নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : সদ্য সামাপ্ত চতুর্থ সাফ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে রানার্সআপ হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা দল। এ ফলাফল দেশের নারী ফুটবলের জন্য ইতিবাচক ভুমিকা রাখবে। এবার সেমিফাইনালে খেলার লক্ষ্য নিয়ে ভারতের শিলিগুড়িতে গেলেও সাবিনা খাতুন বাহিনী ফাইনালে খেলার যোগ্যতা পায়। প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সাফল্য নিয়ে দেশে ফিরে এখন উচ্ছসিত লাল-সবুজের মেয়েরা। দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে ইতিহাস গড়ে সাবিনা-স্বপ্না-কৃষ্ণরা দেশের ফুটবলপ্রেমীদের চোখে স্বপ্ন এনে দিয়েছেন। এ স্বপ্ন সেরা হওয়ার, সাফ সেরা নারী ফুটবল দলের খেতাব জেতার। একদিন স্বপ্নপূরণ হবে, বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল দল সাফে চ্যাম্পিয়ন হবেই। এমন আশা স্বয়ং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের। গতকাল দুপুরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ টাওয়ার অডিটরিয়ামে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে রানার্সআপ জাতীয় মহিলা দলের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় এমপি। এছাড়াও বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন মহি, সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ, মহিলা উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ ও পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন গ্রæপের অতিরিক্ত পরিচালক এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার ডন সহ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের সব সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ওয়ালটনের দেয়া একটি করে ৩২ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন উপহার পায় মহিলা ফুটবল দলের সব সদস্য।
অনুষ্ঠানে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমার স্বপ্ন হলো বাংলাদেশ সাফে চ্যাম্পিয়ন হবে এবং সাফ সভাপতি হিসেবে আমি তাদের হাতে ট্রফি তুলে দেবো। এ স্বপ্ন আমি পূরণ করবো। এবারের সাফে বাংলাদেশের মেয়েরা রানার্সআপ হয়েছে। আমরা কিন্তু ভারতে ফাইনাল খেলতে যাইনি। কারণ, আমাদের দল হলো অনূর্ধ্ব-১৬। এখানে জনাচারেক জাতীয় দলের ফুটবলার রয়েছে। এ দলটি আমাদের ভবিষ্যৎ। আমি নিশ্চিত করে বলতে চাই, ২০২০ সালে মহিলা সাফে আমরা অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হবো।’ তিনি আরও বলেন,‘এ মেয়েগুলো ১৬ বছরের। সিনিয়র যারা আছে ২৩/২৪ বছরের। এরা ২৪ জানুয়ারি জাপান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের আমন্ত্রণে সেখানে যাচ্ছে। তাদের মান বাড়াতে যতকিছু আছে সবই আমরা করবো। মেয়েদের বলছি, তোমাদের যাত্রা কেবল শুরু হলো। রানার্সআপ, চ্যাম্পিয়ন কোনো বিষয় নয়। আমরা চ্যাম্পিয়ন হবো আগামীতে। আমি ফুটবলার। আমি জানি সাফল্য পেতে হলে কি করতে হবে। যা যা করার তোমাদের জন্য সব করবো।’
বক্তব্যের শেষ দিকে সালাউদ্দিন মঞ্চে ডেকে নেন সাফ রানার্সআপ জাতীয় মহিলা দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনকে। তাকে সঙ্গে নিয়ে ছবিও তোলেন তিনি। এবং বলেন,‘একটা কথা না বলে পারলাম না। মহিলা দলের অধিনায়ক ও আমার একটা জায়গায় মিল আছে। আমরা দু’জনই পেশাদার ফুটবল লিগ খেলেছি বিদেশে।’
পরে অধিনায়ক সাবিনা নিজ প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমাদের ভাগ্য খুব ভালো যে, সালাউদ্দিন স্যারের মতো একজন সভাপতি পেয়েছি। সাফে আমরা ডেথ গ্রæপে ছিলাম। আমাদের গ্রæপে ছিল আফগানিস্তান ও ভারত। চেষ্টা করেছি শতভাগ দিয়ে খেলতে। আমাদের লক্ষ্য ছিল সেমিফাইনাল। কিন্তু আত্মবিশ্বাসে ফাইনাল খেলেছি। এটা অনেক পাওয়া। দেশবাসীর দোয়া ছিল আমাদের সঙ্গে।’
অনুষ্ঠানে পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এলইডি টেলিভিশন উপহার পেলেও বরাবরের মতো যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে উপেক্ষিতই থাকলো জাতীয় মহিলা ফুটবল দল। মন্ত্রণালয়ের দুই মন্ত্রী উপস্থিত থাকলেও মুখে প্রশংসা ছাড়া তারা মেয়েদের উৎসাহিত করতে কোন পুরস্কারের ঘোষনা দেননি। তাই তো অনুষ্ঠান শেষে মিডিয়ার তোপে পড়েন প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার। ক্রিকেটের জয়ে পুরস্কার দেন, কিন্তু ফুটবলে মেয়েদের সাফল্যে কোন ঘোষনা আসেনি। সাংবাদিকদের এমন কথায় তিনি বলেন,‘এ নিয়ে এখনই কিছু বলবো না। আর ক্রিকেটে পুরস্কার দেয়া হয়, কারণ তারা একটা পর্যায়ে পৌঁছছে। তাদের ধারাবাহিকতা আছে। ফুটবলে এমন পরিস্থিতি আসলে অবশ্যই পুরস্কার দেয়া হবে। মেয়েরা এখন ভালো করছে। তাদের ধারাবাহিকতা থাকলে আমরা তাদেরও পুরস্ক্রত করবো।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।