২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
গাউট এক ধরনের তীব্র যন্ত্রণাদায়ক বাতরোগ। মধ্য বয়সের (৪০-৫০ বছর) পুরুষ, মেনোপোজ পরবর্তী মহিলা, অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ইতিহাস আছে এমন রোগীদের গাউট হতে পারে।
গাউট হওয়ার প্রধান কারণ দেহে ইউরিক এসিডের আধিক্য। অতিরিক্ত উৎপাদন কিংবা বাধাগ্রস্ত নিষ্কাশনে এই পরিস্থিতি হতে পারে। অতিরিক্ত ইউরিক এসিড তৈরির কারণের মধ্যে রয়েছে অধিক বয়স, বংশগত অণুঘটক কিংবা হরমোনের ত্রুটি, লোহিত কণিকার অস্বাভাবিক ভাঙন, অধিক ওজন, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, প্রচুর লাল মাংস গ্রহণ, রক্তে চর্বির পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, দীর্ঘদিনের প্রদাহজনিত রোগ, দীর্ঘদিন এসপিরিন, ডাইইউরেটিক ওষুধ গ্রহণ, মদ্যপান, অতিরিক্ত ব্যায়াম, হঠাৎ খাদ্যগ্রহণ কমে যাওয়া বা অনাহার ইত্যাদি। এই রোগের প্রধান উপসর্গ হচ্ছে পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে ব্যথাসহ শরীরের বিভিন্ন অস্থিসন্ধিতে ব্যথা। এই ব্যথা সামান্য থেকে প্রচ- আকার ধারণ করতে পারে। হঠাৎ তীব্র ব্যথায় ঘুম ভেঙে যাওয়া, হাঁটাচলা করতে না পারা প্রায়ই দেখা যায়। পায়ের বুড়ো আঙুলের গোড়া ফুলে লাল হতে পারে। হাড়, তরুণাস্থি ক্ষয় হয়ে অস্থিসন্ধি তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে।
সাধারণত রক্তে ইউরিক এসিডের আধিক্য গাউট নির্দেশ করে। এছাড়া রক্তের আরও কিছু পরীক্ষা এবং এক্স-রে দেখে রোগ নিশ্চিত করা হয়।
গাউট রোগের চিকিৎসায় প্রথমে আক্রান্ত সন্ধি বিশ্রামে রাখতে হয়। ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে এনএসএআইডি জাতীয় ওষুধ (যেমন এন্ডোমেথাসিন) গ্রহণ করতে হতে পারে। অস্থিসন্ধি ফুলে গেলে সিরিঞ্জ দিয়ে অভ্যন্তরীণ তরল টেনে বের করা হয় এবং স্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়া হয়। দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসায় অ্যালুপিউরিনল ওষুধটি প্রায়ই ব্যবহৃত হয়। তবে চিকিৎসায় বিশেষ খাদ্য গ্রহণ এবং বর্জনের ব্যাপারটি খুবই জরুরি।
রক্তে ইউরিক এসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিচের খাবারগুলো বর্জন করতে হবে।
* বিভিন্ন ধরনের ডাল, বিশেষ করে মসুর এবং মটর ডাল।
* শিমের বিচি, শিম, মটরশুঁটি, বরবটি জাতীয় সবজি।
* পুঁইশাক, পালংশাক, মাশরুম, ইষ্ট প্রভৃতি।
* গরু, খাসি, মহিষ, ভেড়ার মাংস। হাঁস, কবুতর, তিতির পাখির মাংস।
* মগজ, কলিজা, বৃক্ক, অগ্নাসয়, জিহ্বার অংশ।
* বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ ও মাছের ডিম।
* চিংড়ি, কাঁকড়া, ঝিনুক, শামুক প্রভৃতি।
গাউট হলে হাতে পায়ে ব্যথার ব্যপারে সতর্ক থাকতে হবে। আঁটসাঁট জুতা না পড়লেই ভাল। কিছু ক্ষেত্রে শল্যচিকিৎসাও লাগতে পারে।
ডাঃ জহিরুল হক ভুঁইয়া
অর্থোপেডিক্স বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।