Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর!

গৃহস্থালিসহ সব ধরনের গ্যাসের দাম বাড়বে

| প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : সব ধরনের গ্যাসের দাম বাড়াবে সরকার। নতুন বছরের শুরুতে অর্থাৎ ১ জানুয়ারি থেকে এই মূল্য বৃদ্ধি ঘটতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে। মূল্য বৃদ্ধির এই ঘোষইা দেয়ার প্রস্তুতিও নিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বিইআরসি।
গত আগস্ট মাসের গণশুনানিতে বিইআরসি’র মূল্যায়ন কমিটি জানিয়েছিল, গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। কিন্তু এখন নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে করে সব ধরনের গ্যাসের দামই নতুন করে নির্ধারণ করা হবে।
এ ব্যাপারে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সূত্র জানায়, শুনানির পর্যালোচনা শেষে হিসাব চূড়ান্ত করা হয়েছে। দ্রুত সময়ে নতুন দাম ঘোষণা করা হবে।
এদিকে, নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে জনজীবনে অস্থিরতা দেখা দেবে। পরিবহন খাতের মালিক-শ্রমিকরা বাস ও ট্রাক ভাড়া বাড়ানোর জন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করবে। আবার সিএনজি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে ডিজেল চালিত বাস, ট্রাক ও লরিগুলোও দাম বাড়ানোর নৈরাজ্যে মেতে উঠবে। এর ফলে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। যার বিরূপ প্রভাব পড়বে জাতীয় অর্থনীতিতে। দেখা দেবে মুদ্রাস্ফীতি।
ইতোমধ্যেই ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, সিএনজি স্টেশন মালিকদের সংগঠন এবং ক্যাব-এর পক্ষ থেকে গ্যাসের দাম বাড়ানোর তীব্র বিরোধিতা করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, গ্যাসের দাম বাড়লে জনজীবনে যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে-এর দায়ভার সরকারকেই বহন করতে হবে।
অপরদিকে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ব্যাপারে বিইআরসির মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, পেট্রোবাংলা গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের ২ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা এফডিআর করে রেখেছে। আবার গ্যাসের যে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে সেখানো কোনো যুক্তিও দিতে পারেনি। তবুও নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ।
তবে পেট্টোবাংলা গ্যাসের দাম বাড়ানোর যুক্তিতে জানায়, গ্যাস বিক্রির কর ও মূসক বাবদ ১৪০ কোটি টাকা প্রতি মাসে সরকারকে দিচ্ছে এবং একই সময়ে বিদেশি গ্যাস কোম্পানিগুলোর গ্যাস কেনার জন্যও টাকা দিতে হচ্ছে। বর্তমানে পেট্রোবাংলাকে এই বাবদ মাসে ৭০ কোটি টাকা দিতে হয়।
কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নতুন আইন অনুযায়ী সরকারকে তাদের আয়ের ৮৩ ভাগ মূসক ও শুল্ক বাবদ দিতে হবে। আর এই অর্থ যোগান দিতেই গ্যাসের দাম বাড়ানো প্রয়োজন বলে বিইআরসি সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, আবাসিক গ্রাহকদের দুই চুলার জন্য ৩৫০ টাকা বেড়ে ১ হাজার টাকা এবং এক চুলার জন্য ২শ’ টাকা বেড়ে ৮শ’ টাকা করা হতে পারে। বিদ্যুৎ উৎপাদন, সার কারখানা, শিল্প, বাণিজ্যিক, চা-বাগানেরও গ্যাসের দাম বাড়তে পারে।
গত ৭ থেকে ১৮ই আগস্ট পর্যন্ত বিইআরসি কার্যালয়ে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের উপর গণশুনানি হয়।
বিতরণকারী কোম্পানিগুলো গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব মূল্যায়ন করে বিইআরসি মূল্যায়ন কমিটি ভিন্ন ভিন্ন মন্তব্য করে। বেশিরভাগ কোম্পানিই লাভ করছে বলে তাদের গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই বলে জানায় মূল্যায়ন কমিটি।
কোম্পানিগুলো গড়ে ৬৬ থেকে ১৪০ শতাংশ পর্যন্ত গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। আর তা বাস্তবায়নের অনুরোধ করেছিল ১লা জুলাই থেকে। এপ্রিল মাসে এ প্রস্তাব দেয় তারা।
২০১৫ সালের ১লা সেপ্টেম্বর থেকে আবাসিকসহ কয়েকটি শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়। সে সময় দুই চুলায় ১৫০ টাকা বাড়িয়ে ৬৫০ এবং এক চুলায় ২শ’ টাকা বাড়িয়ে ৬শ’ টাকা করা হয়েছিল। তার আগে ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে সকল গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়।



 

Show all comments
  • parvez ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১০:৩৫ এএম says : 0
    "কোম্পানিগুলো গড়ে ৬৬ থেকে ১৪০ শতাংশ পর্যন্ত গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। আর তা বাস্তবায়নের অনুরোধ করেছিল ১লা জুলাই থেকে। এপ্রিল মাসে এ প্রস্তাব দেয় তারা।" কোম্পানিরাই টো দেশের মালিক !
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্যাস

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৯ জানুয়ারি, ২০২৩
১৮ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