Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শীতে পাই কদবেল

| প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:১৪ এএম

এই মৌসুমের ফল কদবেল নিয়ে আমরা কিছু জানার চেষ্টা করব। কদবেল একটি উল্লেখযোগ্য উপকারী ফল। উচ্চ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ কদবেল দেহকে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে সাহায্য করে। কদবেল হাল্কা টক বা মিষ্টি স্বাদযুক্ত হতে পারে। হাল্কা সুগন্ধযুক্ত ফল এটি।

পুষ্টিমান: প্রতি ১০০ গ্রাম কদবেলের পুষ্টিমান পানীয় অংশ ৬৪.৬ গ্রাম, খাদ্য আঁশ ৫ গ্রাম, স্নেহ ৩.৭০ গ্রাম, প্রোটিন ৭.১ গ্রাম, খনিজপদার্থ ২.২ গ্রাম, আমিষ ৩.৫ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, শর্করা ১৮.১০ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৩০ মিলিগ্রাম, আয়রন ৬ মিলিগ্রাম, ম্যাঙ্গানিজ ৬ মিলিগ্রাম, জিংক ১০ মিলিগ্রাম, থায়ামিন ০.০৪ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লাবিন ১৭ মিলিগ্রাম, নায়াসিন ৮ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-বি ০.৮০ মিলি গ্রাম এবং শক্তি ১২৪ কিলো কেলোরি।

ওষুধিগুণ : কদবেলের পাতা, ফল, ছাল , শাঁস ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
১. পিক্ত পাথুরীতে: পিত্তপাথূরী রোগে কদবেলের পাতা উপকারী। কতবেলের কচি পাতার রস এক চা চামচ করে সকাল বিকাল খেলে অসুবিধা দুর হয়ে যায়।
২. কিট পতঙ্গ দংশনে: বিষাক্ত কোন কিছু কামড় দিলে বা হুল ফুটালে, কদবেলের শাঁস পেস্টের মত লাগিয়ে দিলে ব্যথা সেরে যায়।

৩. দাঁতের মাড়ি ও গলার ঘা : পাকা ফল খেলে দাঁতের মাড়ির রোগ সেরে যায় এবং গলার ঘা ভাল হয়ে যায়।

৪. ব্রণ ও মেছতা: কাঁচা কদবেলের রস ব্রণ বা মেছতায় ঘষে লাগালে ব্রণ ও মেছতা ভাল হয়। তবে কয়েকদিন লাগাতে হবে। রস প্রতিদিন নতুন করে নিতে হবে।

৫. শ্বাস কষ্ট: শ্বাস কষ্টে পাকা কদবেলের শাঁস চটকে ছেঁকে তার রস থেকে ৫-১০ ফোঁটা খেলে শ্বাস কষ্ট কমে যাবে।

৬. খাদ্যে বিষক্রিয়া: খাদ্যে বিষক্রিয়া, খাদ্যে অনিহা,কিংবা অরুচি অথবা কোন দুর্গন্ধ নাকে যাওয়ায় বার বার বমি হচ্ছে। এমতাবস্থায় এক চা চামচ কদবেলের রসের সাথে এক দুই টিপ পিঁপুলের গুঁড়া মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৭. পেপটিক আলসারে: কদবেল পাতার রস পানির সঙ্গে নিয়মিত পান করলে পেপটিক আলসার তাড়াতাড়ি ভালো হয়।

৮. রক্ত পরিস্কারক: এই ফল রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং বুক ধড়ফড় এবং রক্তের নিম্নচাপ রোধেও সহায়ক। চিনি বা মিছরির সঙ্গে কদবেল পাউডার মিশিয়ে খেলে সঙ্গে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি হয় এবং রক্তাল্পতাও দূর হয়।

৯. ডায়াবেটিস: কদবেলের খনিজ উপাদান ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।

১০. পেটের রোগেঃ কদবেলে ট্যানিন নামক উপাদান রয়েছে। যা পেট ব্যথা ও ডায়রিয়া ভালো করে। এই গাছের বাকল মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে আমাশয় ভাল হয়। ছোট এলাচ ও মধুর সাথে কাঁচা কদবেল খেলে বদহজম দূর হয়। তাছাড়া কদবেল কলেরা ও পাইলস রোগ ভালো করে ।

১১। কিডনি ভালো রাখতে: কদবেল মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে। ফলে কদবেল খেলে কিডনি ভালো থাকে। শুধু তাই নয় কদবেল যকৃৎ ও হৃদপিন্ডও ভালো রাখে।

১২। রক্ত বৃদ্ধি করে: মিছরির সাথে কদবেল পাউডার মিশিয়ে খেলে দেহে রক্ত বৃদ্ধির পাশাপাশি শক্তিও বৃদ্ধি পায়। রক্তের নিম্নচাপ কমাতে জাদুকরি ভূমিকা রাখে।

১৩. শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে: কদবেল শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্নায়ুর শক্তি যোগায়। ফলে গরম কম লাগে। ত্বকের জ্বালা পোড়া কমাতে কদবেল মলম হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।
১৪. রক্ত পিত্তে: প্রবল রক্তপিত্তে কদবেল পাতার রস এক চা চামচ করে এককু পানি মিশিয়ে প্রতি দিন দুই বেলা খেলে ভাল হয়।

১৫. চোখের পাত: কারো কারো চোখের পাতার চুল এমনিতেই পড়ে যেতে দেখা যায়। মেয়েদের ক্ষেত্রে এ অবস্থা বেদনাদায়ক অবস্থার সৃষ্টি করে। এমতাবস্থায় কদবেলের ফুল বেঁটে লাগালে এ অসুবিধা সেরে যায়।
১৬. স্তনের বিভিন্ন রোগ: পাকা কদবেলে আছে টিউমার ও ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান। যা স্তন টিউমার ও ক্যান্সার কোষ তৈরীতে বাধা দান করে।

১৭. স্কার্ভি রোগে: কদবেল ভিটামিন সি এর ভালো উৎস বিধায় স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধে সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
১৮. দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠবদ্ধতা: কদবেল দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠবদ্ধতা, দীর্ঘস্থায়ী আমাশা দূর করে।

মুন্সি আব্দুল কাদির
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড,
লাদদিঘিরপাড় শাখা, সিলেট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন