পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠিত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনা। ৭০টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন এ সম্মেলনে। তারা সতর্ক করে বলেছেন, দুই পক্ষের কারোই একতরফাভাবে এমন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া উচিত নয়; যাতে ভবিষ্যৎ আলোচনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই সম্মেলনকে ফিলিস্তিন স্বাগত জানালেও ইসরাইল একে ষড়যন্ত্রকারীদের সম্মেলন বলে উল্লেখ করেছে। দেশটি বলেছে, তাদের বিরুদ্ধেই এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। এর ফল মানতে তেল আবিব বাধ্য নয়।
প্যারিস সম্মেলনকে শান্তি প্রক্রিয়াকে পিছিয়ে দেওয়ার পদক্ষেপ হিসেবে মন্তব্য করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গত ১৫ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে অনুষ্ঠিত হয় একদিনের এ সম্মেলন। এক বিবৃতিতে সংঘাতের ইতি টানতে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। তবে তারা ইসরাইলে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে হস্তান্তরের ব্যাপারে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থানের ব্যাপারে সমালোচনা জ্ঞাপন থেকে দূরে থাকছেন। ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা হলেও প্যারিস সম্মেলনে দুই দেশকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তাদের অনুপস্থিতিতেই শুরু হয়েছে আলোচনা। তবে আলোচনার ফলাফল শুনতে দুই দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দফতরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্মেলনের যৌথ ইশতেহারে স্বাক্ষর করেনি যুক্তরাজ্য। ইসরাইলের বিরোধিতা এবং নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের আগ মুহূর্তে এ সম্মেলনের সময় নির্ধারণের ঘটনায় উদ্বেগের কথা জানিয়েছে ব্রিটেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, তার টিম সম্মেলনের যৌথ ইশতেহারের ভাষা প্রয়োগের ওপর জোর দিয়েছে; যেখানে ইসরাইলিদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের হামলার নিন্দা জানানো হয়েছে। এক্ষত্রে ভাষার ব্যবহার আরও ভারসাম্যপূর্ণ করা হয়েছে। জেরুজালেমে ইসরাইলে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের বিষয়ে রবিবার ফ্রান্স৩ টিভির সঙ্গে কথা বলেন ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন মার্ক আয়রল্ট। এ সময় তিনি বলেন, ট্রাম্পের পক্ষে এটা করা সম্ভব হবে না। কিন্তু তারপরও যদি তিনি এটা করেন তাহলে এর পরিণতি হবে গুরুতর।
এদিকে প্যারিস সম্মেলনের একদিন আগে শনিবার ইসরাইলের মার্কিন দূতাবাস রাজধানী তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তরের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এ পরিকল্পনা ত্যাগের আহ্বান জানান তিনি। মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তর করা হলে চলমান শান্তি আলোচনা হুমকির মুখে পড়বে বলেও সতর্ক করেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট। গত ১৪ জানুয়ারি ভ্যাটিকানে ফিলিস্তিনি দূতাবাস উদ্বোধনের পর মাহমুদ আব্বাস বলেন, পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেল আবিব থেকে দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে আনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। যদিও এমনটা এখনো ঘটেনি। তবে দূতাবাস স্থানান্তর হলে চলমান শান্তি প্রক্রিয়া বাধা পাবে। আমি আশা করব, ট্রাম্প দূতাবাস স্থানান্তরের পরিকল্পনা থেকে সরে আসবেন। কারণ এতে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের আশা ধূলিস্মাৎ হয়ে যাবে। সম্মেলনে ইউরোপ ও আরব বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলো ছাড়াও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলো অংশ নেয়। উদ্বোধনী ভাষণে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফাঁসোয়া ওঁলাদ শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বাধ্যবাধকতার কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা ছাড়া প্রতিবেশীদের সঙ্গে ইসরাইলের মিলন বা সমন্বয় সাধনের চিন্তা শিশুসুলভ ব্যাপার। আল জাজিরা, বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।