Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রবীণদের কল্যাণ ও নিরাপত্তায় আরো অনেক কিছু করার আছে

আফতাব চৌধুরী

| প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

১৯৯১ সাল থেকে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালন করা হচ্ছে। ১৯৯০-র ১৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘ ১ অক্টোবর তারিখটিকে আন্তর্জাতিক বৃদ্ধ দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই দিবসের তাৎপর্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, We must put an end to age discrimination, abuse, neglect and violence against older persons. I urge states to put the necessary legal protections in place and I urge all partners to help countries develop the capacity and institutions to achieve this objectives. On this International day, let us reaffirm our commitment to the vital work of upholding the United Nations principles for older persons and achieving a society for all ages.জাতিসংঘের মতো গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংগঠন প্রবীণ নাগরিকদের জন্য চিন্তা-ভাবনার খাতিরে বছরের একটি বিশেষ দিনকে উৎসর্গ করেছে। এজন্য বিশ্ববাসী বিশেষ করে প্রবীণ নাগরিকগণ নিঃসন্দেহে গৌরব অনুভব করেছেন।

এই নিবন্ধকার নিজে একজন প্রবীণ নাগরিক। বাংলাদেশে প্রবীণ নাগরিকদের হালচাল এবং বর্তমান বিশ্বায়নের প্রভাবে, বর্ধিত জনসংখ্যার চাপে ও জীবিকার প্রয়োজনে একান্নবর্তী পরিবার ভেঙে ছোট পরিবারে পরিণত হয়েছে। ফলে অর্থনৈতিক পরিকাঠামোও সব পরিবারে এক নয়। প্রত্যেকটি পরিবারের সদস্য সংখ্যা ভিন্ন ভিন্ন। ফলে প্রবীণ নাগরিকদের সমস্যা এবং জীবনশৈলীও ভিন্ন হতে বাধ্য।

বর্তমানে আমরা যদি আর্থিক দিক থেকে বিভাজন করি, তাহলে দেখতে পাই, বাংলাদেশে চার শ্রেণির লোকের বসবাস। প্রথম শ্রেণি হলো উচ্চবিত্ত। দ্বিতীয় মধ্যবিত্ত, তৃতীয় নিম্নমধ্যবিত্ত ও চার নম্বরে আছে নিম্নবিত্তের পরিবার। এই চার শ্রেণির পরিবারেই প্রবীণরা আছেন। প্রতি শ্রেণিতেই প্রবীণ নাগরিকের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। বর্তমানে বাংলাদেশে আয়ু যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। সেটা সম্ভব হয়েছে কলেরা, গুটি বসন্ত, প্লেগ ইত্যাদি মহামারীর প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও ক্ষয়রোগের চিকিৎসার উন্নতির ফলে। মানুষের আয়ু বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু সমস্যাও দেখা দিয়েছে। আর এই সমস্যার জন্য ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি বহুলাংশে দায়ী।

বর্ণিত আর্থিক শ্রেণিবিন্যাসের মধ্যে উচ্চবিত্তের পরিবারে যে-সব প্রবীণ আছেন তাদের বেঁচে থাকা বা চিকিৎসার জন্য চিন্তা নেই। এমনকি বাসস্থানেরও অভাব নেই। আর যে-সব প্রবীণ অধিক বয়সেও কর্মক্ষম, এমনকি মানসিকভাবে সচেতন ও স্মৃতিশক্তির ঘাটতি দেখা দেয়নি, তারা ব্যবসায় বলুন বা রাজনীতিতেই বলুন, এমনকি সমাজসেবায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। আবার, এমন অনেক সচ্ছল প্রবীণ আছেন, যারা কর্মক্ষেত্রে সক্রিয় নন এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সান্নিধ্য ও সহানুভূতি থেকে বঞ্চিত, তারা নিঃসঙ্গ ও মানসিক দহনের শিকার। এদের মধ্যে অনেকেই নিঃসঙ্গতা থেকে মুক্তি পেতে উন্নতমানের বৃদ্ধাশ্রমের শরণাপন্ন হন। অনেক সচ্ছল প্রবীণ নিজ বাসভবনে পরিচালক-পরিচালিকা নিয়ে একাকী বাস করেন। হয়তো তাদের ছেলেমেয়ে বিদেশে বা তাদের কর্মস্থলে থাকে। তাদের নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়েই বেঁচে থাকতে হয়। অনেক উচ্চবিত্তের প্রবীণ আছেন, যারা অবিবাহিত। অথচ কর্মজীবনে নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করে অবসর নিয়ে বাকি জীবন নিরাপদ আশ্রয়ে সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে থাকার সন্ধানে আছেন।

