Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিন

| প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

এখন এক আতঙ্কের নাম ডেঙ্গু। সারাদেশে ডেঙ্গু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ডেঙ্গু রোগের প্রধান বাহক হচ্ছে এডিস মশা। বিভিন্ন পাত্রে জমে থাকা পানির মধ্যে বংশ বিস্তার করে এটি। ডেঙ্গু সাধারণত রাজধানী শহর ঢাকাতেই বেশি দেখা যায়। অবশ্য এর পেছনে কারণও রয়েছে। ক্রমবর্ধনমান অপরিকল্পিত নগরায়ন যে ঢাকাকে ক্রমশ বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে সেকথা সবারই জানা। ঢাকায় ডেঙ্গুর জন্য সবচেয়ে বেশি দায় কার? এর উত্তরে হয়তো অনেকেই বলবে আমাদের দুই সিটি কর্পোরেশনের কথা। বছরের পর বছর তাদের ব্যর্থতা ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে ক্রমশ খারাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবারই ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে কিন্তু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর এবং দৃশ্যমান তেমন কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। যতটুকু ব্যবস্থা নেয়ার কথা তা না নিয়ে দায়সারা কিছু কাজ করেই তাদের দায়িত্ব শেষ করছে। তাদের মশা মারার ওষুধের কার্যকরিতা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। ডেঙ্গুর জন্য ব্যক্তি পর্যায়ের দায়ও কম নয়। বাসা বাড়ির বিভিন্ন স্থানে, ফুলের টবে, বালতি বা ভাঙা যেকোনো পাত্রে পানি জমে থাকতে পারে এবং সেখান থেকেই এডিস মশা জন্ম নিতে পারে। যেখানে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই, সেখানে অনেকদিন ধরে পানি জমে থাকে। বিশেষ করে, নির্মাণকাজ চলছে এমন জায়গায় এটি বেশি দেখা যায়। এসব জায়গায় জমে থাকা পানিতে এডিস মশা জন্ম নেয়। তাই তা অপসারণের পাশাপাশি নিয়মিত মশার ওষুধ ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। ডেঙ্গুর জন্য যেহেতু একমাত্র এডিস মশা দায়ী তাই কোনোভাবে যেনো এডিস মশা জন্মাতে না পারে সেই ব্যবস্থা করতে পারলে সাফল্য নিশ্চিত। কাজেই এক্ষেত্রে আমাদের নিজেদের সচেতনতা অনেক বেশি প্রয়োজন। নিয়মিত বাসা বাড়ির কোনো স্থানে পানি জমে আছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। পাশাপাশি ছোট ছোট নদী, খালগুলোকে দখল মুক্ত করে পানি প্রবাহ নিশ্চিত করা গেলে উপকার পাওয়া যাবে। সেই সাথে নদীগুলোকে ময়লা ফেলার স্থানে পরিণত করা বন্ধ করতে হবে। প্রকৃতপক্ষে সিটি কর্পোরেশন বা সরকারের একার পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। সকলের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সেইসাথে কর্তৃপক্ষকে তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। নগরের নোংরা জলাধার, বর্জ্য অব্যবস্থাপনা ও অপরিকল্পিত নগরায়ন শুধু ডেঙ্গু নয় নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি করছে। এগুলোর জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী, সঠিক, কার্যকর পরিকল্পনা এবং তার সঠিক বাস্তবায়ন করা। এই ক্ষেত্রে আমরা প্রচন্ড রকমের পিছিয়ে আছি। নেই দীর্ঘমেয়াদী বাস্তবসম্মত কোনো পরিকল্পনা। আবার যা আছে তার নেই সঠিক বাস্তবায়ন। তাই যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, ডেঙ্গুসহ সকল ধরনের নাগরিক দুর্ভোগ কমাতে বাস্তবসম্মত স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করুন এবং তার যথাযথ বাস্তবায়ন করুন।

মো. মিলন হোসেন
শিক্ষার্থী, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন