Inqilab Logo

রোববার, ২৩ জুন ২০২৪, ০৯ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সীমিত ফেরি চলাচলে দুর্ভোগ

শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি নৌরুট দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের ভোগান্তি

মো. শওকত হোসেন, লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৭ এএম

শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও মাঝিরকান্দি নৌ-রুটে সীমিত ফেরি চলাচলে দীর্ঘ যানজট, দুর্ভোগে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। পদ্মা সেতুর পিলারে একাধিক ধাক্কা লাগার পর মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া এবং মাদারীপুরের বাংলাবাজার নৌরুটে চলাচলের সময় ও ফেরির সংখ্যা কমানো হয়। বর্তমানে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মাত্র চারটি ফেরি যানবাহন পারাপার করছে।
এছাড়াও শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি রুটে ২টি ফেরি চলাচল করছে। সীমিত ফেরি চলাচলে এতে ঘাটে এসে যানবাহন দীর্ঘ সময় আটকে থাকছে। যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। কখনো কখনো সময় ফুরিয়ে যাওয়ায় ফেরিতে উঠতে না পেরে বিকল্প নৌপথ ব্যবহারে জ্বালানি খরচ বেড়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পরিবহন সংশ্লিষ্টদের।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) ফয়সাল আহম্মেদ ইনকিলাবকে বলেন, এর আগে এ রুটে ১৭টি ফেরি দিয়ে পারাপার করা হতো। এখন ২টি রুটে ৬টি ফেরি দিয়ে পারাপার করা হচ্ছে। ফেরি বাড়ানোর প্রশ্নের জবাবে বলেন, এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ থেকে এখনো কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। এত কম সময়ে অল্পসংখ্যক ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা কঠিন। প্রতিদিন মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার ও অ্যাম্বুলেন্স যে পরিমাণে ঘাটে আসে, তাতে শতাধিক যানবাহন ফেরিতে উঠতে ব্যর্থ হয়। যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা দুর্ভোগ পোহান। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে রাতে চলাচল শুরু ও ফেরির সংখ্য না বাড়ালে দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে যাত্রীরা জানান।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত বছর বর্ষা মৌসুমে পদ্মা সেতুর পিলারে একাধিকবার ফেরির ধাক্কা লাগে। এরপর দুর্ঘটনা এড়াতে গত বছর ১৮ আগস্ট থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। ৪৭ দিন পর গত ৫ অক্টোবর সীমিত আকারে ফেরি চলাচল শুরু হয়। তবে তীব্র স্রোতের কারণে ছয় দিন চলার পর আবারও ফেরি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর গত ৮ নভেম্বর থেকে পুনরায় ফেরি চালু হয়েছে। বেগম রোকেয়া, কুঞ্জলতা, কদম ও সুফিয়া কামাল নামের চারটি ফেরি শুধু হালকা যানবাহন পারাপার করছে। পূর্ব ঘোষণা থাকলেও দক্ষিণাঞ্চলগামী ২১ জেলায় যাতায়াতকারী অসংখ্য ছোট যানবাহন প্রতিদিন ঘাটে আসছে।
গতকাল রোববার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, মাদারীপুর, খুলনা, বরিশাল, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জসহ দক্ষিণাঞ্চলগামী প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, পিকআপ ও অ্যাম্বুলেন্স এসে ঘাটে অপেক্ষা করছে। চালকরা জানান, তাদের অনেকেই রাত ২টা থেকে দুপুর পর্যন্ত লাইনে থেকেও ফেরিতে ওঠার সুযোগ পাচ্ছেন না। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন।
যাত্রীদের অভিযোগ, ‘ভিআইপি’ টোকেনেও অনেক যান পার করা হচ্ছে। এতে লাইনের পেছনে থেকেও অনেক যানবাহন আগে ফেরি পার হচ্ছে। ডেমরা থেকে আসা পিকআপচালক শাহআলম বলেন, ভোর ৬টায় ঘাটে এসেছি, এখন ১২টা বাজে। ফেরি থেকে বহুদূূরে রয়েছি। অথচ ভিআইপিদের গাড়ি লাইনের পেছন থেকে আগে চলে যাচ্ছে। কাঁচামাল ব্যবসায়ী লাভলু ও সরিফ মিয়া বলেন, ফেরিতে বড় গাড়ি পারাপার বন্ধ থাকায় ছোট পিকআপ দিয়ে মালামাল নিতে হচ্ছে। এতে গাড়ি ভাড়া দ্বিগুণ গুনতে হচ্ছে। ব্যবসার লাভের তিন ভাগ টাকা সবটুকুই ছোট গাড়ি দিয়ে পরিবহন করার কারণে খরচ হয়ে যাচ্ছে। উত্তরা থেকে আসা প্রাইভেট কারের চালক আলম বেপারী বলেন, গাড়িতে পরিবার ও ছোট ছোট দুই সন্তান রয়েছে। সন্তানের মা অসুস্থ। লাইনে থাকতে থাকতে ও আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। অনেকে ভিআইপি ধরে পার হচ্ছেন। কিন্তু আমরা অসহায়ের মতো বসে আছি। যাত্রীদের ভোগান্তি দূর করতে সময় ও ফেরি বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সীমিত ফেরি চলাচলে দুর্ভোগ

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