বাংলাদেশে সচ্ছল প্রবীণদের জন্য কিছু আবাসস্থল তৈরি করা হয়েছে। সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে থাকা-খাওয়া আর মানসিক সুখ এক নয়। উচ্চবিত্তের মানসিকতাও সমাজের ভিন্নস্তরে থাকা প্রবীণদের মধ্যে আসমান-জমিন ফারাক। উচ্চস্তরের প্রবীণদের জনসংযোগ সীমিত, তাই তাদের একাকিত্বের প্রবণতাও বেশি। ফলে মানসিক দৈন্যও প্রকট হয়। অথচ দাম্ভিকতা বা ইগো ওদের মানসিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটায়। আবার যারা অতি ভাগ্যবান, তারাই দাপটের সঙ্গে পরিবারের অন্যান্য সদস্যের অভিভাবক হিসাবে বাকি জীবন কাটান।

আর্থিকভাবে যারা মধ্যবিত্তের স্তরে আছেন, এদের বেশিরভাগই ছোট পরিবারে গণ্ডিবদ্ধ। পরিবারের সদস্য সংখ্যা সীমিত। এই শ্রেণির বেশিরভাগ মানুষ শিক্ষিত এবং বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। এই স্তরে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও পড়েন। পৈতৃক বাসস্থান হয়তো অনেকের আছে কিন্তু কর্মস্থল বিভিন্ন শহরে বা নগরে, এমনকি বিদেশেও। সুতরাং পৈতৃক বাসস্থান যাদের আছে তারাও বাসস্থান থেকে অনেক দূরে থাকেন। তাই কর্মস্থলেই স্থায়ী বা অস্থায়ী বাসস্থানে থাকতে বাধ্য। এদের সন্তান-সন্ততি এক বা দুই। এদের শিক্ষিত করে তুলতেই মা-বাবা ব্যতিব্যস্ত। এই সীমিত এবং স্বল্প পরিসরের বাসগৃহে বৃদ্ধ বাবা-মার জন্য পৃথক কক্ষেরও হয়তো অভাব। তাই বাবা-মাকে নিয়ে একসঙ্গে থাকা এখন হয়েই ওঠে না প্রায়। আবার, মা কর্মক্ষম থাকলে নাতি-নাতনিদের দেখাশুনা ও পরিবারের কাছে সহায়তা করতে তার প্রয়োজন পড়ে এবং মাকে বাধ্য হয়ে ছেলের পরিবারে থাকতে হয়।

আবার, এমন মা-বাবা আছেন পুত্র-পুত্রবধুর একান্ত ইচ্ছা সত্ত্বেও স্ব-স্থান ত্যাগ করতে রাজি হন না। এরা কেউ হয়তো সঞ্চিত অর্থ বা পেনশনের টাকায় দিনাতিপাত করেন এবং অনেকে আবার পুত্রের পাঠানো মাসোহারায় জীবিকা নির্বাহ করেন। আর যাদের ছেলেমেয়েরাও বিমুখ। অথচ আর্থিক সচ্ছলতা আছে, স্থায়ী বাসগৃহ নেই তাদের অনেকেই বৃদ্ধাশ্রমের দিকে পা বাড়ান। কিন্তু পরিবারের আপনজনদের কাছ থেকে দূরে থেকে মানসিক কষ্টের শিকার হতে হয়। আবার, যে-সব বয়স্ক বাবা-মা ছেলেমেয়েদের কাছে অবাঞ্ছিত এবং আর্থিক সঙ্গতিহীন, তাদের অবস্থা তো আরও কাহিল।

আর্থিক স্তরে যারা নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের পর্যায়ে আছেন, যেসব পরিবারের প্রবীণ নাগরিকদের জীবনশৈলীর তফাৎ যদিও আছে, কিন্তু নৈকট্য অনেক বেশি। যারা চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী বা ক্ষুদ্র ব্যবসা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাধারণ কর্মচারী বা অন্যভাবে সীমিত আয়ের অধিকারী-এরা নিম্নবিত্তের পর্যায়ভুক্ত এবং যারা দিনমজুর, ভাগচাষী, রিকশাচালক, ঠেলাচালক বা পারিবারিক ভৃত্য, এরা নিম্নবিত্তের পর্যায়ভুক্ত। এই উভয় পর্যায়ের পরিবারের প্রবীণরা সাধারণত পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন নন। নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের পরিবার জনসংখ্যা মধ্যবিত্ত পরিবারের মতো সীমিত নয়। এসব পরিবারের বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও পরিবারের অঙ্গ। যে সব বৃদ্ধ-বৃদ্ধা কাজ করতে অক্ষম তাদেরও পরিবারের দু’বেলা আহারের সংস্থান করা ছাড়াও ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার খরচ জোটানো খুবই কষ্টকর। তবুও তারা পারিবারিক বন্ধন অটুট রাখতে প্রাণপণ চেষ্টা করেন। কিন্তু বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা বা নিয়মিত খাদ্য জোগান দেওয়া সম্ভবপর হয়ে ওঠে না।

আবার, এমন অনেক গরিব পরিবার আছে, যাদের পরিবারে উপার্জনক্ষম ছেলে হয়তো স্থায়ী উপার্জনের বা বেশি উপার্জনের তাগিদে বিভিন্ন দেশে রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান প্রহরী বা অন্য কাজে লিপ্ত। এদের মধ্যে যারা কর্মোদ্যোগী ও সৎপথে থাকে তারা বৃদ্ধ বাবা-মার জন্য বাড়িতে মাসান্তে অর্থ পাঠায় আর যারা অসৎ সঙ্গে মিশে নেশাগ্রস্ত বা পাপকাজে জড়িত হয়, এদের পক্ষে বৃদ্ধ বাবা-মার জন্য কোনও দায়িত্ববোধ থাকে না। ফলে এরূপ পরিবারের অক্ষম বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা ভীষণ অসহায় হয়ে পড়েন। যেহেতু এদের কোনও অর্থ সঞ্চয় এবং সম্পদও নেই, তাই এরা বেসরকারি কোনও বৃদ্ধাশ্রমেও স্থান পান না।

এ তো হলো অতি সংক্ষেপে চার অর্থনৈতিক পর্যায়ে থাকা পরিবারের বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের বর্তমান পরিস্থিতি। এছাড়াও প্রবীণ নাগরিকরা যে-সব সমস্যায় ভোগেন তা হলো তাদের মেলামেশার সঙ্গীর অভাব। অনেক বৃদ্ধ-বৃদ্ধা তাদের অতীত অভিজ্ঞতার কথা বিশদভাবে ব্যাখ্যা করতে চান। কিন্তু যুব প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা তাতে অংশ নিতে অনাগ্রহী। এতে মনের মধ্যে তাদের এক চাপা ক্ষোভ থেকে যায়। আবার, যেসব প্রবীণ অধ্যয়ন, লেখাপড়া বা অন্যান্য কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকনে তারা নিঃসঙ্গতা বা একাকিত্ব ততটা অনুভব করেন না। এছাড়া বাংলাদেশে ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের ধারণা, আমরা বোধহয় কর্মক্ষমতা হারানোর পথে এবং আমাদের শেষদিনের হয়তো আর বেশি বাকি নেই। এই মানসিকতা অনেক প্রবীণ নাগরিককেই বিমর্ষ করে তোলে। অথচ, পাশ্চাত্য দেশে বিশেষ করে আমেরিকায় প্রবীণরা কিন্তু বয়সকে পাত্তা দেন না। সে-দেশে অনেক বৃদ্ধ আশি বছর বছর পাড়ি দিয়েও নতুন ঘর বাধার জন্য প্রস্তুত থাকেন। অ্যারিস্টোটল ওনাসিস নামের বিত্তশালী অশীতিপর ব্যক্তি আমেরিকান প্রাক্তন রাষ্ট্রপ্রধান জন এফ কেনেডির বিধবা পত্নী জ্যাকলিনকে বিয়ে করে নতুন সাংসারিক জীবন শুরু করেছিলেন। এরূপ দৃষ্টান্ত পাশ্চাত্য দেশে প্রচুর। আমাদের প্রবীণ নাগরিকরাও যেন হতাশাকে প্রশ্রয় না দিয়ে যে যেভাবে পারেন তাদের অভিজ্ঞতা ও কর্মদক্ষতার সদ্ব্যবহার করেন। মানসিক শক্তি অটুট থাকলে স্মরণশক্তি শতবর্ষ অতিক্রম করেও সতেজ থাকবে।

