নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
নিউজিল্যান্ড : ১৯৫/৭ (২০.০ ওভারে)
বাংলাদেশ : ১৪৮/১০ (১৮.১ ওভারে)
ফল : বাংলাদেশ ৪৭ রানে পরাজিত।
শামীম চৌধুরী : ব্যাটিং পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে নিউজিল্যান্ডের স্কোর যেখানে ৪৯/৩, সেখানে বাংলাদেশের ৪৮/৩! দু’দলকেই দলগত হাফ সেঞ্চুরি পূরণে খেলতে হয়েছে ৩৮টি বল! হাড্ডাহড্ডি এই লড়াইয়ে ১০ম ওভার শেষে কিছুটা এগিয়ে পর্যন্ত গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। যেখানে নিউজিল্যান্ডের স্কোর ৮৭/৩, সেখানে বাংলাদেশের ৯৩/৩! অথচ, নিউজিল্যান্ড যেখানে শেষ ১০ ওভারে স্কোরশিটে যোগ করেছে ১০৮, সেখানে ৬০ বলে ১০৩ রান দূর আকাশের চাঁদ মনে করেছে বাংলাদেশ দল! সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ স্বাগতিকরা জিতেছে ১২ বল হাতে রেখে, টি-২০ সিরিজের ট্রফি নির্ধারনী ম্যাচে সেখানে ১১ বল হাতে অবশিষ্ট থেকেই শেষ বাংলাদেশÑ হেরে গেছে ৪৭ রানে। টি-২০তে সর্বোচ্চ ১৬৬’র বেশি চেজ করে জয়ের রেকর্ড নেই বাংলাদেশের। সেই অতীতকেও যে মনে করাতে হয়েছে গতকাল।
নেলসনে ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের দুঃসহ চিত্রটাই যেনো ফিরে এসেছে গতকাল মাউন্ট মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে টি-২০ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে। নেলসনে এক সপ্তাহ আগে নিউজিল্যান্ডকে ২৪১ এ থামিয়ে ইমরুল-সাব্বিরের ৮৫ রানের পার্টনারশিপে জয়ের স্বপ্ন দেখানো বাংলাদেশ স্তম্ভিত হয়েছে রান আউটে কাঁটা পড়া ওই পার্টনারশিপ থেমে যাওয়ায়। গতকাল মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে সেখানে সাব্বির-সৌম্য’র ৪০ বলে ৬৮ রানের পার্টনারশিপে স্বপ্ন দেখা বাংলাদেশ রনে ভঙ্গ দিয়েছে ওই পার্টনারশিপের বিদায়ে! শেষ ৭ উইকেটের পতন ঘটেছে মাত্র ৪৪ রানে!
নিউজিল্যান্ড সফরে ০,১’র পর ৩৯ এ ছন্দ ফিরে পেয়েছেন সৌম্য সরকার। সৌম্য’র সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় চলেছে বড় শটের পাল্লাও। ৭ম ওভারে কিউই লেগ স্পিনার ইস সোধি এবং ৯ম ওভারে পেসার গ্র্যান্ডহোমকে পাল্লা দিয়ে ২ জনে মেরেছেন ছক্কা! ইস সোধিকে লং অনের উপর দিয়ে সৌম্য’র ছক্কাটির দূরত্ব ছিল ৯৩ মিটার, গ্র্যান্ডহোমকে সাব্বিরের একই পজিশনে বেছে নেয়া ছক্কাটির দূরত্ব সেখানে ৯৯ মিটার! স্বপ্ন দেখানো এই পার্টনারশিপ বিচ্ছিন্ন হয়েছে সৌম্য’র উচ্চাভিলাসী শটে। বোল্টকে এক ওভারে ২টি বাউন্ডারিতে রিদম পেয়ে লোভ সম্বরন করতে পারেননিÑ শর্ট বলে হুক করতে যেয়ে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে এসেছেন (৩০ বলে ৩ চার ২ ছক্কায় ৩৯)। যে সোধিকে খরুচে এক ওভারে ১৬ রানে দিয়েছেন নেতৃত্ব, সেই সোধির পরের স্পেলে লং অফে দিয়ে এসেছেন সাব্বির রহমান রুম্মান ক্যাচ ( ৩২ বলে ৩ চার ৩ ছক্কায় ৪৮)! ওখানেই শেষ সব আশা-ভরসা।
রানিং বিট্যুইন দ্য উইকেটে সাব্বিরের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে ইমরুল কায়েসের রান আউটের যন্ত্রণা ভোলার আগেই সাব্বির-তামীমের ভুল বোঝাবুঝি, হাফ পিচ পেরিয়ে নিজের প্রান্তে ফিরে আসতে চেয়ে তামীমের রান আউট (৭ বলে ১৩) দিয়ে স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনা শুরু। নিউজিল্যান্ড সফরে প্রতিটি ম্যাচে আত্মহুতি দেয়ার প্রবণতায় সাকিবের প্রোফাইলে যোগ হলো আরো একটি ইনিংস। হুইলারকে কভার পয়েন্টে ক্যাচ প্র্যাকটিস করে ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন টি-২০’র বিশ্বসেরা এই অল রাউন্ডার (১ রান)। দলে স্পিনার ভর্তি, অথচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের কাঁপিয়ে দিয়েছে নিউজিল্যান্ডের স্পিন ত্রয়ী (উইলিয়ামসন ২/১৬, সোধি ৩/৩৬, স্যান্টনার ১/১৪)।
টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্তকে যথার্থ প্রমাণ করতে ইনিংসের প্রথম ডেলিভারীতে রনকিকে কাভার পয়েন্টে ক্যাচ দিতে মাশরাফি বাধ্য করে পাওয়ার প্লে পর্বে ভালই ঝাঁকুনি দিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আগের ম্যাচের ম্যাচ উইনার উইলিয়ামসনকে সাকিব লং অনে দিয়েছেন ফিরিয়ে, ৬ষ্ঠ ওভারে মোসাদ্দেক উড়িয়ে দিয়েছেন কোরে এন্ডারসনের মিডল স্ট্যাম্প! সেখান থেকে মুনরো-ব্রুসের ৬৭ বলে ১২৩ রানের পার্টনারশিপই নিউজিল্যান্ডের স্কোর টেনে নিয়ে গেছে ১৯৫/৭ পর্যন্ত। ক্যারিয়ারের ৩০তম টি-২০তে এসে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন মুনরোÑ মাত্র ৫২ বলে ৭ চার ৭ ছক্কায় তার সেঞ্চুরি উদযাপন এবং নিউজিল্যান্ডকে বড় স্কোরে অবদান রেখেছেন সাকিব, মাহামুদুল্লাহ পর পর ২ ওভারে। ১৩তম ওভারে সাকিবকে কভারের উপর দিয়ে ছক্কা এবং লং অনের উপর দিয়ে বাউন্ডারিতে ১৫ রান আদায়ে দিয়েছেন নেতৃত্ব মুনরো। প্রথম ওভারে মিতব্যয়ী বোলিংয়ের (৪ রান) সুনাম ক্ষুণœ করেছেন মাহামুদুল্লাহ পরের ওভারেÑ মুনরোর পাল্লায় পড়ে ৩ ছক্কা, ২ চার একটি ডাবলসে ওই ওভারে মাহামুদুল্লাহ’র খরচা ২৮! ১২ এবং ১৩ ওভারে ৪৩ রান খরচাই ম্যাচে করে দিয়েছে ব্যবধান। ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারলন স্যামুয়েলসের পাল্লায় পড়ে এক ওভারে রুবেলের ২৯ রান খরচা ছিল টি-২০তে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে খরুচে বোলিং। রুবেলের সেই গ্লানি মনে করিয়ে দেয়া মাহামুদুল্লাহ’র দিনটিতে অবশ্য এই রুবেলই বোলিংয়ে রেখেছেন আস্থার স্বাক্ষর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে টেস্টে সেরা বোলিংটা এই পেস বোলারের নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে (৫/১৬৬), ওয়ানডেতেও ক্যারিয়ার সেরা ৬/২৬ বোলিং এই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই। অবশিষ্ট ছিল টি-২০, সেখানেও গতকাল দ্বিতীয় এবং ৩য় স্পেল দু’টির বোলিংয়ে (১-০-৮-২ ও ১-০-৫-১) সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেছেন গতকাল রুবেল (৩/৩৭)। যার মধ্যে সুইং ডেলিভারীতে উইকেটের পেছনে মুনরোকে (৫৪ বলে ১০১) ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন। তার শেষ ২টি স্পেলের কারণেই ২শ’ পেরুতে পারেনি নিউজিল্যান্ড।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।