Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইতিবাচক নতুন মুদ্রানীতি

| প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থ বছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। এর নাম দেয়া হয়েছে, ‘সর্তক ও সংকুলানমুখী মুদ্রানীতি’। নতুন এই মুদ্রানীতিতে আমানতের সর্বনি¤œ সুদহার তুলে দেয়া হয়েছে। ভোক্তাঋণের সুদহার ৩ শতাংশ বাড়িয়ে ১২ শতাংশ করা হয়েছে। শিল্পঋণসহ অন্যান্য ঋণের বেঁধে দেয়া সুদহার বহাল রাখা হয়েছে। তবে এসব ঋণের সুদহার তুলে দেয়ার বিষয়ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনায় আছে। অনিয়ম-দুর্নীতি, মূল্যস্ফীতিসহ নানা কারণে ব্যাংকে আমানতপ্রবৃদ্ধি এখন সর্বনি¤œ পর্যায়ে এসে উপনীত হয়েছে। ঋণ দেয়ার মতো পর্যাপ্ত তহবিল ব্যাংকের কাছে নেই। ঋণযোগ্য অর্থের পরিমাণ এখন ৬ হাজার ৫৯১ কোটি টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর কাছে আছে ৬৪৬ কোটি টাকা। এহেন পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাজারে টাকার যোগান বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়া ছাড়া উপায় নেই। বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়ানো এবং উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি খুবই জরুরি। ২০২১ সালে আমানতের সুদহার বেঁধে দেয়া হয়। এর ফল ইতিবাচক হয়নি। সুদহার কম হওয়ায় আমানতকারীরা নিরুৎসাহিত হয়েছে। দেখা গেছে, আমানতকারীরা যে সুদ পেয়েছে, মূল্যস্ফীতি তা খেয়ে ফেলেছে। সন্তোষজনক লাভ ছাড়া কে ব্যাংকে আমানত রাখবে? আমানতের সর্বনি¤œ সুদহার এবার তুলে দেয়ায় ব্যাংকগুলো তাদের সামর্থ্য ও প্রয়োজন অনুযায়ী নিজেরাই আমানতের সুদহার নির্ধারণ করতে পারবে। মানুষও আমানতে উৎসাহ বোধ করবে। এতে ব্যাংক-আমানত বাড়বে, যাতে বিভিন্ন খাতে ঋণ বাড়ানো সম্ভব হবে। ব্যাংকে যখন অর্থের টান, তখন ভোক্তাঋণ কমানোও জরুরি। সেক্ষেত্রে সুদহার বাড়ানো একটা উপায় হতে পারে। সেটাই করা হয়েছে। এতে নি¤œ ও মধ্যবিত্তরা কিছুটা চাপে পড়লেও ভিন্ন কিছু করার নেই। মনে রাখা দরকার, ভোক্তাঋণ খুব বেশি নয়। মোট ঋণের ১০ শতাংশ মাত্র। শিল্পঋণ বা অন্যান্য ঋণের সুদহার বাড়ানো হয়নি। কারণ, তাতে পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়বে। মূল্যস্তরে তা স্ফীতি বৃদ্ধি করবে।

অব্যাহত মূল্যস্ফীতি, ডলার ও টাকার সংকট অর্থনীতিকে যে অবস্থায় নিয়ে এসেছে, তা থেকে উদ্ধার পেতে হলে সর্তক ও সংকুলানমুখী মুদ্রানীতিই প্রয়োজন। তাই যেসব বিষয় এখানে গুরুত্ব দিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তার যথাযথ বাস্তবায়ন দরকার। অর্থনীতিবিদদের কেউ কেউ অবশ্য মনে করেন, বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে টাকার সংকট মোকাবিলা করতে চাইলে হিতে বিপরীত হবে। ডলার সংকট ও মূল্যস্ফীতি বাড়বে। আমদানি-উৎপাদন ব্যহত হবে। মানুষের জীবনযাপনের কষ্ট আরো বাড়বে। আশংকার এই দিকগুলো খেয়াল রেখে সামনে এগুতে হবে। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে, বিশেষত উৎপাদনশীল উদ্যোগে। এতে উৎপাদন বাড়বে ও কর্মসংস্থান হবে। এইসঙ্গে অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি হ্রাস করে শিল্পের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানিতে অধিক জোর দিতে হবে। সরকারি খাতে ঋণ কিছুটা কমিয়ে হলেও বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়নো উচিত বলে মনে করেন অনেকে। নতুন মুদ্রা নীতিতে রেপোর সুদহার দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৬ শতাংশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বলেছেন, কলমানি বাজার সুদহার ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। ফলে অনেক ব্যাংক রোপাতে ধার নিয়ে কলমানিতে খাটাচ্ছে। বলা বাহুল্য, বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোকে টাকা ধার দেয় তাদের নিজস্ব প্রয়োজনে, ব্যবসা করার জন্য নয়। এটা নৈতিকতার প্রশ্নও। অনৈতিক কাজকর্ম, দুর্নীতি ও অনিয়ম দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মজ্জাগত ব্যাপারে পর্যবসিত হয়েছে। ভুয়া কাগজপত্রে বেশুমার ঋণ প্রদান, আন্ডার ও ওভার ইনভেয়েসিংয়ে টাকা পাচারে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন রকম অপকর্মের সঙ্গে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো জড়িত। এসব কারণে অনেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান অস্তিত্বের গুরুতর সংকটে পতিত হয়েছে। দেশের অর্থনীতির নাজুক হালের পেছনে বৈশ্বিক পরিস্থিতি যেমন দায়ী, তেমনি ব্যাংকখাতের অব্যবস্থা, দুর্নীতি-দুষ্কৃতিও কম দায়ী নয়। অর্থ পাচার অতি সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। অর্থ পাচারের সঙ্গে ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, সরকারি কর্মকর্তা প্রভৃতিরা বিশেষভাবে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া দরকার। ডলার সংকটের একটা বড় কারণ এই পাচার।

এত কিছুর পরও আমাদের অর্থনীতি অনেক দেশের তুলনায় ভালো আছে। তার পেছনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান ও ভূমিকা অনস্বীকার্য। অর্থমন্ত্রী, অর্থসচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ও গবেষকদের অবদানও স্মরণযোগ্য। অর্থমন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ ও প্রতিষ্ঠান অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে কাজ করে যাচ্ছে। নতুন মুদ্রানীতিতেও তার প্রতিফলন লক্ষ্যণীয়। উল্লেখের অপেক্ষা রাখে না, আমাদের অর্থনীতির প্রধান দুই স্তম্ভ প্রবাসী আয় ও রফতানি আয়Ñ দুইই নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে আছে। এ দু’ক্ষেত্রে আয় বাড়লে এবং পুরো অর্থ বৈধ পথে দেশে এলে ডলার সংকট, টাকার সংকট কেটে যেতে দেরি হবে না। এদিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। বিশেষ গরজ ও তাকিদেই বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। দেশের সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে। তাদের কষ্ট লাঘবে এবং উন্নয়ন ধারা সচল রাখতে অর্থনীতিকে গতিশীল ও সক্ষম করে তুলতেই হবে। এই দায়িত্ব যাদের, তাদের আন্তরিকতা, নিষ্ঠা, সততা ও সক্রিয়তা কতটা প্রয়োজন, তা ব্যাখ্যার অপেক্ষা রাখে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->