পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জ্বালানি ব্যবহারে নতুন পদ্ধতি চালু করতে যাাচ্ছে সরকার। এরমধ্যেই সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে বেসরকারি উদ্যোক্তারা জ্বালানি আমদানি করে বিপণন করতে পারবে। এরমধ্যে বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানির বিষয়টিও রয়েছে। ফলে গ্যাস বিপণনে নতুন বিধি যুক্তকরা হচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবৎ গ্যাস বিপণন বিধিমালা আটকে আছে। গত ৩৯ মাসেও এ বিধিমালা চূড়ান্ত হয়নি। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্টদের মতামত দিলেও তা চূড়ান্ত করা হয়নি। গত ২০১৯ সালের ২৫ অক্টোবর জ্বালানি বিভাগের সহকারী সচিব মো. রফিকুল ইসলামের স্বাক্ষরে গ্যাস বিপণন বিধিমালার খসড়া প্রকাশ হয়। মতামত নিয়ে বিধিমালা চূড়ান্ত করতে সর্বোচ্চ তিন মাস সময় বেধে দেওয়া হয়। কিন্তু ৩ বছর ৩ মাস সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও এই বিধিমালা চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি। দেশে গ্যাস বিপণনে যে আগের বিধিমালা ছিল তাকে যুগোপযোগী করার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জ্বালানি সচিব মাহবুব হোসেন সম্প্রতি এক বৈঠকে গ্যাস বিপণন বিধিমালাটি চূড়ান্ত করে দ্রুত পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। খসড়া গ্যাস বিপণন বিধিমালাটি দ্রুত চূড়ান্ত করার বিষয়ে পেট্রোবাংলাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আবার খসড়ার ওপর দেশের সাধারণ মানুষের মতামতের জন্য খসড়াটি জ্বালানি বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হলেও একটি মতামতও পাওয়া যায়নি বলে জানায় মন্ত্রণালয়। গ্যাসের অতিরিক্ত বিল সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করতে হলে গ্রাহককে পাওনার সমপরিমাণ টাকা বিইআরসিতে জমা দিয়ে আপত্তি উত্থাপন করতে হবে। এছাড়া পেট্রোবাংলার কাছে গ্যাসের দর নির্ধারণের ক্ষমতা দিলেও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আপত্তির কারণে তা সরকারের কাছেই থাকছে। নতুন ‹গ্যাস বিপণন বিধিমালা ২০১৯› এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকছে বলে জানা গেছে। গ্যাস ব্যবহারের শুরু থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বিতরণ কোম্পানিভিত্তিক প্রণীত নিয়ম অনুযায়ী গ্যাস বিপণন কর্মকান্ড পরিচালিত হতো। পরবর্তীতে সব বিতরণ কোম্পানির জন্য ‘গ্যাস বিপণন নিয়মাবলি-২০০৪› কার্যকর করা হয়। এরপর অন্তর্র্বতী ব্যবস্থা হিসেবে ‹গ্যাস বিপণন নিয়মাবলি-২০১৪› তৈরি করা হয়। ‹বাংলাদেশ গ্যাস আইন-২০১০› এর ধারা ২৮ অনুসরণে ‹গ্যাস বিপণন বিধিমালা-২০১৯ তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার পরিচালক অপারেশন কামরুজ্জামান ইনকিলাবকে বলেন, পেট্রোবাংলা গ্যাস বিপণন বিধিমালা নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন তৈরি করেছে। সেটি জ্বালানি বিভাগে দ্রুত পাঠানো হবে। জ্বালানি ব্যবহারে নতুন পদ্ধতি চালু করতে চাচ্ছে সরকার। এরমধ্যেই সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে বেসরকারি উদ্যোক্তারা জ্বালানি আমদানি করে বিপণন করতে পারবে। এরমধ্যে বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানির বিষয়টিও রয়েছে। ফলে গ্যাস বিপণন বিধিতে এসব কিছুর ছাপ থাকতে হবে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গ্যাস ব্যবহারের শুরু থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বিতরণে কোম্পানিগুলোর নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী গ্যাস বিপণন করা হতো। পরবর্তী সময়ে সব গ্যাস বিতরণ কোম্পানির জন্য ‘গ্যাস বিপণন নিয়মাবলি-২০০৪’ কার্যকর করা হয়। পরে অন্তর্র্বতী ব্যবস্থা হিসেবে ‘গ্যাস বিপণন নিয়মাবলি-২০১৪’ প্রণয়ন করা হয়েছিল। বাংলাদেশ গ্যাস আইন, ২০১০-এর ধারা ২৮ অনুযায়ী, ‘গ্যাস বিপণন নীতিমালা-২০১৯’ প্রণয়ন করা হচ্ছে। নতুন গ্যাস বিপণন নীতিমালায় মোট ১২টি অধ্যায় রয়েছে। এর মধ্যে ৬৫টি বিধি ও ১৪টি তফসিল রয়েছে। গ্রাহকের সুবিধার্থে ৭৮টি পারিভাষিক সংজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
