পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
তিন দিনের সহিংসতায় অন্তত ৪৪ জন নিহত হওয়ার পর ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দিয়েছে। এ অস্ত্রবিরতি কার্যকরের মাধ্যমে এক বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে গাজায় শুরু হওয়া সবচেয়ে গুরুতর সংঘাত বন্ধ হওয়ায় আশা জাগতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোর পুরোটা সময়জুড়ে ইসরাইলি বাহিনীগুলো ফিলিস্তিনি লক্ষ্যস্থলগুলোতে একের পর এক আক্রমণ চালানোর পর স্থানীয় সময় রোববার রাত সাড়ে ১১টায় অস্ত্রবিরতি শুরু হলে হামলা বন্ধ হয়। ইসলামিক জিহাদ ও ইসরাইল, উভয় পক্ষই পৃথক বিবৃতির মাধ্যমে অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেয় এবং এ বিষয়ে মধ্যস্থতার জন্য মিশরকে ধন্যবাদ জানায়। তিন দিনের এই সংঘাতে গাজার পূর্ববর্তী যুদ্ধের লক্ষণগুলো ফুটে উঠলেও আগের তুলনায় কিছুটা সীমিত এবং নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ছিল। কারণ গাজার ক্ষমতাসীন দল হামাস এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়া থেকে বিরত ছিল। হামাস ইরান-সমর্থিত ইসলামিক জিহাদ গোষ্ঠীর তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ সংঘাতে ৪৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, এদের অর্ধেকেই বেসামরিক এবং তাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। অপরদিকে ইসলামিক জিহাদের ছোড়া রকেটগুলো ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে ভীতি ছড়িয়েছে এবং তেল আবিব ও আশকেলনসহ বিভিন্ন শহরের বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বাধ্য করেছে।
গত সপ্তাহে ইসরাইল অধিকৃত ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের জেনিন থেকে ইসলামিক জিহাদের অন্যতম নেতা বাসাম আল সাদিকে গ্রেপ্তার করে ইসরাইলি বাহিনী। এই গ্রেপ্তারের প্রতিশোধ নিতে ইসলামিক জিহাদ হামলা চালাতে পারে ধারণা করে শুক্রবার গাজায় সশস্ত্র গোষ্ঠীটির অবস্থানে আগাম হামলা চালায় ইসরাইল। এর জবাবে ইসরাইল লক্ষ্য করে কয়েকশ রকেট ছোড়ে ইসলামিক জিহাদ।
ইরানের রাজধানী তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসলামিক জিহাদের নেতা জিয়াদ আল নাখলা জানান, কায়রো আল সাদিসহ তাদের গোষ্ঠীর দুই উচ্চপদস্থ নেতার ‘মুক্তির জন্য কাজ করবে’। ইসলামিক জিহাদ রকেট ছোড়া বন্ধ করলে তাদের দুই নেতারা মুক্তির দাবি নিয়ে ইসরাইল ‘আলোচনায়’ বসবে, এমন শর্তে অস্ত্রবিরতি হয়েছে বলে মিশরীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
শনিবার গাজার রাফা শহরে একটি বাড়িতে বিমান হামলা চালিয়ে ইসলামিক জিহাদের (পিআইজে) জ্যেষ্ঠ নেতা খালেদ মনসুরকে হত্যা করে ইসরাইল। এ দিন রাতে দ্বিতীয় আরেক পিআইজে নেতা তাসির জাবারিকেও হত্যা করে ইসরাইল। রোববার ইসলামিক জিহাদ তাদের রকেট হামলা সীমা জেরুজালেম পর্যন্ত বৃদ্ধি করে। তাদের দুই নেতারা হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এ হামলা চালানো হচ্ছে বলে জানায় পিআইজে।
ইসরাইল জানায়, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম গাজা থেকে আসা রকেটগুলোকে প্রতিহত করেছে। এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ অস্ত্ররিবতিকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বেসামরিক হতাহতের ঘটনায় তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। সূত্র : রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।