২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
যাকে যে বেশি ভালবাসে, তাকে তত বেশি উপহার দিয়ে, তত দামী উপহার দিয়ে খুশি হয়। আমাদের রব আমাদের সবচেয়ে বেশি ভালবাসেন। তাই তিনি আমাদের এত বেশি নেয়ামতরাজি দিয়েছেন, যা আমরা হিসাব করে শেষ করতে পারি না। আমাদের চারদিক, উপর-নিচ সব দিকে শুধু নেয়ামত আর নেয়ামত ছড়ানো। শীতের এই সময়ে মানুষের রোগ বালাই বেশি হয়। এই রোগ বালাই থেকে মানুষ যাতে খুব সহজে বেঁচে থাকতে পারে, তাই এই সময়ে প্রচুর শাক সবজিতে ভরে দিয়েছেন। আজ আমরা শীতের জনপ্রিয় “লাল শাক ” নিয়ে জানব।
লাল শাক শীত কালীন সবজি হলেও বর্তমানে সারা বছর পাওয়া যায়। দেখতে সুন্দর, খেতেও সুস্বাদু। লাল শাক ছোট থেকে বড় সবাব জন্য উপকারী। দেখতে লাল, ভাল মাখালেও লাল হয়ে যায়।
১০০ গ্রাম লাল শাকে আছে:
প্রোটিন ৫.৩৪ মিঃগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩৭৪ মিঃগ্রাম, স্নেহপদার্থ ০.১৪ মিঃগ্রাম, শর্করা ৪৯৬ মিঃগ্রাম, অ্যামাইনো অ্যাসিড, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, আঁশ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি২, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ক্যারোটিন, আয়রন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ।
উপকারিতা:
১। শরীরে শক্তি যোগাতে: লাল শাক প্রোাটিন, ভিটামিন, খনিজ পদার্থে ভরপুর একটি শাক, সেই কারণেই শরীরের শক্তি জোগাতে লাল শাকে জুড়ি মেলা ভার। এই শাক হজম করতেও অসুবিধে হয় না।
২। রক্তশূন্যতা: এ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা লাল শাক বেশ উপকারি। লাল শাকে প্রচুর পরিমাণ আয়রন থাকায় রক্তের ঘাটতি পূরণে বেশ সহায়ক। লালশাক শরীরে লোহিত কণিকা বা হিমোগ্লোবিন বাড়িয়ে দেয়।
৩। ডায়াবেটিস রোগ : লাল শাকের বিভিন্ন ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। লাল শাক রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৪। মস্তিস্ক ও হৃদপিন্ড ভাল রাখতে: লাল শাক রক্তে কোলেস্টরলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। মস্তিস্ক হৃদপিন্ড শক্তিশালী করতে লাল শাকের অনেক ভূমিকা রয়েছে। যাঁদের কোলেস্টেরলের সমস্যা আছে তাঁরা প্রতিদিন লালশাক খেতে পারেন। এতে উপকার পাবেন
৫। দাঁত ও হাড়ের যত্নে: লাল শাকে প্রচুর ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম রয়েছে। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন সি দাঁত এবং হাঁড়ের শক্তি গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। লাল শাক দাঁতের সুস্থতা বৃদ্ধিতে, হাঁড়কে মজবুত করতে সাহায্য করে।
৬। টক্সিন দূর করতে: লাল শাকের মধ্যে যে অ্যামাইনো অ্যাসিড, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়াম থাকে তা শরীরের টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। ফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। আথ্রাইটিস ও শরীরের ব্যথা বেদনা নাশ করে।
৭। দাঁতের লালচে বা হলুদাভ ভাব দূর করতে: লাল শাকের মূল দিয়ে দাঁত মেজে, লবণ পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এর ফলে দাঁতের মধ্যে থাকা হলুদ ভাব কেটে যাবে। লাল শাকের মূল লবণ পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি দিয়ে কুলকুচি করলে দাঁতের হলুদাভ ভাব উধাও হয়ে যাবে। এভাবে কুলকুচি করলে মাত্র কয়েক সপ্তাহেই দাঁত ঝকঝকে হয়ে যাবে। এছাড়াও দাঁতের অন্যান্য সমস্যাগুলিও দূর হয়ে যাবে।
৮। মোনোপোজে: মহিলাদের মাসিক চিরতরে বন্ধ হয়ে গেলে নারীদের শরীরে অনেক সমস্যা দেখা দেয়, তাদের হাড় দুর্বল হয়ে যায়। ত্বক ও চুলে বৈরী ভাব তৈরী হয়। নখ ভঙ্গুর হয়ে যায়। শরীরে আয়রণ ও ক্যালসিয়ামে ঘাটতি দেখা দেয়। এমতাবস্থায় লাল শাক উপকারী বন্ধু হতে পারে।
৯। গর্ভবতী এবং প্রসূতি মায়েদের: গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের জন্য খুব উপকারী এই লাল শাকা। এই শাকে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান যা মায়েদের শরীর সুস্থ ও সবল রাখতে বেশ কার্যকর। সাথে গর্ভজাত ও সদ্যোজাত শিশুর শরীর গঠনে বেশ উপকারী।
১০। চোখের রোগে: লাল শাকে থাকা ভিটামিন এ, ভিটামিন সি চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে ও ভালো রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন এ রেটিনার কার্যক্ষমতা বাড়ায়। রাত কানা রোগ বাল করে এই ভিটামিন এ।
১১। হজমশক্তি বাড়াতে: লালশাকে থাকা খাদ্য আঁশ হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর করে।
১২। ক্যানসারে: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করে। লালশাকে থাকে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়াও এতে আছে অ্যামাইনো অ্যাসিড, ফসফরাস, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই। এই উপাদানগুলি শরীরের একাধিক টক্সিক উপাদান বের করে দেয়। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ক্যানসারস কোষ জন্মানোর আশঙ্কা কমে যায়।
১৩। কিডনির রোগে: কিডনির কার্যক্ষমতা ভাল রাখতে লাল শাক উপকারী। কিডনি পরিষ্কার রাখতে লালশাক খুব ভালো কাজ করে। রক্তে উপস্থিত একাধিক ক্ষতিকর উপাদান শরীর থেকে বের করে দেয় এই লাল শাক।
১৪। ওজন কমাতে: যাদের ওজন বেশি তাদের নিয়মিত লাল শাক খাওয়া প্রয়োজন। লাল শাকে ক্যালোরির পরিমাণ কম, ফলে ওজন বৃদ্ধি হতে দেয় না, উল্টো ওজন কমায়।
১৫। চুলের যত্নে: লাল শাক চুল পড়া কমিয়ে দেয়। চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। চুলের বৃদ্ধিও তরান্বিত করে। চুলের গোড়া মজবুত রাখতে লাল শাক সাহায্য করে। চুলের প্রয়োজনীয় উপাদান ও পুষ্টি যোগান দেয় এই লাল শাক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।