২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
বাংলা নাম কমলা। ইংরেজি নাম : ঙৎধহমব বৈজ্ঞানিক নাম: ঈরঃৎঁং জবঃরপঁষধঃধ. কমলালেবু অতি সুন্দর একটি নিয়ামত আল্লাহর। কমলালেবু এখন বাজারে এসেছে। কমলালেবুতে আমিষ ও ভিটামিন সি রয়েছে। কমলালেবু একটি জনপ্রিয় অতি সুস্বাদু, উপাদেয় ও পুষ্টিকর ফল। এ ফলের রূপ ও গুণ দুই-মনোমুগ্ধকর। কমলালেবু সর্দিজ্বর নিরাময়ে উপকারী। ফলের ছাল বমি নিবারক। ফলের শুষ্ক খোসা অম্লরোগ ও শারীরিক দুর্বলতা নিরসনে উপকারী। ফুলের রস মৃগী রোগ নিবারক। শিশু, কিশোর যুবক-বৃদ্ধ সবাই এ ফল খেতে পছন্দ করে। আসাম বা দক্ষিণ-পূর্ব চীনে কমলালেবুর আদি জন্মস্থান। বর্তমানে আমেরিকা, স্পেন, ভারত, ইতালি, জাপান, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, ব্রাজিল, মরক্কো, আলজেরিয়া, গ্রীস, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, ইসরাইল, মিশর, পাকিস্তান, শ্রীলংকা প্রভৃতি দেশে প্রধানত কমলালেবু চাষ হয়। বাংলাদেশে বান্দরবন জেলার রোমা, থানসী, নাইখানছড়ি প্রভৃতি স্থানে কমলার চাষ হয়। রাংগামাটি জেলার সাবেক উপত্যকায় এর ব্যাপক আবাদ হয়। সিলেটের জাফলং ও জৈন্তা এবং মৌলভীবাজার জেলায় কিছু কিছু দেশি জাতের কমলা গাছ হতে দেখা যায়। সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে কমলালেবুর বিভিন্নজাত নিয়ে গবেষণার কাজ চলছে। কমলালেবু সাধারণত তিন রকমের হয়ে থাকে। যেমন-(১) টক কমলালেবু, (২) মিষ্টি কমলালেবু ও (৩) ঢিলা খোসাযুক্ত কমলালেবু। শেষোক্ত প্রজাতির কমলালেবুর চাহিদা বাজারে বেশি। এ ফল গোলাকার থেকে ডিম্বাকার-একক, কখনও কখনও যুগ্ম। ফল ত্বকের বর্ণ সোনালী হলদে বা কমলা বর্ণের। ফলত্বক পাতলা থেকে সামান্য ¯ূ’ল, কোয়ার সঙ্গে ফলত্বক শক্তভাবে লেগে থাকে। কোয়াগুলো পারস্পরিক ঘন সন্নিবিষ্ট ফলগুলো নিটোল, ফলের রস সুমিষ্ট, সুগন্ধি ও ঈষৎ অম্ল স্বাদযুক্ত। খাদ্য হিসেবে কমলালেবু খুবই পুষ্টিকর। এ ফলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’। প্রতি ১০০ গ্রাম কমলালেবুতে ৬৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ থাকে। দাঁত, মাড়ি ও পেশি মজবুত রাখার জন্য ভিটামিন ‘সি’ বিশেষ প্রয়োজন। স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধে ভিটামিন ‘সি’ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি প্রোটিন ও কলাজেন উৎপাদনেও ভিটামিন ‘সি’ ভূমিকা রাখে। তাছাড়া প্রতি ১০০ ভাগ ফলে রয়েছে ০.৯ ভাগ প্রোটিন, ১০.৪ ভাগ শর্করা, ০.৩ ভাগ সহজপাচ্য ফ্যাট, ০.৪ ভাগ খনিজ পদার্থ, ০.০৫ ভাগ ক্যালসিয়াম, ০.০২ ভাগ ফসফরাস, ০.১ ভাগ লৌহ এবং প্রতি ১০০ গ্রামে ভিটামিন ‘এ’ ৩৫০ আইঃইউ ও ১২০ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১ থাকে। প্রতি কেজি ফলে ৪৯০ ক্যালোরি শক্তি পাওয়া যায়। কমলালেবুর খোসায় রয়েছে প্রচুর পেকটিন ও মূল্যবান তেল। কমলালেবু তৃপ্তিদায়ক ও তৃষ্ণানিবারক। তাছাড়া এটি ক্ষুধাবর্ধক, মেদনাশক এবং কফ ও পিত্তনাশক। কমলালেবুর রস, জেলি প্রভৃতি আকারে প্রক্রিয়াজাত করে বহুদিন রাখা যায়। ফলের রসে সাইট্রিক অম্লের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি বেশ অম্লভাবাপন্ন। এজন্য সালাদ ও শরবত প্রস্তুতে এবং অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যকে স্বাদযুক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হয়। আমাদের দেশে অনেকে বিভিন্ন তরকারির স্বাদ ও সুগন্ধির জন্য রোদে শুকানো কমলার খোসা বা ছাল ব্যবহার করে থাকেন। ফলের খোসা ও পাতা দিয়ে প্রসাধনী ও সুগন্ধি তেল তৈরি করা হয়। ফলের খোসা আচার ও চাটনীতে ব্যবহার করা হয়। টাটকা লেবুর খোসানিংড়ে মুখে মাখলে ব্রণ আরাম হয়। কমলালেবুর শুকানো ছাল অম্লরোগ ও শারীরিক দুর্বলতায় ব্যবহৃত হয়। কমলার হলুদ নির্যাস সূর্যের ক্ষতিকর আলোকরশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। একই সঙ্গে ত্বককে নরম স্থিতিস্থাপক করে। দৈনিক এক গ্লাস কমলার জুস খেলে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ে। ত্বক হয়ে ওঠে আকর্ষণীয় ও লাবণ্যময়। এটি একাধারে ত্বক, চুল ও নখের জন্য উপকারী। কমলালেবু বাংলাদেশে খুব সীমিত এলাকায় জন্মে ও দেশের চাহিদার তুলনায় খুব কম উৎপন্ন হয়। তাই প্রতি বছরই বিদেশ থেকে এ ফল ও টিনজাত রস হিসেবে আমদানি করা হয়। সবশেষে এ সত্যটি মনে রাখুন- স্বাদ গন্ধে চমৎকার ফল রস দেয় টাকা দেয় আরো দেয় বল।
ষ ডা. মাওলানা লোকমান হেকিম
চিকিৎসক, কলামিষ্ট-
০১৭১৬২৭০১২০
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।