গ্যাস বিপণন বিধিমালাটি চূড়ান্ত করার বিষয়ে পেট্রোবাংলাসহ অন্যদের আগ্রহ খুব কম। বিধিমালাতে নতুন নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকায় কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। একই সঙ্গে সরকার গত এক বছর আগেও জ্বালানি বিপণন ব্যাপকভাবে বেসরকারি কোম্পানির হাতে ছাড়তে চায়নি, এখন যা চাওয়া হচ্ছে। এসব কারণে পেট্রোবাংলার কাঁটছাট করতে হচ্ছে। আজকে এক রকম চিন্তা করলে দেখা যাচ্ছে দুই এক মাসের মধ্যে নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
৭৮ পৃষ্ঠার এই বিধিমালাতে গ্যাস বিপণন এর সকল বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। জানা যায়, আবাসিক বা বাণিজ্যিক যেকোনও ধরনের গ্যাস সংযোগ অবৈধ শনাক্ত হলে সেই গ্রাহককে ১২ মাসের (এক বছর) সমপরিমাণ বিল জরিমানা হিসেবে দিতে হবে। অবৈধ গ্যাসের অপব্যবহার রোধ, সুষম বণ্টন নিশ্চিত, গ্যাসের লোড সমন্বয় এবং সর্বোপরি রাজস্ব আয় বাড়ানোসহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এই বিধিমালায়। খসড়া বিধিমালায় বলা হয়েছে, মিটারযুক্ত গ্রাহক গ্যাস কারচুপি বা অননুমোদিত গ্যাস ব্যবহার করলে অস্থায়ীভাবে সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণসহ অপরাধ অনুযায়ী জরিমানা দিতে বাধ্য হবেন। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১২ থেকে সর্বনিম্ন ৩ মাসের বাড়তি বিল জরিমানা দিতে হবে গ্রাহককে। রেগুলেটর বা রেগুলেটরের চাপ অননুমোদিতভাবে বা অবৈধভাবে পুনঃস্থাপন বা পুনর্র্নিধারণ করে নির্ধারিত চাপের বেশি চাপে গ্যাস ব্যবহার করলেও উপরোক্ত নিয়মে জরিমানার আওতায় আসবেন গ্রাহক। এদিকে শিল্প গ্রাহক ঘণ্টাপ্রতি লোড ৪ হাজার ঘনফুটের নিচে গ্যাস কারচুপি বা গ্যাসের অপব্যবহার করলে অস্থায়ীভাবে লাইন বিচ্ছিন্নকরণসহ দুই থেকে ছয় মাসের অতিরিক্ত বিল জরিমানা দিতে হবে। বিধিতে আরও বলা হয়েছে, গ্যাস সংযোগ সংক্রান্ত কোনও শর্ত ভঙ্গের কারণে গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন হলে, এরপর কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অবৈধ গ্যাস ব্যবহার করলে পরিদর্শনের তারিখ থেকে শনাক্তকরণ তারিখ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৬ মাসের গ্যাস বিলের সমপরিমাণ অর্থ জরিমানা দিতে হবে। বিধিমালা চূড়ান্ত করার আগে, গ্যাস বিপণন বিধিমালা, ২০১৯› এর সাথে বিইআরসির নিয়মাবলি যাতে অসামঞ্জস্যপূর্ণ/সাংঘর্ষিক না হয় সে বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। ‹গ্যাস বিপণন বিধিমালা, ২০১৯-এর পরিবর্তে ‘গ্যাস (বিপণন) বিধিমালা, ২০১৯› নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। এছাড়া গঠিত কমিটি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের মতামত ও সুপারিশ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গ্যাস বিপণন বিধিমালার খসড়া চূড়ান্ত করার জন্য বলা হয়েছে। এবং অপ্রয়োজনীয় সংজ্ঞা বিধি থেকে বাদ দিতে বলা হয়েছে।
গ্যাস বিল পরিশোধের জন্য বিভিন্ন কোম্পানির অভিন্ন মিটার কার্ড এর নমুনা এই বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত রাখা হতে পারে। তাছাড়া মিটার রিডিং গ্রহণ কারার সময়ও পরিদর্শন করা যেতে পারে। তাই মিটার রিডিং এবং পরিদর্শন দুটিকে আলাদা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ সূত্র জানায়, এ বিধিমালায় মোট ১২টি অধ্যায়, ৬৩টি বিধি এবং ১৫টি তফসিল রয়েছে। এছাড়া গ্রাহকের গ্যাস সংযোগ প্রদান, অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ করা, অবৈধ ব্যবহার ও অপচয় রোধের সুবিধার্থে ৭৯টি পারিভাষিক সংজ্ঞা এবং বিইআরসি কর্তৃক যেসব নিয়ম আছে, সেগুলোও এ বিধিমালার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের উপসচিব জিএম, আতিকুর রহমান জামালী বলেন, গ্যাস আইন ২০১০ এর ২৮নং ধারায় বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। এ আইনের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য গ্যাস বিপণন বিধিমালা, ২০১৯ এর শিরোনাম আংশিক পরিবর্তনের প্রয়োজন ছিল। তাই এ পরিবর্তন করে বিধিমালাটিকে গ্যাস (বিপণন) বিধিমালা, ২০১৯ নামে অভিহিত করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।