Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেই কুখ্যাত এক এগারো কতিপয় চাঞ্চল্যকর তথ্য

মোবায়েদুর রহমান | প্রকাশের সময় : ১০ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

আজ ১০ জানুয়ারি, ২০২৩ সালের মঙ্গলবার। আগামীকাল বিএনপির নেতৃত্বাধীন ৩৪ দলের গণঅবস্থান। তাই বলে এই ৩৪ দল একসাথে মিলে এক জায়গায় গণঅবস্থান করবে না। বিএনপি এক জায়গায়, জামায়াত এক জায়গায়, গণতন্ত্র মঞ্চ এক জায়গায়Ñ এইভাবে যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত বিভিন্ন দল এবং জোট যার যার মতো আলাদা আলাদা স্থানে এই কর্মসূচি পালন করবে। বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করবে, সেটি বিগত অক্টোবর মাস থেকে পালিত বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। জামায়াতে ইসলামীকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হবে কিনা সেটি এই কলাম লেখার সময় পর্যন্ত জানা যায়নি। এর আগে জামায়াতের গণমিছিলে পুলিশ হামলা করেছিল এই কারণ দেখিয়ে যে, জামায়াত কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নয়। অবশ্য ৩৪টি দলের তিন চতুর্থাংশই নিবন্ধিত নয়।

যাই হোক, গণঅবস্থান কর্মসূচি পালনের জন্য বিএনপি ১১ জানুয়ারিকে বেছে নিল কেন? কারণ, এটি হলো সেই কুখ্যাত ১/১১। অর্থাৎ ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন-উ-আহমেদ সরাসরি সামরিক আইন জারি না করেও সেনা নিয়ন্ত্রিত জরুরি আইন জারি করেছিলেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে যদি কয়েকটি ভয়ঙ্কর কৃষ্ণদিবসের উল্লেখ করতে হয় তাহলে তার একটি হচ্ছে এই ১/১১। এই ১/১১ এর খলনায়ক ছিলেন জেনারেল মইন-উ- আহমেদ। আরেকটি দিবস হলো সেইদিন যেদিন সংবিধানের ৫৮ অনুচ্ছেদ অর্থাৎ সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী তথা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কাস্টিং ভোটে বাতিল করা হয়। এ সম্পর্কিত সুপ্রিম কোর্টের ফুল বেঞ্চের ৭ জন বিচারপতির মধ্যে ৩ জন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বহাল রাখার পক্ষে এবং ৩ জন বিপক্ষে ছিলেন। এমন অবস্থায় সপ্তম বিচারপতি অর্থাৎ প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক তত্ত্বাবধায়ক বাতিলের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের দ্বিতীয় কৃষ্ণদিবস অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক বাতিলের দিনটির খলনায়ক ছিলেন বিচারপতি খায়রুল হক। তাকে খলনায়ক বলছি একারণে যে, খায়রুল হক যে সংক্ষিপ্ত রায়টি প্রকাশ করেছিলেন সেখানে কেয়ারটেকার ব্যবস্থা বাতিল করা হলেও পর্যবেক্ষণে আরেকটি কথা বলা হয়েছিল, পরবর্তী দুইটি নির্বাচন কেয়ারটেকার ব্যবস্থার অধীনে হতে পারে।

তারপর চূড়ান্ত রায় প্রকাশ হওয়ার কথা। রায় লিখবেন খায়রুল হক। কিন্তু রায় লেখার আগেই তিনি অবসরে চলে যান। অবসরে বসেই রায় লেখেন। সংক্ষিপ্ত রায়ের ১৬ মাস পরে যে পূর্ণাঙ্গ রায় খায়রুল হক লেখেন সেখানে পরবর্তী দুইটি নির্বাচন কেয়ারটেকারের অধীনে হতে পারে, এই অংশটি বেমালুম চেপে যান। সুপ্রিম কোর্টের মতো দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় বিকৃত বা ট্যাম্পারিং করার নজির সম্ভবত পৃথিবীতে আর দুইটি নাই। আজ বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে যে ভয়াবহ সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে, সেটির মূলে রয়েছে কুখ্যাত ১/১১ এর জরুরি শাসন এবং খায়রুল হকের টুইস্টেড রায়। ১/১১-কে বিএনপি যেমন, তেমনি দেশের শিক্ষত-সচেতন বিবেকবান মানুষও গণতন্ত্র হত্যা দিবস মনে করে। বিএনপি এবং ৩৪ দল সেই নিহত গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবিত করার যে সংগ্রাম শুরু করেছে সেই সংগ্রামের একটি ধাপকে ১/১১ এর স্মরণে আগামীকাল ১১ জানুয়ারি গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে। আজ সারাদেশ যখন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে, তখন কুখ্যাত ১/১১ এর পটভূমি সম্পর্কে সঠিক চিত্র জানা প্রয়োজন।

॥দুই॥
১/১১ সম্পর্কে একাধিক পুস্তক এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাক্ষাৎকার বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু সবগুলি সাক্ষাৎকারকে নির্মোহভাবে প্রকাশ করা হয়নি। ‘প্রথমা প্রকাশনী’ থেকে ১/১১ এর ওপর যে পুস্তকটি প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে একটি বিশেষ মহলের পক্ষে এবং আরেকটি বিশেষ মহলের বিপক্ষে ঘটনাবলীকে চিত্রিত করা হয়েছে। জেনারেল মইন-উ-আহমেদ জরুরি অবস্থার পর আমেরিকার ফ্লোরিডাতে স্থায়ীভাবে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে তিনি এব্যাপারে একটি বই লিখেছেন। বইটির নাম, ‘শান্তির স্বপ্নে’। কিন্তু এখানে অনেক ঘটনার উল্লেখ থাকলেও মইন-উ-আহমেদ নিজের সাফাই বেশি গেয়েছেন। ভারতের মরহুম রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ‘কোয়ালিশন ইয়ার্স’ নামে একটি বই লিখেছেন। সেখানে তিনি নিজেই বলেছেন যে, মইন-উ-আহমেদের চাকরি রক্ষা করা তথা বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঐসময় ভারত কীভাবে হস্তক্ষেপ করেছিল। বিবিসি বাংলা সার্ভিসে কাদির কল্লোল এবং আকবর হোসেন একাধিক রিপোর্ট করেছেন। এই রিপোর্টগুলো মোটামুটি অবজেক্টিভ হলেও সেই সময়কার বঙ্গভবনের ভেতরের এবং বাইরের কতগুলো ঘটনার উল্লেখ করা হয়নি। হতে পারে, একটি রিপোর্টে সবগুলি পয়েন্ট কাভার করা সম্ভব নয়। তবে বাংলাদেশের গণমাধ্যম একটি সাক্ষাৎকার চেপে গেছে। সেটি হলো, সেই সে সময়কার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিনের প্রেস উপদেষ্টা (প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায়) মোখলেছুর রহমান চৌধুরীর সাক্ষাৎকার। তিনি লন্ডন এবং নিউইয়র্কে একাধিক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।

