Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শারীরিক কারণে মুখের সমস্যা

| প্রকাশের সময় : ১১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সোরিয়াসিস রোগীদের ক্ষেত্রে জিওগ্রাফিক টাং বা মানচিত্র জিহ্বা বেশি দেখা যায়। যাদের ফিসারড্ টাং বা জিহ্বা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও জিওগ্রাফিক টাং দেখা যায়। এক কথায় বলতে গেলে যারা সোরিয়াসিস, ডায়াবেটিস, একজিমা, এনিমিয়া বা মানসিক চাপজনিত সমস্যায় আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে জিওগ্রাফিক টাং পরিলক্ষিত হতে পারে। তবে সব রোগীর ক্ষেত্রে তা হয় না। মৃগী রোগীর চিকিৎসার পাশর্^প্রতিক্রিয়া হিসাবে জিনজাইভাল হাইপারপ্লাসিয়া হতে পারে। মেগালোব্লাষ্টিক এনিমিয়া হতে পারে। বারবার অ্যাপথাস আলসার হয়ে রোগীর খাদ্যদ্রব্য গ্রহণে ব্যাঘাত সৃষ্টি হতে পারে। দাঁত দেরিতে উঠতে পারে। দাঁত আকৃতিতে ছোট হতে পারে। ফলিক এসিডের অভাবে শরীরে দুর্বলতা, ধূসর বর্ণের চুল, মুখের আলসার এবং জিহ্বায় ফোলাভাব দেখা যেতে পারে। মুখ ও জিহ্বার আলসার যদি ফলিক এসিডের অভাবজনিত কারণে হয় তবে সেক্ষেত্রে ফলিক এসিড প্রদান না করলে কোনোভাবেই মুখের আলসার ভালো হবে না। কোনো কোনো মিনারেলস্ এর অভাবে মুখে বারবার অ্যাপথাস আলসার হতে পারে। আবার বিশেষ কিছু ভিটামিন এর অভাবজনিত সমস্যায়ও বারবার মুখের আলসার বা ঘাঁ দেখা যেতে পারে। মানবদেহে লোহিত রক্ত কনিকা চার মাস বেঁচে থাকে। তাই পুনরায় লোহিত রক্ত কনিকা তৈরিতে শরীরে প্রয়োজন হয় আয়রন, ভিটামিন বি১২ এবং ফলিক এসিড বা ভিটামিন বি৯। এর কোনো অভাব হলে শরীরে রক্তস্বল্পতা দেখা দিবে এবং মুখে আলসার বা ঘাঁ দেখা দিতে পারে। আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগীদের চেয়ে ক্রনস ডিজিজের রোগীদের মুখের আলসার বেশি দেখা যায়। কারণ আলসারেটিভ কোলাইটিস কোলনে অর্থাৎ বৃহদন্ত্রে সীমাবদ্ধ থাকে। আর ক্রনস ডিজিজের ক্ষেত্রে পরিপাকতন্ত্রের মুখ, পাকস্থলি, অন্ত্র ও পায়ুপথসহ যেকোনো অংশ আক্রান্ত হতে পারে। শুধুমাত্র ভুল মাউথওয়াশ ব্যবহারের কারণেও বারবার মুখের আলসার হতে পারে। আপনার মাউথওয়াশ প্রয়োজন আছে কিনা বা প্রয়োজন থাকলে কোনটি আপনার জন্য প্রযোজ্য তা অবশ্যই জেনে নিতে হবে। হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মেয়েদের মাসিকের সময় মুখে আলসার ও জ্বালাপোড়া দেখা যেতে পারে। আবার মাসিক বন্ধ হয়ে গেলেও মোনোপজের সময় মুখে আলসার বা ক্ষত দেখা দিতে পারে। এ সময় কারো কারো মেজাজ খিটখিটে থাকে। মারাত্মক ধরনের ভিটামিন বি-এর অভাবে এট্রপিক গ্লসাইটিস হতে পারে। এট্রপিক গ্লসাইটিসের ক্ষেত্রে জিহ্বার টেষ্ট বাড এর ডিজেনারেশন হয়ে থাকে। ফলে জিহ্বার স্বাদ ঠিকভাবে পাওয়া যায় না। আমাদের দেশে হারপিস ভাইরাসের কারণে ঠোঁট আক্রান্ত হতে দেখা যায় যা হারপিস ল্যাবিয়ালিস নামে পরিচিত। বার বার হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসের কারণে ঠোঁটে ফুসকুড়ি হতে পারে এবং প্রদাহ দেখা দিতে পারে যা চিলাইটিস নামে পরিচিত। তবে সিফিলিসের কারণেও ঠোঁটে ঘাঁ বা আলসার দেখা দিতে পারে। প্রজনন অঙ্গের বাহিরে পুরুষদের উপরের ঠোঁটে এবং মহিলাদের নিচের ঠোঁটে সবচেয়ে বেশি সিফিলিসের লক্ষণ দেখা যায়। ফলিক এসিডের অভাব হলে ঠোঁট কাটা ও তালু কাটা শিশু জন্মগ্রহণ করতে পারে। গর্ভাবস্থায় কিছু ওষুধ সেবনের কারণে ঠোঁট কাটা ও তালু কাটায় প্রভাব ফেলতে পারে। সেগুলো হলো : (ক) মিথোট্রিক্সেট এমন একটি ওষুধ যা ব্যবহৃত হয় ক্যান্সার, আর্থাইটিস এবং সোরিয়াসিস রোগের চিকিৎসায়। (খ) আইসোট্রিটিনোনিন একটি ওষুধ যা একনির চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। (গ) এন্টি সিজার মেডিসিন। তাই আপনার মুখের আলসারসহ মুখের নানাবিধ রোগের চিকিৎসার পূর্বে অবশ্যই একবার হলেও দেখে নিতে হবে আপনার শরীরে অন্য কোনো রোগ আছে কিনা?
ষ ডাঃ মোঃ ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
মোবাইল : ০১৮১৭-৫২১৮৯৭
ই-মেইল : ফৎ.ভধৎঁয়ঁ@মসধরষ.পড়স



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন