Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঘন কুয়াশায় পদ্মায় ফেরি পারাপারে অচলাবস্থা

| প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : গত বেশ কয়েকদিন ধরে দেশের নদী অববাহিকায় রাতে ঘন কুয়াশায় নৌযান চলাচল মারাত্মক বিঘিœত হচ্ছে। ফলে প্রায় প্রতি রাতেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেশের প্রধান দুই ফেরি রুট দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও শিমুলিয়া-কাওরাকান্দি নৌ চলাচল। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন এই দুই রুটে চলাচলকারী যাত্রী ও যানবাহন চালকরা।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) উপজেলা সংবাদদাতা : রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য অঞ্চলের সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট। গুরুত্বপূর্ণ এ নৌরুটে গত কয়েক দিন ধরে অব্যাহত ঘন কুয়াশার কারণে নৌ পারাপারে কার্যত অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। গত রোববার টানা ১২ ঘণ্টা ফেরি সার্ভিস বন্ধ থাকার পর সোমবারও ফের সাড়ে ৮ ঘণ্টা ফেরি সার্ভিস বন্ধ ছিল। এসময় ঘন কুয়াশায় দিক হারিয়ে ৬টি ফেরি মাঝ নদীতে আটকা পড়ে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া অফিস সূত্র  জানায়, গত কয়েক দিনের ন্যায় সোমবার রাতেও নদী অববাহিকায় কুয়াশা পড়তে শুরু করে। রাত পৌনে ২টার দিকে কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে গিয়ে নৌরুটের মার্কিং পয়েন্ট অস্পষ্ট হয়ে গেলে দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি সার্ভিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এসময় উভয় ঘাট থেকে ছেড়ে গিয়ে দিক হারিয়ে মাঝ নদী রোরো ফেরি এনায়েতপুরী, কেরামত আলী, খানজাহান আলী, কে-টাইপ ফেরি কপোতী, ইউটিলিটি ফেরি চন্দ্রমল্লিকা, বনলতা। পরে বেলা সাড়ে ১০টার দিকে কুয়াশার ঘনত্ব কিছুটা কমে এলে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফেরি চলাচল শুরু হয়। এতে করে উভয় ঘাটে সহ¯্রাধিক যানবাহন আটকে পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। আটকে পড়া যানবাহনের মধ্যে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক গত ৩ দিনেও ফেরির নাগাল পায়নি।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, শীত মৌসুমের প্রথম দিকেই অব্যাহত ঘন কুয়াশায় গুরুত্বপূর্ণ এ নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যহত হচ্ছে। এতে যাত্রী ও পণ্য পারাপার মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ঘাট এলাকায় আটকা পড়ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে নদী পার হতে আসা শত শত বিভিন্ন যানবাহন। দীর্ঘ সময় আটকে থেকে দূরপাল্লার যাত্রীরা অবণনীয় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
বেনাপোল থেকে আসা ট্রাক চালক মো. রমিজ মিয়া, আ. জলিল শেখ, সাতক্ষীরা থেকে আসা আ. কুদ্দুস, রহিম শেখসহ অনেকেই বলেন, ‘তারা গত শনিবার দৌলতদিয়া ঘাটে এসে আটকে পড়েন। এরপর গত ৩ দিন ধরে কুয়াশায় ফেরি সার্ভিস ব্যাহত হওয়ায় পার হতে পারেন নি। জরুরী যানবাহনগুলো অগ্রাধিকার দিয়ে পার করায় তাদের মত অন্তত শতাধিক পাকা মালবাহী ট্রাক চালক মহাসড়কে আটকে আছেন। এদিকে পথ খরচের টাকাও শেষ হয়ে গেছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছি। জানি না কবে নদী পার হতে পারব।’
বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া অফিসের ব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ঘন কুয়াশায় নৌ চলাচল বন্ধ হওয়া একটি প্রাকৃতিক সমস্যা। এতে আমাদের কারো কোন হাত নেই। জন দুর্ভোগ কিছুটা কমাতে যাত্রী বোঝাই ও অন্যান্য জরুরি যানবাহনগুলো অগ্রাধিকার দিয়ে পার করা হচ্ছে। এতে পাকা মালবাহী ট্রাকগুলো আটকা পড়ছে।
কাওড়াকান্দি-শিমুলিয়া নৌ-রুটে ৯ ঘণ্টা পর নৌযান চলাচল শুরু
মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা : ঘন কুয়াশার কারণে কাওড়াকান্দি-শিমুলিয়া নৌরুটে ৯ ঘণ্টা ফেরিসহ সকল নৌযান চলাচল বন্ধ থাকার পর গতকাল সকাল ৯টার দিকে চলাচল শুরু হয়। রাতে মাঝ পদ্মায় ৯টি ফেরি নোঙ্গর করে রাখতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। এসময় প্রচ- শীতে নারী ও শিশু যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হন। ফেরি বন্ধ থাকায় উভয় ঘাটে শতাধিক দূরপাল্লার নৈশকোচসহ ৬ শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় আটকে পড়ে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসিসহ একাধিক সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যা থেকেই কাওরাকান্দি-শিমুলিয়া নৌরুটে কুয়াশার প্রকোপ বাড়তে শুরু করে।  রাত ১২টার দিকে তীব্র আকার ধারণ করায় সিগন্যাল বাতি, মার্কিং পয়েন্ট অস্পষ্ট হয়ে উঠলে দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এসময় দেড় শতাধিক যানবাহন নিয়ে  মাঝ পদ্মায় ৯টি ফেরি আটকে পড়ে। প্রচ- শীতে যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হন। নারী ও শিশু যাত্রীরা পড়েন চরম বিপাকে। নৌরুটের সকল ফেরি উভয় ঘাটে নোঙ্গর করে রাখা হয়। সোমবার সকাল ৯টার দিকে কুয়াশার প্রকোপ কিছুটা কমলে ফেরি চলাচল শুরু হয়। দীর্ঘ সময় ফেরি বন্ধ থাকায় উভয় ঘাটে দূরপাল্লার শতাধিক নৈশকোচসহ  ৬ শতাধিক যানবাহন আটকে পড়ে দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হয়েছে। ঘাট এলাকায় আটকে পড়ে যাত্রীরা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফেরি

২৮ আগস্ট, ২০২২
৩ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