তার সবগুলো সাক্ষাৎকার স্থানাভাবে এখানে দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, সেখানে দেশ ও বিদেশের অনেকগুলো চাঞ্চল্যকর ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। আজ আমি তার একটি সাক্ষাৎকারের অংশ বিশেষ এখানে উল্লেখ করবো। এই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছে নিউইয়র্কের বিখ্যাত বাংলা সাপ্তাহিক ‘ঠিকানা’ পত্রিকা। বাংলাদেশে ঠিকানার ঐ সাক্ষাৎকারটি পুনর্মুদ্রিত করেছে ‘বাংলা নিউজ ২৪ ডট কম’। ১/১১ এবং তার প্রেক্ষাপট, অর্থাৎ ১৯৯৪ সাল থেকে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত যা কিছু ঘটেছে, তার সব কিছু সংশ্লিষ্ট সকলের জানা প্রয়োজন। কারণ, সেখান থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উৎপত্তি। কী ভয়ঙ্কর সহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়কের দাবি আদায় করা হয়েছে এবং এই আদায় করার প্রক্রিয়ায় বিদেশিরা কেমন প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন সেসম্পর্কে এখনকার আন্দোলকারীদের এবং কলামিস্টদের জানা দরকার। দেশে এই মুহূর্তে নির্বাচনকালীন সরকার ফিরে পাওয়া এবং এই সরকারের অপসারণের দাবিতে ৩৪ দল যে, আন্দোলন করছে সেটা দেখে মনে হয়, এই আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হবে। আমি তাই ঠিক করেছি, ১/১১ এর পটভূমি এবং ২০১১ সালের ১০ মে কেয়ারটেকার সরকার বাতিলÑ এই সময়ের ঘটানাবলী সংক্ষেপে হলেও ইনকিলাবের এই কলামে লিখবো। কারণ, ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত যে ফরম্যাটে কেয়ারটেকারের আন্দোলন হয়েছে এবং আজকে যে ফরম্যাটে আন্দোলন হচ্ছে, এগুলোর মধ্যে কিছু মিল এবং অমিল রয়েছে। আমি একাধিক কলামে এসম্পর্কে আলোকপাত করার ইচ্ছা রাখি। এখন আমরা মোখলেছুর রহমান চৌধুরীর ইন্টারভিউ নিয়ে লিখবো। আসলে আজ আমি তার ঐ সাক্ষাৎকারের অংশ বিশেষ উদ্ধৃত করবো। পরবর্তীতে সে সম্পর্কে সুযোগ হলে মন্তব্য করবো।

॥তিন॥
ঠিকানাকে মোখলেছুর রহমান চৌধুরী বলছেন, ১/১১ এর তিন দিন আগে লিখিতভাবে জানানো হয়েছিলো যে, বাংলাদেশে সামরিক শাসন আসছে। সেইদিন জরুরি অবস্থা নয়, সামরিক শাসন জারি হবার কথা ছিলো। তিনি বলছেন, প্ল্যান ছিল, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোকে গ্রেফতার করা হবে, মইনুল রোডের বাসভবন তছনছ করে ফেলা হবে। তার ভাষ্য মতে, আওয়ামী লীগকে ১/১১ এর নায়করা বলেছিলেন যে, তাদেরকে ক্ষমতায় আনা হবে। বিএনপির ক্ষমতার শেষ দিকে যে সংলাপ হয়েছিলো তাতে ৩১ দফা দাবি শেষ পর্যন্ত এক দফায় পরিণত হয়েছিলো। আর সেটি ছিলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসাবে বিচারপতি কে এম হাসানকে নিয়োগ না করা। সেই সমস্যার সমাধান হয়েছিলো।

