Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য সৈন্যদের মোবাইল ফোনের ব্যবহারকে দায়ী করছে রাশিয়া

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ জানুয়ারি, ২০২৩, ১:৩৯ পিএম

বছর শুরুর দিনে ইউক্রেনেরে যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় রাশিয়ার ৮৯ জন সৈন্য নিহত হয়েছে, সেই হামলা সৈন্যদের মোবাইল ফোনের ব্যবহার নজরদারি করে চালানো হয়েছিল বলে রাশিয়া জানিয়েছে। ইউক্রেনের ডোনেৎস্ক এলাকার মাকিভকার একটি কলেজে থাকা সৈন্যদের ওপর পহেলা জানুয়ারি মধ্যরাতের কিছু পরে ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করা হয়।

রাশিয়ার সেনাবাহিনী বলছে, মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকার পরেও সৈন্যরা সেগুলো ব্যবহার করছিল। সেটা অনুসরণ করেই তাদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়। ওই হামলায় আসলে কতজন নিহত হয়েছে, তা যাচাই করা যায়নি। তবে এই যুদ্ধে হতাহতের যেসব সংখ্যা রাশিয়া এখন পর্যন্ত স্বীকার করেছে, তার মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ ক্ষয়ক্ষতি। রাশিয়া জানিয়েছে, পহেলা জানুয়ারি মধ্যরাত একটার দিকে কারিগরি ওই কলেজের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি হিমারস রকেট সিস্টেম থেকে অন্তত ছয়টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়। এর মধ্যে দুইটি আকাশেই ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। বাকি চারটি কলেজে আঘাত করে।

বুধবার টেলিগ্রামে প্রকাশ করা একটি বিবৃতিতে রাশিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, হামলায় নিহতদের মধ্যে রেজিমেন্টর উপ-প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল বাচুরিন রয়েছেন। পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখার জন্য একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তবে এর মধ্যেই এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, ইউক্রেনের হামলার সক্ষমতার মধ্যে থাকার পরে এবং নিষিদ্ধ থাকার পরেও সৈন্যদের ব্যাপকভাবে মোবাইল ফোনের ব্যবহার করার কারণে তারা হামলার শিকার হয়েছে। ‘এসব কারণে শত্রুপক্ষ (আমাদের) সামরিক সদস্যদের অবস্থান শনাক্ত করে, হামলার স্থান নির্ধারণ করতে এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পেরেছে,’ রাশিয়ার বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

এর পেছনে যে কর্মকর্তাদের দায় রয়েছে বলে তদন্তে জানা যাবে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে জানানো হয়েছে রাশিয়ার পক্ষ থেকে। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সেটা ঠেকাতেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এর আগে ওই হামলায় রাশিয়ার পক্ষ থেকে ৬৩ জন নিহত হয়েছে বলে জানানো হয়েছেও এখন সেই সংখ্যা ৮৯ জন বলে জানানো হয়েছে। যদিও আসলে কতজন হতাহত হয়েছে, তা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করার সুযোগ নেই। যুদ্ধে হতাহতের ব্যাপারে খুব কমই তথ্য জানিয়ে থাকে মস্কো।

যখন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়, তখন ওই কারিগরি কলেজটিতে নতুন নিয়োগ পাওয়া সৈন্যতে বোঝাই ছিল। গত সেপ্টেম্বর মাসে ভ্লাদিমির পুতিন যে তিন লাখ রিজার্ভ সৈন্য তলব করেছিলেন, এরা ছিলেন তারই অংশ। আশেপাশে অনেক গোলাবারুদও মজুদ করা ছিল। হামলার ঘটনার পর সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অদক্ষতার অভিযোগ তুলে রাশিয়ার অনেক বিশ্লেষক এবং রাজনৈতিক বলেছেন, সৈন্যদের এরকম একটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় থাকতে দেয়া ঠিক হয়নি।

ডোনেৎস্কে রাশিয়াপন্থী সাবেক একজন শীর্ষ কর্মকর্তা পাবেল গুবারেভ বলেছেন, ওই রকম একটি বাড়িতে এতো বেশি সৈন্যর থাকার ব্যবস্থা করা ছিল ‘ফৌজদারি অপরাধ’। ‘এজন্য যাদের দায় রয়েছে, তাদের শাস্তি দেয়া না হলে সেটা হবে আরও ভয়াবহ,’ তিনি বলছেন। মস্কোর স্থানীয় পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার আন্দ্রেই মেদভেদেভ বলেছেন, হয়তো এজন্য সৈন্যদের দায়ী করা হবে বলে ধারণা করা যায়। কিন্তু আসলে দায়ী করা উচিত সেই কমান্ডারদের যারা একটি স্থানে এতো বেশি সৈন্যদের থাকতে দেয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

নিহত প্রত্যেক সৈন্যের পরিবারকে পাঁচ মিলিয়ন রুবল (৫৭ থেকে ৬৯ হাজার পাউন্ড) করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সূত্র: বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাশিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