পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিদায়ী বছর ২০২২ সালে ৬৭৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৯৯৫১ জন নিহত, ১২৩৫৬ জন আহত হয়েছেন। যা গত ৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ সড়ক দুর্ঘটনা। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের বার্ষিক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
এছাড়া গেলো বছর কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৩৪ জন শ্রমিক নিহত এবং ১ হাজার ৩৭ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে কর্মক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার হয়ে ১৩৫ জন নিহত এবং ১৫৫ জন আহত হন। বিভিন্ন সেক্টরে ১৯৬টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে, যার মধ্যে তৈরি পোশাক খাতে ১১৫টি। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) এর প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গতকাল সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক প্রতিবেদন তুলে ধরেন। যাত্রী কল্যাণ সমিতির মতে, বিদায়ী ২০২২ সালে ৬৭৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৯৯৫১ জন নিহত, আহত হয়েছেন ১২৩৫৬ জন। ২০২১ সালের চেয়ে ২০২২ সালে সড়কে দুর্ঘটনা ১৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ ও প্রাণহানি ২৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়েছে।
নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও ত্রি-হুইলার সরকারি আদেশ অমান্য করে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে অবাধে চলাচলের কারনে বিগত ৮ বছরের মধ্যে বিদায়ী ২০২২ সালে সড়কে সর্বোচ্চ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে।
সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ৩০৯০ জন চালক, ১৫০৩ জন পথচারী, ৭৪২ জন পরিবহন শ্রমিক, ৮৮৫ জন শিক্ষার্থী, ১৩২ জন শিক্ষক, ২৮৩ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১১৫০ জন নারী, ৭৯৪ জন শিশু, ৪৪ জন সাংবাদিক, ৩১ জন চিকিৎসক, ১৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ৫ জন শিল্পী, ৯ জন আইনজীবী ও ২৯ জন প্রকৌশলী এবং ১৬৮ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। নিহত ১১৪ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে ২৭ জন সেনা সদস্য, ৬২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন র্যাব সদস্য, ৯ জন বিজিবি সদস্য, ৫ জন নৌ-বাহিনীর সদস্য, ৮ জন আনসার সদস্য, ২ জন ডিজিএফআই সদস্য, ১ জন বিমান বাহিনীর সদস্য, ১ জন সিআইডি, ১ জন এনএসআই সদস্য, ১৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ২৪ জন সাংবাদিক, ৭০৩ জন নারী, ৫৮৮ জন শিশু, ৬৬৬ জন শিক্ষার্থী, ১১৭ জন শিক্ষক, ২৩৮৩ জন চালক, ৪২১ জন পরিবহন শ্রমিক, ২৭ জন প্রকৌশলী, ৯ জন আইনজীবী, ১৩৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ৩১ জন চিকিৎসক।
দুর্ঘটনার ধরণ বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, মোট দুর্ঘটনার ৫২ দশমিক ৫৫ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২১ দশমিক ৬১ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ বিবিধ কারণে, শূন্য দশমিক ৪০ শতাংশ যানবাহনের চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পরিসংখ্যানে তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২১ সালের তুলনায় বিদায়ী ২০২২ সালে ১ দশমিক ৫২ শতাংশ গাড়িচাপা, শূন্য দশমিক ৫৬ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, শূন্য দশমিক ১৩ শতাংশ যানবাহনের চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে, শূন্য দশমিক ৩৪ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনা কমেছে। ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ বেড়েছে।
দুর্ঘটনার এলাকা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২২ সালে মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ২৭ দশমিক ৭০ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৫২ দশমিক ০২ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১ দশমিক ৭১ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে, শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ লেভেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলো- বেপরোয়া গতি, বিপদজ্জনক ওভারটেকিং, রাস্তাঘাটের নির্মাণ ত্রুটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের অবাধে চলাচল, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চালকের বেপরোয়া মনোভাব, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেড ফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো, লেভেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা।
এদিকে গতকাল সোমবার বিলস এর তথ্য কর্মকর্তা মামুন অর রশিদের পাঠানো এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় যতজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন তা ২০২১ সালের তুলনায় ২ শতাংশ কম। ২০২২ সালে বিভিন্ন সেক্টরে সব মিলিয়ে ১৯৬টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১৫টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে তৈরি পোশাক খাতে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে বিড়ি শিল্পে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৪টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে পাট শিল্পে। এছাড়া পরিবহনে ১১টি, টেক্্রটাইল শিল্পে ১০টি, হোটেল রেস্টুরেন্ট খাতে ৫টি, রেলওয়েতে ৪টি এবং অন্যান্য খাতে ২২টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।