Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গ্রামের একটি বাড়ি থেকে প্রায় ২৫ লাখ জাল টাকা উদ্ধার, আটক ৩

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০২২, ৫:২১ পিএম

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ একটি গ্রামের বাড়ি তল্লাশি করে প্রায় ২৫ লাখ টাকার জাল টাকা উদ্ধার করেছে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ। শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অভিযান শেষে ওই জাল টাকা উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত টাকাগুলো এক হাজার টাকার নোট দ্বারা বান্ডিল করা ছিলো।

জানা যায়, উপজেলার রাজীবপুর ইউনিয়নের বৃ-দেবস্থান গ্রামের মো. কাশেম মিয়া (৬৫) নামে এক ব্যক্তির জাল টাকা শনিবার সকালে ওই বাড়ির দুটি শিশু কিছু টাকা নিয়ে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরে যায়। তারা শহরের সিলভার পট্টির এক মিষ্টির দোকান থেকে কিছু মিষ্টি কিনে দোকানিকে এক হাজার একটি নোট দেয়। শিশুদের হাতে এক হাজার নোটের তোড়া দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজনের মনে সন্দেহ দেখা দিলে তাদের আটকে রেখে থানায় খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে এসে শিশু দুটিকে নিয়ে জড়িতদের ধরতে কাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে শিশুদের পিছু পিছ পুলিশ বৃ-দেবস্থান গ্রামে পৌছায়। সেখানে শিশুদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কিছু তথ্য পেয়ে তাদের নানা কাশেম মিয়ার বাড়িতে প্রবেশ করে পুলিশ। কিন্তু বাড়ির লোকজন জাল টাকার ঘটনা শুনে আকাশ থেকে পড়ার ভান করেন। তাদের এমন অবস্থা দেখে পুলিশ ঘরে প্রবেশ করে একটি বড় ট্রাংক থেকে বিপুল পরিমাণ কাগজ উদ্ধার করে। ওই কাগজগুলোতে টাকার নোটে নিরাপত্তা সূতার মতো দেখতে পেয়ে সন্দেহ হয় পুলিশের। এক পর্যায়ে বাড়ির মালিক কাশেম ও শিশু দুটিকে একটি ঘরে রেখে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে ঈশ্বরগঞ্জ থানার এসআই মো. আশরাফুল একটি চালাঘরে ঢুকে বালি খুঁড়ে একটি ব্যাগ উদ্ধার করেন। ব্যাগটি খুলে ভেতরে থাকা ২৪টি এক হাজার টাকা নোটের বান্ডিল উদ্ধার করে। একেকটি বান্ডিলে একশতটি করে এক হাজার টাকার নোট রয়েছে। অন্যাদিকে শিশুদের হাত থেকে ৯০টি এক হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর পুলিশ আরেকটি ঘরের সিলিং তল্লাশি করে নিরাপত্তা সূতার মতো দেখতে দুই বান্ডিল রাঙতা কাগজ উদ্ধার করা হয়।

তবে পুলিশ তল্লাশি চলার সময় কাশেম মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগম পালিয়ে যান।অন্যদিকে তল্লাশি চলার সময় বাড়ির একটি কক্ষে আটক ছিলেন কাশেম মিয়া। তাঁর কাছে বাড়িতে বিপুল পরিমাণ জাল নোট ও নোট তৈরির নানা উপকরণ থাকা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান। এসব উপকরণে কে এনে রেখেছে জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে রাজী হননি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাশেম মিয়ার তিন ছেলে ও ছয় মেয়ে। বড় ছেলে ডালিম মিয়া (৪০) বেকার জীবন যাপন করেন। তিনি বেশ কয়েকটি মামলার আসামি। পুলিশ তাঁর খোঁজে কয়েকদিন পর পর বাড়িতে আসে। এ কারণে তিনি পলাতক থাকেন। অন্যদিকে এক মেয়ের জামাইয়ের নাম মো. সেলিম মিয়া (৪৫)। তিনি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা ইউনিয়নের ডুমরি গ্রামের আবদুল আজিজের পুত্র। সেলিম মিয়া কয়েক মাস আগে ঢাকায় বিপুল পরিমাণ জাল টাকাসহ র‍্যাবের হাতে ধরা পড়েছিলেন। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত আছেন। সূত্রটি জানায়, গত দুইদিন আগে সেলিম শ্বশুর বাড়ি থেকে একটি বস্তা নিয়ে গেছেন। শিশুদের দেওয়া তথ্য ও শ্বশুরবাড়ি থেকে বস্তা নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় গ্রামের লোকজন ধারণা করছেন সেলিম তাঁর শ্বশুর বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা সরিয়ে নিয়েছে।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ অফিসার ইনচার্জ পীরজাদা শেখ মোহাম্মদ মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, দুটি শিশুকে ধরার পর ওদের সাথে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে জাল টাকা উদ্ধার করা হয়েছে এবং এখনও অভিযান অব্যাহত আছে। অভিযান শেষে আইগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এঘটনায় জড়িতদের তিন জনকে আটক করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উদ্ধার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