Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান

মিজানুর রহমান মিজান | প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০২ এএম

ঋতু পরিক্রমায় ধীরে ধীরে শীতের আগমন ঘটছে। এই শীত নিয়ে আসে কিছু মানুষের জন্য শান্তিময় আগমনী বার্তা। তাদের মধ্যে দেখা যায় শীতের নানা প্রকার কাপড় পড়ার আমেজ। বিশেষ করে, উচ্চবিত্ত আর মধ্যেবিত্তদের তেমন কোনো সমস্যা নেই। তারা মূলত শীতকে উৎযাপন করে থাকে। কিন্তু নি¤œবিত্ত এবং সামাজে পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য এই শীত নিয়ে আসে এক ভয়াবহ দুর্ভোগ। তারা প্রয়োজনীয় কাপড় না থাকার করণে শীতে প্রচন্ড রকমের কষ্ট করে। বিশেষ করে, গৃহহীন মানুষ, পথশিশুদের কষ্টের কোন শেষ থাকে না এই শীতকালে। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত নিজ নিজ অবস্থান থেকে তাদের কষ্ট লাঘবের জন্য চেষ্টা করা। তাহলে হয়তো এই শীতার্ত মানুষগুলোর কষ্ট কিছুটা কমে আসবে। আমাদের সমাজে সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের জন্য শীতকাল হলো এক ধরনের অভিশাপ। সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলো গ্রীষ্মকালে বা গরমের দিনে ফুটপাথ, রেলস্টেশন ও বস্তিতে থাকতে পারে। কিন্তু শীতকালে তাদের জন্য ফুটপাথ কিংবা রেলস্টেশনে থাকা খুবই কষ্টকর বা অসহনীয়। তাছাড়া শীতে তাদের মাঝেমধ্যে না খেয়েও থাকতে হয়। শৈত্যপ্রবাহের রুষ্টতা থেকে রক্ষা পাওয়ার ন্যূনতম ব্যবস্থাপনাও তাদের থাকে না। ফলে অসহায় ও হতদরিদ্রদের কষ্ট কেবল বেড়েই যায়। বৃদ্ধ, শিশু ও ফুটপাথের গরিব মানুষ গরম কাপড়ের অভাবে মারাও যায়। গত কয়েক দিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে শীতের তীব্রতা ক্রমেই বাড়ছে। বর্তমান শৈত্যপ্রবাহ আর ঠান্ডা দেশের উত্তরাঞ্চলের নি¤œআয়ের জনগণ অত্যন্ত কষ্টে দিনাতিপাত করছে, সেই সঙ্গে ডায়রিয়া, জ্বর, হাঁচি, কাশি, শ^াসকষ্টসহ ঠান্ডাজনিত রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এক্ষেত্রে শীতার্তদের জন্য আমাদের অনেক কিছুই করণীয় আছে। সরকারের পাশাপাশি আমরাও পারি শীতার্তদের জন্য আমাদের সাহায্যের হাত প্রসারিত করতে। শীতের সময় শহরাঞ্চলের মানুষের তুলনায় গ্রামের সাধারণ মানুষ বেশি অসহায় হয়ে পড়ে। যেখানে তাদের দু’বেলা দু’মুঠো খাবার কিনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে শীতের বস্ত্র কেনা অসম্ভব। প্রতিবছর শীতের সময় দেশের বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা এমনকি ব্যক্তিপর্যায়ে শীতার্ত মানুষের জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। অতীতে সরকারি পর্যায়েও গরিব মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এবার এখন পর্যন্ত সে ধরনের কোনো তৎপরতা চোখে পড়ছে না। অন্যদিকে দেশে ব্যবসায়-বাণিজ্যে মন্দাভাবের কারণে এক ধরনের জ্বরাগ্রস্ত সময় বিরাজ করছে। এর প্রভাব সামাজিক কর্মকান্ডের ওপরও পড়ছে। কিন্তু সমাজের বিত্তবান ও মানবিক বোধসম্পন্ন ব্যক্তিরা যদি দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে না দাঁড়ায়, তা হলে মানুষের দুর্ভোগ শুধু বাড়বেই। এক্ষেত্রে সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ববোধ থেকে এগিয়ে আসতে হবে। ব্যক্তি পর্যায়ের উদ্যোগের মাধ্যমেও এমন পরিস্থিতি থেকে শীতার্তদের রক্ষা করা যায়। তাই আসুন, আমাদের যার যতটুকু সামর্থ্য আছে তাই নিয়ে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াই। তাহলেই হয়তো শীতের কষ্ট থেকে বেঁচে যাবে হাজারো মানুষ।

শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন