Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চোরাই সিগারেটে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

| প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : বাজার ছেয়ে গেছে আন্তর্জাতিক ব্রান্ডের চোরাই সিগারেটে। বিমান, স্থল ও সমুদ্র বন্দর দিয়ে দেদারসে ঢুকছে এসব সিগারেট। তরুণপ্রজন্ম; গুদাংগারাম, ইজি, জো বø্যাক, পাইন ও মোর নামের এসব সিগারেট লুফে নেয়ার কারণে বিভিন্ন বন্দরে তৈরি হয়েছে শক্তিশালী চোরাচালানি সিন্ডিকেট। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দেশে তৈরি প্রিমিয়াম ব্রান্ডের সিগারেটের দাম বেশি। এ সুযোগে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মাধ্যমে দেদারসে ঢুকছে এসব সিগারেট। চোরাই এসব সিগারেটগুলো মালয়েশিয়া, দুবাই, কাতার, সউদী আরব, দক্ষিণ কোরিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে আসছে। চোরাই এসব সিগারেটের প্যাকেট পরখ করে দেখা গেছে, বাংলাদেশে বিক্রির জন্য এসব ব্রান্ডের সিগারেট উৎপাদিত হয় না। কারণ এসব সিগারেটের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী থাকে না। যদিও আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের সব সিগারেটের প্যাকেটে সতর্কবাণী থাকা বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া এসব চোরাই সিগারেটের মোড়কে বাংলাদেশের কোনো ট্যাগস্ট্যাম্প লাগানো থাকে না। অনুসন্ধানে জানা গেছে, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশাপাশি সমুদ্রবন্দর দিয়েও প্রচুর নিম্নমানের চোরাচালানের মাধ্যমে আনা বিদেশি ব্রান্ডের সিগারেট এদেশে প্রবেশ করছে। বৃহত্তর চট্টগ্রাম, টেকনাফ এবং বান্দরবনের বিভিন্ন সমুদ্র সীমানা পেরিয়ে এসব নিম্নমানের সিগারেট বাংলাদেশে আসছে। এরপর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সিগারেটগুলো ছড়িয়ে পড়ছে। বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী শিক্ষার্থী, পেশাজীবী, তরুণ-তরুণীদের কাছে এসব ব্রান্ডের সিগারেটের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। কারণ চোরাচালানের মাধ্যমে আনা বেশিরভাগ সিগারেটের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী থাকে না। তবে তরুণ সিগারেট ভোক্তাদের আকৃষ্ট করতে এসব সিগারেটের মোড়ক ভোক্তা গ্রাহকদের জন্য আরও সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তৈরি করা হয়। বেশি লাভের কারণে সিগারেট বিক্রেতারা চোরাই ব্রান্ডের সিগারেটের প্রচারণা বেশি করে করছে। কারণ অবৈধ সিগারেট বিক্রিতে খুচরা ব্যবসায়ীদের বেশি মুনাফা থাকে। তাই অবৈধ সিগারেট বিক্রির দিকে বেশি ঝুঁকছে তারা। স্কুল- কলেজগামী সদ্য ধূমপায়ীদের সিগারেট বিক্রেতারা বলছেন, বিদেশি সিগারেটে নিকোটিন কম। এ কারণে এগুলো শরীরের জন্য কম ক্ষতিকর। ফলে অধিকাংশ অধূমপায়ী এবং নব্য ধূমপায়ীরা এসব ব্রান্ডের সিগারেট দিয়ে ধূমপান শুরু করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এসব সিগারেট দেশে উৎপাদন না হওয়ার কারণে এগুলোর মধ্যে কোনো মেয়াদউত্তীর্ণের তারিখ থাকে না। তাই এগুলো মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য আরো বেশি মাত্রায় ক্ষতিকর। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর ও সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি চোরাই সিগারেট দেশে ঢুকছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর ও মংলা সমুদ্রবন্দর দিয়েও এসব সিগারেট চোরাচালানের মাধ্যমে ঢুকছে। এরপর ঢাকার মৌলভীবাজার, চকবাজার ও ফকিরাপুল এবং চট্টগ্রামের রিয়াজুদ্দিন বাজার দিয়ে এসব চোরাই সিগারেট সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। এসব বাজারে শক্তিশালী সিন্ডিকেট চোরাই সিগারেট বিপণন করছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখনই চোরাই সিগারেট বন্ধে ক্রাশ প্রোগ্রাম নিতে হবে। তবেই শত শত কোটি টাকার রাজস্ব পাবে সরকার। বন্ধ হবে অবৈধ সিগারেট আমদানি।
সিগারেট চোরাচালান এবং এই চোরাচালানের অর্থে পরিচালিত অন্যান্য অপরাধমূলক কার্যক্রম দ্রæত বন্ধের জন্য সরকারের এমন একটি টিম থাকা উচিত, যেখানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, পুলিশ, প্রশাসন এবং অন্যান্য আইন প্রণেতা সংস্থার প্রতিনিধিরা একত্রিত হয়ে কাজ করবেন। এমনটিই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চোরাই

১৩ এপ্রিল, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