বিচারপতি কে এম হাসান প্রধান উপদেষ্টার পদ গ্রহণে অস্বীকার করলে তৎকালীন সরকারের সামনে সংবিধান নির্ধারিত ৬টি অপশন ছিলো। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের এ ৬টি অপশনের মধ্যে প্রথমটি ছিলেন বিচারপতি কে এম হাসান। তার অপারগতা প্রকাশের পর দ্বিতীয় অপশনে ছিলেন তার আগের প্রধান বিচারপতি বিচারপতি মাঈনুল রেজা চৌধুরী। ইত্যবসরে তার ইন্তেকালের কারণে দ্বিতীয় অপশনটিও শেষ বা এগজসটেড হয়ে যায়। তৃতীয় অপশনে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সর্বশেষ বিচারপতি এম এ আজিজ। তিনি তখন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট সেদিন তাকে সিইসি হিসাবে মেনে নিতে আপত্তি তুলেছিল এবং তিনি সিইসি হিসাবে অফিস অব প্রফিট হোল্ড করছিলেন, যেটি প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের ক্ষেত্রে অযোগ্যতার মধ্যে পড়ে। সেই কারণে তৃতীয় অপশনও শেষ হয়ে যায় এবং চতুর্থ অপশনে এর আগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি হামিদুল হকের নাম বিবেচনায় নিতে হয়। ইতিমধ্যে বিএনপি ক্ষমতা থেকে যাবার আগে বিচারপতি হামিদুল হককে বিচার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ করে। সেই হিসাবে তিনিও অফিস অব প্রফিট হোল্ড করছিলেন এবং তার ব্যাপারেও আপত্তি এসেছিল। বিচারপতি হামিদ তখন লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন যে, কোনো পক্ষ আপত্তি করলে তিনি প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেবেন না। এইভাবে চতুর্থ অপশন শেষ হয়ে যাবার পর সংবিধান নির্ধারিত পঞ্চম অপশনে যাওয়া হয়। এই অপশনে ছিলো বিদায়ী সংসদের প্রতিনিধিত্বশীল প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ। সেই সূত্র ধরে প্রধান ৪টি রাজনৈতিক দলের (বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামী) সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে প্রেসিডেন্টের সংলাপের আয়োজন করা হয়। সেই সংলাপে ৪টি দল একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির পক্ষে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি।

এরপর প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিনের সাবেক উপদেষ্টা বলছেন, বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় পার্টি প্রেসিডেন্টকে সংবিধান নির্ধারিত পন্থায় পঞ্চম অপশন শেষ হয়ে যাবার প্রেক্ষিতে ৬ষ্ঠ ও সর্বশেষ অপশন অনুযায়ী দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসাবে প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের প্রস্তাব করে। ২৯ অক্টোবর ২০০৬ সালে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সংলাপটি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগের দিন বিকেলে বিচারপতি কে এম হাসানের অপারগতা প্রকাশ করার পর সরকার বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সেক্রেটারীদ্বয়ের সঙ্গে সংলাপ করে। তখন তারা দুই জনই প্রেসিডেন্টকে বলেছিলেন সংকটের সমাধানতো হয়েই গেল। তারপরেও আমরা পঞ্চম অপশনে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে বিচারপতি মাহমুদুল আমিন চৌধুরীর নাম বিবেচনায় নিই। বিএনপির এক গ্রুপ তার পক্ষে। আর অপর গ্রুপের বিরোধিতার কারণে আসে আপত্তি। জনাব চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনিও তখন বলেছিলেন সব পক্ষ একমত না হলে তিনি বিতর্কিত দায়িত্ব নেবেন না।

প্রেসিডেন্টের প্রাক্তন প্রেস উপদেষ্টার ভাষ্য মতে, শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে বলেছিলেন, আমরা নির্বাচনে আসতে চাই, আওয়ামী লীগ একটি নির্বাচনমুখী দল। যদিও কে এম হাসান ইস্যুর সমাধান হয়েছে তথাপি আপনি রাষ্ট্রপতি হিসাবে একটু ভূমিকা নিয়ে যদি সিইসি বিচারপতি আজিজকে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে সরানো সম্ভব না হয় নির্বাচন পর্যন্ত তাকে ছুটি দিয়ে হলেও আমাদের নির্বাচনে আসতে দিন। আমরা কোন সন্দেহের মধ্যে থাকতে চাই না। সেইদিন আমরা এ অসম্ভব কাজও আল্লাহর রহমতে সম্ভব করেছিলাম। এছাড়া তৎকালীন সরকার আওয়ামী লীগের অনুরোধে নির্বাচন কমিশনার শ. ম জাকারিয়াকেও ছুটিতে পাঠিয়েছিল।

