পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বৈশ্বিক খাদ্য সংকট মোকাবিলায় দেশের জনগণকে প্রতি ইঞ্চি জমিতে আবাদ করার আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জনগণকে পতিত জায়গায় আবাদ করার আহ্বান জানিয়ে ক্ষান্ত হননি নিজেও তার সরকারি বাসভবন গণভবনের অব্যবহৃত প্রতি ইঞ্চি জমিকে কাজে লাগিয়েছেন। গ্রামের গেরস্ত বাড়ির মতো পুরো গণভবনকে প্রায় একটি খামার বাড়িতে পরিণত করে সৃষ্টি করেছেন বিরল দৃষ্টান্ত।
গণভবনের বিশাল আঙিনায় হাঁস-মুরগি, কবুতর, গরু পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ধান, শাক-সবজি, ফুল-ফল, মধু ও মাছ চাষ করছেন এ দেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে বেড়ে ওঠা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তিল-সরিষার মতো পেঁয়াজও চাষ করেছেন তিনি।
গতকাল গণভবনের জমিতে চাষ করা অর্ধেক জমির পেয়াঁজ তোলা হয়েছে। এতে মোট ৪৬ মণ পেয়াঁজ পাওয়া গেছে। বাকি জমিতে আরও ৫০ মণের মতো পেয়াঁজ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল গণভবনের সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গণভবনের বিশাল আঙ্গিনায় হাঁস-মুরগি, কবুতর, গরু পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ধান, শাক-সবজি, মসলা জাতীয় ফসল, ফুল-ফল, মধু ও মাছ চাষ করছেন এদেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে বেড়ে ওঠা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
দেশি পেঁয়াজের বর্তমান বাজার দর ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি। এতে গণভবনে চাষ করা ৪৬ মণ পেঁয়াজের দাম আসে আনুমানিক ৬৫ হাজার থেকে ৭৩ হাজার টাকা। ৫ জনের মধ্যবিত্ত একটি পরিবারে মাসে ৫ কেজি হিসেবে ধরলে গণভবনে উৎপাদিত প্রায় ১০০ মন পেঁয়াজে ৭-৮শ’ পরিবারের এক মাসের পেঁয়াজের চাহিদা পূরণ হবে।
করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, স্যাংশন-পাল্টাস্যাংশনে টালমাটাল বিশ্বে খাদ্য ও নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দেওয়ার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার প্রায় প্রতিটি বক্তব্যে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করছেন। তিনি সরকারি, বেসরকারি ও দলের সব অনুষ্ঠানে প্রতি ইঞ্চি জমিকে আবাদের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে আসছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈশ্বিক খাদ্য সংকট মোকাবিলায় দেশের জনগণকে প্রতি ইঞ্চি জমিতে ফসল ফলানোর আহ্বান জানিয়ে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি নিজে গণভবন আঙ্গিনার পতিত প্রতি ইঞ্চি জমিকে উৎপাদনের আওতায় এনেছেন এবং জনগণের প্রতি করা নিজের আহ্বানকে বাস্তবে রূপদান করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি আরও বলেন, এদেশের আলো-হাওয়ায় বেড়ে ওঠা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ জীবন-যাপনে অভ্যস্ত। দেশের মাটি, মানুষ ও কৃষির সঙ্গে মিশে আছে তার প্রাণ। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ফসলি উঠোনে নানা ধরনের ফসলের আবাদ তারই ছোট্ট একটা দৃষ্টান্ত।
ইহসানুল করিম জানান, প্রতি ইঞ্চি জমিতে আবাদ করার বিষয়টি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৪ সালের সবুজ বিপ্লবের ডাক থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন আঙিনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাঁশফুল, পোলাও চাল, লাল চালসহ বিভিন্ন জাতের ধান, ফুলকপি, পাতাকপি, লালশাক, পালংশাক, ধনেপাতা, গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় বতুয়া শাক, ব্রোকলি, টমেটো, লাউ, সিমসহ প্রায় সব ধরনের শীতকালীন শাক-সবজি চাষ করছেন।
এছাড়া গণভবনে তিল, সরিষা, সরিষা ক্ষেতে মৌচাক পালনের মাধ্যমে মধু আহরণ, হলুদ, মরিচ, পেঁয়াজ, তেজপাতাসহ বিভিন্ন ধরনের মশলা, আম, কাঁঠাল, কলা, লিচু, বরই, ড্রাগন, স্ট্রবেরিসহ বিভিন্ন ধরনের ফল, গোলাপ, সূর্যমুখী, গাঁদা, কৃষ্ণচূড়াসহ বিভিন্ন ধরনের ফুলেরও চাষ করছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি অবসর পেলেই এসব তদারকিও করেন বলে গণভবন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এসব ফসল ফলাতে ব্যবহার করা হয় গণভবনে গরুর খামারের গোবর থেকে উৎপাদিত জৈব সার।
এছাড়া গণভবনের আঙিনায় আলাদা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গরুর খামার, দেশি হাস-মুরগি, তিথির, চীনা হাঁস, রাজহাঁস, কবুতরের খামার করেছেন। তিনি গণভবন পুকুরে চাষ করছেন রুই, কাতল, তেলাপিয়া, চিতলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এমনকি গণভবনের পুকুরে মুক্তার চাষও করছেন শেখ হাসিনা। অবসর সময়ে গণভবনের লেকে মাছও ধরেন তিনি।
গণভবন সূত্র জানায়, উৎপাদিত এসব নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের জন্য সামান্য রেখে গণভবন কর্মচারী এবং দরিদ্র-অসহায় মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।