২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
ক্যানসার আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হওয়ার পর অথবা যে কোনো ধরনের অস্ত্রোপচারের পর রোগীদের মধ্যে নানাবিধ শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তণ দেখা যায়। এসব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অবশ্যই শারীরিক ও মানসিক যতেœর একান্ত প্রয়োজন। বিশেষ করে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাভ্যাসের পরিবর্তন করাটা খুবই জরুরি। এ সময় বারবার ক্ষুধা লাগে কিন্তু পাশাপাশি খাবারেও মারাত্মক রকম অরুচি থাকায় তেমন কিছুই খেতে পারে না।
সেক্ষেত্রে যেসব খাবার এ ধরনের রোগীরা খেতে পারবে এবং খেতে পারবেন না সে বিষয় নিয়েই আলোচনা করছি।
যেসব খাবার এ ধরনের রোগীরা খাবেন না :
১. ফ্রিজে রাখা খাবার এমন রোগীদের খাওয়া যাবে না।
২. চিনিজাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। এমনকি যে সব খাবারে চিনির পরিমাণ বেশি কেক-পেস্ট্রি, কোল্ড ড্রিংকস সেগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো।
৩. প্রিজারভেটিভ দেয়া খাবার খাওয়া যাবে না। যেমন : আচার, চাটনি, নোনা মাছ, জেলি, পাউরুটি, অধিক চিনি ও অধিক লবণ মিশ্রিত খাদ্য।
৪. জাংক ফুড বা অতিরিক্ত ভাজাভুজি জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে ট্রান্স ফ্যাট থাকে। এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। শরীরের সরাসরি ক্ষতি করতে পারে এই ধরনের খাবার। যেমন: সিঙ্গাড়া, সমুচা ও অতিরিক্ত মসলাজাতীয় খাবার ক্ষতিকর।
৫. কিছু কিছু দুগ্ধজাত দ্রব্য খেলে রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমে যায়। এর মধ্যে রয়েছে মাখন, চিজের মতো বেশ কিছু খাবার। এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
৬. যে কোনো ধরনের রেড মিড বা অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাংস শরীরের জন্য মারাত্মক খারাপ। তাই এই জাতীয় মাংস একেবারে বাদ দিতে হবে খাদ্যতালিকা থেকে।
৭. সব ধরনের অ্যালকোহল বা মদই রোগ প্রতিরোধ শক্তি অনেকটা কমিয়ে দেয়। তাই এই অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে।
৮. বারবিকিউ জাতীয় খাবার, অর্থাৎ যেসব খাবার সরাসরি আগুনে পুড়িয়ে তৈরি করা হয় যেসব খাবার খাবেন না।
এ ধরনের রোগীরা যে খাবারগুলো খেতে পারবেন :
১. জাউ ভাত বা নরম ভাতের সঙ্গে তেল-মসলা কম দিয়ে তৈরি তরকারী খেতে হবে।
২. এ সময় দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় প্রোটিন ও আয়রন রাখাটা অপরিহার্য। তাই মুরগির মাংস, সামুদ্রিক মাছ, বিভিন্ন রকম ডাল, বিচি জাতীয় খাদ্য, ডিম, বাদামের মত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার প্রয়োজন।
৩. বিভিন্ন রকম উদ্ভিজ্জ্ব তেল যেমন : অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, সূর্যমুখী তেল এসব খেলেও দ্রæত ত্বকের সৌন্দর্য ও রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
৪. স্ট্রবেরি, বøু বেরি জাতীয় ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। শরীরের ক্ষত নিরাময় করতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট অপরিহার্য। প্রতি দিনের খাদ্য তালিকায় অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ খাবার রাখা জরুরি।
৫. এ সময় শরীরে ভিটামিনস, মিনারেলস, আয়রন এর অভাব দেখা যায়। তাই সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে।
৬. হিমোগেøাবিন-এর অভাব দেখা দেয়ায় বিট রুটের শরবত বা হালকা ভাপানো সালাদ দেয়া যেতে পারে। আনার বা ডালিম ও খেতে পারে।
৭. ফাইবার জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে হবে । যেমন: কচুশাক, লালশাক, ডাঁটাশাক ইত্যাদি।
৮. প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট জাতীয় টক ফল রাখা লাগবে। যেমন : লেবু, জাম্বুরা, আমরা, আমলকি, আনারস ইত্যাদি মৌসুমী সহজলভ্য ফল।
৯. ভিটামিন এ, ই খাবার বেশি করে খেতে হবে। যেমন: লাল, কমলা ফল ও সবজি এবং পালং শাক, লেটুস পাতা, ধনে পাতা, বিভিন্ন ধরণের বাদাম জাতীয় খাবার।
১০. প্রতিদিন কয়েক কোয়া রসুন খাওয়া যেতে পারে। কেননা রসুন একপ্রকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি শরীরের বিভিন্ন টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে।
১১. যে কোনো বড় অসুখ থেকে সুস্থতা পেলে বেশি করে পানি পান করা প্রয়োজন।
১২. এ ধরনের রোগীকে তরল জাতীয় খাবার যেমন: টমেটো, ব্রোকলি, গাজর, ফুলকপি, মটরশুঁটি দিয়ে স্যুপ তৈরি করে খাওয়া যেতে পারে। কেননা তাদের মধ্যে ডিহাইড্রেশন ও নিদ্রাহীনতা থাকায় তরল পুষ্টিকর খাবারগুলো খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া গ্রিন টি খেতে পারবে।
১৩. দুধের বদলে সয়া দুধ খাওয়া যায়। এটি প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ শক্তিও বাড়িয়ে দেয়।
স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কর্মকর্তা - মানবিক সাহায্য সংস্থা
এবং সিনিয়র পুষ্টিবিদ (এক্স) -কিংসটন হাসপাতাল
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।