এবার দেখা যাক নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের প্রবীণ নাগরিকদের জন্য সরকার বা সমাজের চিন্তাভাবনা কী। উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের পরিবারের প্রবীণ নাগরিকদের জন্য বিকল্প আশ্রয়স্থল হিসাবে বড় বড় শহর ও নগরে ব্যক্তিগতস্তরে বা বেসরকারি সংস্থার তরফে বৃদ্ধাবাস বা বৃদ্ধাশ্রমের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক প্রবীণ নাগরিক এ সুবিধা পাচ্ছেন। এসব আবাসে নিকটজনের সান্নিধ্য না পেলেও একাকিত্ব বা নিরাপত্তাহীনতা থেকে রেহাই পাচ্ছেন। আর্থিক আনুকূল্যে চিকিৎসাসেবা পেতেও অসুবিধা হয় না। বাকি জীবন ভাল-মন্দে কেটে যায়। কিন্তু নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের প্রবীণদের জন্য সমাজ ও সরকারের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। এ যাবৎ সরকার প্রবীণ নাগরিকদের সাহায্যে যে-সব সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করেছে, তা হলো ১. ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের জন্য বার্ধক্য ভাতা, ২. রেলযাত্রায় রেহাই মূল্যে টিকিট, ৩. প্রবীণদের বার্ষিক আয়ে আয়করে ছাড়, ৪. ব্যাঙ্কের লগ্নিতে প্রবীণদের জন্য বেশি মাত্রায় সুদপ্রাপ্তি ইত্যাদি। প্রথমত, সমাজকল্যাণ বিভাগ, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভার অনুমোদনক্রমে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের যে ভাতা দেওয়া হয় তা অতি সামান্য। মাসে ৬/৭ শত টাকা তাও নিয়মিত নয়। এছাড়া হিতাধিকারী বাছাইয়ে অনেক সময় দেখা যায়, ৪৫ থেকে ৫০ বছর বয়সের সচ্ছল ব্যক্তিও এই সুবিধা পাচ্ছেন আবার অশীতিপর অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা এই ভাতা থেকে বঞ্চিত। এই অসাম্য দূর করা প্রয়োজন এবং মাসিক ভাতার পরিমাণ ন্যূনতম হাজার টাকা করা উচিত। দ্বিতীয়ত, রেল, বিমান ও সরকার নিয়ন্ত্রিত বাসে যাতায়াতের জন্য সরকার ৫০ শতাংশ রেহাই মূল্যের টিকিটে যাতায়াতের ব্যবস্থা, একান্ত গরিব বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের ক্ষেত্রে বিনা ভাড়ায় রেলযাত্রা, সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে অস্ত্রোপচারসহ চিকিৎসা ও ওষুধপথ্যাদির জোগান দেওয়া। তৃতীয়ত, একান্ত গরিব, অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য সমাজকল্যাণ বিভাগের তরফে বৃদ্ধাবাস তৈরি ও বিনা খরচে থাকা-খাওয়া এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা। জন্যকল্যাণকামী রাষ্ট্রের পক্ষে এসব দায়িত্ব পালন করা উচিত। এছাড়া, বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠন ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত সংস্থার তরফে আর্থিক দিক দিয়ে দুর্বল অথচ সহায়হীন প্রবীণ নাগরিকদের স্বল্প অর্থের বিনিময়ে আশ্রয় ও খাওয়া থাকার বন্দোবস্ত করার প্রয়াস থাকা উচিত। আমাদের সমাজের এমন অনেক প্রবীণ পুরুষ ও মহিলা আছেন যারা নিজ পরিবারের নিকটজনের কাছে অবহেলার পাত্র ও বঞ্চনার শিকার। আবার, অনেক বৃদ্ধ-বৃদ্ধার আপনজন বলতে কেউ নেই অথবা অধরা। এমন প্রবীণ নাগরিকদের নিরাপদে বাকি জীবন সুন্দরভাবে যাপনের জন্য নিকট ভবিষ্যতে প্রতি জেলা শহরে স্বজনহীন প্রবীণদের জন্য আশ্রয়স্থল প্রয়োজন।

আমাদের দেশে বিভিন্ন নামে বিভিন্ন স্থানে প্রবীণদের জন্য আশ্রয়স্থল সৃষ্টি হয়েছে। যারা এসব প্রতিষ্ঠান গড়তে নিরলস প্রয়াস চালাচ্ছেন তাদের এই প্রয়াসকে সাধুবাদ জানাই। দেশের বিভিন্ন স্থানের এসব বৃদ্ধানিবাস অদূর ভবিষ্যতে প্রবীণদের জন্য এক ভরসা হিসাবে থাকবে। প্রবীণ নাগরিকরা সুস্থ দেহ মন নিয়ে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকুন এবং সমাজের কল্যাণে তারা তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সুন্দর সমাজ গঠনে সাহায্যের হাত বাড়ান, এই কামনা করি।

লেখক: সাংবাদিক-কলামিস্ট। সহ-সভাপতি প্রবীণ হিতৈষী সংঘ, সিলেট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন