২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
আমাদের মাঝে অনেকেই হাতে একজিমায় ভুগছেন এবং চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হচ্ছেন কিন্তু চিকিৎসায় কেউ কেউ আরোগ্য লাভ করলে হয়তো সবাই সুফল পাচ্ছেন না। তাই এ ব্যাপারে কিছুটা আলোকপাত করা প্রয়োজন। তবে এটা অতি সাধারণ সমস্যা, যার ফলে রোগীকে অত্যন্ত অস্বস্তিকর ও বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। কারণ হাতে একজিমার কারণে রোগীরা দৈনন্দিন কাজকর্মে বাধাগ্রস্ত হন। শিল্প কলকারখানায় কর্মরত রোগীদের ক্ষেত্রে হাতের সমস্যা একটা বিরাট সমস্যা এবং এই সমস্যার ফলে কখনও চাকরি সঠিকভাবে সম্পন্ন করাও সম্ভবপর হয়ে উঠে না।
হাতের একজিমার সঠিক শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা একটি চ্যালেঞ্জের বিষয়। কারণ রোগের লক্ষণ এবং কারণের মধ্যে কোনরকম সামঞ্জস্য খুঁজে পাওয়া যাবে না। হাতের একজিমা ছাড়া অন্য আরো কিছু চর্মরোগের ধরন ও একজিমার মত দেখাতে পারে। তাছাড়া প্রাথমিক অবস্থায় একজিমার রক্ষণ এবং লক্ষণের প্রকার, পরবর্তীতে চুলকানী, ত্বকে ছড়ে যাওয়া, ইনফেকশন এবং চিকিৎসা ইত্যাদির কারণে পরিবর্তিত রূপে দেখা দিতে পারে।
প্রকারভেদ : হাতের একজিমা বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে।
উত্তেজক পদার্থের কারণে সৃষ্ট একজিমা অত্যন্ত সাধারণ। এই ধরনের একজিমাকে গৃহিণীদের একজিমা কিংবা ডিসপ্যান হাত অথবা ডিটারজেন্ট হাতে ইত্যাদি বলা হয়ে থাকে। অনেকের হাত ঘণ্টার পর ঘণ্টা এবং বারে বারে বিভিন্ন কেমিক্যালের সংস্পর্শে এলেও কিছু হয় না। অন্যদিকে কারো সামান্য হাত ধোয়ার ফলে ফেটে যাওয়া ও ছড়া এবং একজিমা দেখা দিতে পারে। যাদের হাত সহজেই উদ্দীপিত হতে পারে তাদের ক্ষেত্রে বংশগত কারণও থাকতে পারে।
লক্ষণসমূহ হাতের একজিমা বা প্রদাহের মাত্রা সংস্পর্শিত রাসায়নিক পদার্থের তীব্রতা এবং ব্যক্তিবিশেষের গ্রহণযোগ্যতা, সংস্পর্শের স্থান, রোগের সময়কাল ইত্যাদির উপর নির্ভরশীল। এলার্জি, ইনফেকশন, আচড় এবং মানসিক চাপ ইত্যাদির ফলেও লক্ষণের পরিবর্তন হতে পারে।
লক্ষণসমূহ : শুষ্কতা ও ফাটা প্রাথমিক অবস্থায় দেখা দিবে। অত্যন্ত ব্যথাযুক্ত ফাটা থাকবে বিশেষ করে সন্ধিস্থলের ভাঁজে এবং আঙ্গুলের ডগার চারপাশে। হাতের উল্টোপিঠে লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে এবং ব্যথা থাকতে পারে। হাতের তালুর বিশেষ করে আঙ্গুলের লাল হয়ে যাওয়া এবং শুষ্ক ও ফেটে যাওয়া। লাল, মসৃণ উজ্জ্বল সমতল হাতের তালুর সামান্য ঘষাতেই ফেটে যেতে পারে।
যে সকল ব্যক্তির হাতের একজিমা বেশী হতে পারে তাদের মধ্যে রয়েছে ছোট বাচ্চাদের মাদের, জামাকাপড়ের পরিবর্তনের জন্য যাদের চাকরি ক্ষেত্রে এমন যে বারেবারে হাত ভিজাতে ও শুকাতে হয় (যেমন শল্যবিশারদ, দন্ত চিকিৎসক, ডিস ওয়াসার, জেলে) কিন্তু কারখানায় কর্মরতাদের যাদের কেমিক্যাল নিয়ে কাজ করতে হয়।
চিকিৎসা : হাতের একজিমার চিকিৎসায় বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্নরকম তারতম্য দেখা যায়। যদি তাৎক্ষণিক পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় তাহলে আক্রান্ত স্থানে ছোট ছোট ফুসকুড়ি ফোসকা এবং অত্যন্ত লাল থাকবে সাথে থাকবে চুলকানি যে সকল ক্ষেত্রে ঠা-া পানির ভিজা কমপ্রেস দিতে হবে। সাথে খাওয়ার জন্যে স্টেরয়েড এবং স্টেরয়েড ইনজেকশন দিতে হতে পারে। এন্টিহিস্টামিন এন্টিবায়োটিক ও খেতে হবে।
রোগটি যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় সেখানে দেখা যাবে আক্রান্ত ত্বক সাদা হয়ে গেছে এবং ত্বক ফেটে গেছে বা ত্বকের রেখাগুলো প্রকট হয়ে ফুটে উঠেছে সেই সকল ক্ষেত্রে স্থায়ীভাবে স্টেরয়েড মলম ব্যবহার করতে হবে এ সকল ক্ষেত্রে ভাল ফল পেতে হলে তাতে মলম লাগিয়ে পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখতে হবে। ক্ষেত্র বিশেষ স্থানীয় একজিমায় ইনজেকশন পুস করা হতে পারে। অন্যদিকে খাওয়ার জন্য এন্টিবায়োটিক ও এন্টিহিস্টামিন টেবলেট খেতে হবে।
রোগের প্রতিকারের জন্য হাতের একজিমা (যাদের উদ্দীপক পর্যায় ব্যবহারের কারণে হয়ে থাকে)।
রোগীর জন্য কিছু পরামর্শ :
(১) যদ্দুর সম্ভব কম হাত ধোবেন। উত্তম হয় সাবান বর্জন করতে পারলে এবং হাত সাধারণভাবে কুসুম কুসুম গরম পানি দিয়ে ধোবেন।
(২) মাথায় শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হলে হাতে গ্লাভস ব্যবহার করবেন অথবা অন্য কাউকে দিয়ে শ্যাম্পু মাখাবেন।
(৩) গৃহস্থালী পরিষ্কার ও ডিটারজেন্ট সরাসরি হাতে ধরবেন না। সুতী, প্লাস্টিক অথবা রাবার গ্লাভস পরে গৃহস্থালী কাজ করবেন।
(৩) গৃহস্থালী পরিষ্কার ও ডিটারজেন্ট সরাসরি হাতে ধরবেন না। সুতি, প্লাস্টিক অথবা রাবার গ্লাভস পরে গৃহস্থালী কাজ করবেন।
(৪) এমন কোন কিছু হাতে ধরবেন না যার ফলে জ্বালাপোড়া বা চুলকানী হতে পারে যেমন উল, বাচ্চাদের ভিজা ডায়াপর বা ন্যাপকিন, আলু ছোলার সময় এবং তাজা ফল, শাকসবজি এবং কাঁচা মাংস দোয়া কাটা ইত্যাদি করা নিষেধ।
(৫) যদি উত্তেজক বা উদ্দীপক পদার্থ হাতে দিয়ে ব্যবহার করতেই হয় তাহলে রাবার গ্লাভস হাতে ব্যবহার করার উচিত কিন্তু শুধু রাবার গ্লাভস ব্যবহারই যথেষ্ট নয়। কারণ রাবার গ্লাভসের ভিতরে হাতে জমা ঘাম, মরা কোষ জমে এরা আবার হাতে উদ্দীপক হিসেবে দেখা দিতে পারে এমনকি যে সকল পদার্থ বর্জন করতে হবে তার থেকেও বেশী উদ্দীপক হিসেবে দেখা দিতে পারে। এর জন্যে ভাল হয় রাবার গ্লাভসের নিচে সাদা সুতী গ্লাভস পড়তে পারলে। এই উদ্দেশ্যে কয়েক জোড়া সুতি গ্লাভস কিনে রাখা ভাল যাতে প্রয়োজনে বারে বারে বদলানো যায়।
ষ ডাক্তার এম ফেরদৌস
সহযোগী অধ্যাপক, কুমুদিনী
উইমেন্স ডেমিকেল কলেজ
নাজ-ই-নুর হাসপাতাল, ধানমন্ডি।
৮১২৩৭৫৮/০১৯২০৭৮৯৮২৪
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।