রবীন্দ্রনাথের বইগুলো কিছুটা ভিন্ন উপস্থাপনায় প্রকাশ করা হয়েছে। যার ফলে যে কেউ এসে দেখছে, কিনছেন। সকল বয়সের পাঠকেরই তার বইয়ে আগ্রহ আছে। গতকাল বইমেলায় ২৬তম দিনে মেলায় নতুন বই এসেছে ১৫৫টি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।