তার বক্তব্য অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহরের জন্য আওয়ামী লীগ দুইদিন সময়সীমা বাড়ানোর অনুরোধ করলে সরকার তাও মেনে নিয়েছিল। সে অনুযায়ী আওয়ামী লীগ জোট সাতদিন আর দুদিন মিলে মোট নয়দিন নির্বাচনে ছিল। তিনি প্রশ্ন করেন, তারপরেও সেই নির্বাচন কেন হয়নি? কেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলো? কেন সেদিন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছিলো? কারা সেটি করেছিলো? কারা প্রকাশ্যে ছিলো? কারা ছিলো নেপথ্যে? এগুলোর তদন্ত হলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। কারা সেদিন বিএনপিকে বলেছিলো, আওয়ামী লীগকে ছাড়া নির্বাচন করতে হবে। আর আওয়ামী লীগকে বলেছিলো, একটির পর একটি দাবি দিতে হবে। লগি-বৈঠার কর্মসূচি কীভাবে হয়েছিলো? লগি-বৈঠার কর্মসূচির সময় সংঘাত, হত্যাকান্ড শুরুর পূর্ব মুহূর্তে কেন সেদিন পুলিশকে সরিয়ে নেয়া হলো? কারা সে দিন এ কাজগুলো করেছিলো?

ওপরে উত্থাপিত প্রশ্নগুলো অত্যন্ত গুরুতর এবং প্রাসঙ্গিক। এর সঙ্গে আছে ৩ জন বিদেশি কূটনীতিকের দৌড় ঝাঁপ। এই ৩ জন বিদেশি কূটনীতিক হলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া বিউটেনিস, ব্রিটেনের হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী এবং জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি রেনাটা লক ডেসালিয়ান। আরো আছেন অন্যেরা। বারান্তরে এসম্পর্কে আলোকপাত করবো, ইনশাআল্লাহ।

Email: [email protected]



 

Show all comments
  • মিমমরাজ ১০ জানুয়ারি, ২০২৩, ৩:০৪ পিএম says : 0
    আ.লীগ বিজয় হতো পারতো না, যদি তারা অবৈধ নির্বাচনের সুযোগ না করে দিতো
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ হেদায়েত উল্লাহ ১০ জানুয়ারি, ২০২৩, ১:৪৯ পিএম says : 0
    কিন্তু কি হতচছিরি অবস্থা এই বাস্তব ঘটনাবলি কেন বিএনপি নেতারা টকশোতে বলেননা? কেন তারা আওয়ামীদের মিথ্যা প্নফাগান্ডার জবাব দেয়না?
    Total Reply(0) Reply
  • মিরাজ ১০ জানুয়ারি, ২০২৩, ২:৪৭ পিএম says : 0
    তাদের কারণেই আমরা পিছিয়ে পরিছি। নয়তো দেশ আরো উন্নত হতো। এরাই আ.লীগকে সুযোগ করে দিছে অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসতে
    Total Reply(0) Reply
  • আলি ১০ জানুয়ারি, ২০২৩, ২:৪৫ পিএম says : 0
    তাদেরকে আইনের আওতায় করতে হবে
    Total Reply(0) Reply
  • নোমান ১০ জানুয়ারি, ২০২৩, ২:৪৫ পিএম says : 0
    তাদের জন্যই আজ দেশের এই অবস্থা
    Total Reply(0) Reply
  • নোমান ১০ জানুয়ারি, ২০২৩, ৩:০৬ পিএম says : 0
    এরা শয়তান, তারা দেশের ভালো চায় না, যার ফলে তারা অবৈধ নির্বাচনের সুযোগ করে দিছে, তাদের কারণেই আজ দেশের রাজনৈতিক অবস্থা ভালো না
    Total Reply(0) Reply
  • আলি ১০ জানুয়ারি, ২০২৩, ৩:০৮ পিএম says : 0
    তাদেরকে আ.লীগ বিচারের আওতায় আনবে না, কারণ তাদের কারণেই তো আ.লীগ ক্ষমতায় আসছে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন