বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চট্টগ্রাম ব্যুরো : রাহনুমায়ে শরিয়ত ও তরিকত হযরতুল আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ (ম.জি.আ.) বলেছেন, আল্লাহ্ ও রাসূল (সা.)’র সন্তুষ্টির মধ্যে নিহিত আছে মানবতার শান্তি ও উন্নতি। নফস শয়তানকে মোকাবিলা ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে দ্বীনের খেদমতে সম্পর্কে নিবেদিত থাকার উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি ভক্ত মুরীদ ও মুসলমানদের ইসলামের নামে বাতেল ফেরকাসমূহ থেকে নিজের জান-মাল ও ঈমান আক্বিদাকে হেফাজত করার আহ্বান জানান। গত মঙ্গলবার জুলুস পরবর্তী জামেয়া ময়দানে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের বর্ণাঢ্য এ জুলুুসে নেতৃত্ব দেন আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ (ম.জি.আ.)। সকাল ৯টায় ষোলশহর আলমগীর খানকাহ থেকে শুরু হয় এ জুলুস। জুলুসটি মুরাদপুর, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, চন্দনপুরা আন্দরকিল্লা, জামাল খান, গণি বেকারি, প্যারেড ময়দানসহ বিভিন্ন রুট প্রদক্ষিণ করে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া প্রাঙ্গণে শেষ হয়। জুলুসে অংশগ্রহণকারী লাখো লাখো নবীপ্রেমিক নারায়ে তাকবির-আল্লাহু আকবর, নারায়ে রিসালত- এয়া রসূলাল্লাহ, নারায়ে গাউসিয়া- এয়া গাউসে আজম দস্তগীর স্লোগান ও হামদ- নাতের ধ্বনিতে এলাকা মুখরিত করে তোলেন। জুলুস শেষে দুপুরে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় বিশাল ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) মাহফিল।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শাহজাদা আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ। প্রধান বক্তা ছিলেন আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ আহমদ শাহ্। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন আনজুমান ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মহসিন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। বক্তব্য রাখেন গাউসিয়া কমিটির চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ, আল্লামা মুফতি ওবাইদুল হক নঈমী, মাওলানা সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, মুফতি আবদুল ওয়াজেদ, মাওলানা আবুল কাশেম ফজলুল হক, মাওলানা বখতিয়ার উদ্দিন, অধ্যাপক মাওলানা জালাল উদ্দিন আল আজহারী, অধ্যক্ষ মাওলানা আবু তৈয়ব চৌধুরী প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ পবিত্র কোরআনের উদ্ধৃতির আলোকে রাহমাতুল্লীল আলামীন রাসূলে করীমের শুভাগমনে খুশী উদযাপন করার খোদায়ী বিধান অনুসরণে গাউসে জমান সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ (রহ.)’র ১৯৭৪ সনে বাংলাদেশে জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী’র প্রবর্তনের যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন তারই অনুসরণে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে জশনে জুলুস ব্যপ্তি লাভ করেছে। তিনি বলেন, সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি (রহ.)’র আফ্রিকা, রেঙ্গুন-বার্মা হয়ে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে জামেয়া প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যে বিজয় নিশান উড়িয়েছেন তা আজ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের এক ভরসাস্থল। তিনি হযরাতে কেরামের আমানত রক্ষা করে সিলসিলার হযরাতে কেরামের প্রতি শোকরিয়ার সাথে নিবেদিত থাকার আহ্বান জানান।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ আহমদ শাহ্ বলেন, প্রিয়নবী (সা.)’র প্রতি মহব্বতই যেহেতু ঈমানের মূল সুতরাং রাসূলে করিম (সা.)’র প্রতি পূর্ণ মহব্বত রাখবেন তারাই ঈমানে কামেল। হাদীস শরীফের উদ্ধৃতির আলোকে শয়তান যেহেতু হুজুর করিম (সা.)’র আকৃতি ধারণ করতে পারে না সুতরাং নবীপ্রেমিক ঈমানে কামেলদের ইন্তেকালে শয়তান ধোঁকা দিতে পারে না। তিনি বাংলাদেশের চট্টগ্রামের জশনে জুলুসে প্রথমবার অংশ নিয়ে নবীপ্রেমিক ভাইদের ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)’র আনন্দের বহিঃপ্রকাশ দেখে অভিভূত হয়েছেন উল্লেখ করে হাদীস শরীফের নির্দেশানুযায়ী বাস্তবতা পরিলক্ষিত হয়েছে মত প্রকাশ করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র আ জ ম নার্ছির উদ্দীন বলেন, ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) মুমিন মুসলমানদের পরম আনন্দের দিন। জুলুস ও মাহফিলে একসাথে তিনজন আওলাদে রাসূলকে পেয়ে আনন্দে উদ্বেলিত চট্টগ্রামবাসী। তাদের উপস্থিতিতে নতুন মাত্রা পেয়েছে এ অনুষ্ঠান। পিএইচপি ফ্যামেলির চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমান বলেন, জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী ঈমানী চেতনাকে শাণিত করে এবং মুসলিম সমাজে ঐক্যের প্রেরণা জোগায়। আনজুমান ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মহসিন বলেন, প্রতি বছর জুলুসে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এর শুকরিয়া আদায় শেষ করা যাবে না। আনজুমান ট্রাস্ট সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন ১৯৭৪ সালে হযরতুল আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ (রহ.) বাংলাদেশে সর্বপ্রথম জশনে জুলুস প্রবর্তন করেন। তার প্রবর্তিত জুলুস বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলসহ বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। পরে আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ সিলসিলার কার্যক্রম পরিচালনা এবং বিশ্ব মুসলিমের শান্তি এবং দেশ ও জাতির অগ্রগতি সুখ সমৃদ্ধি কামনায় মোনাজাত পরিচালনা করেন।
ছিপাতলী মাদরাসা
ছিপাতলী জামেয়া গাউছিয়া মুঈনীয়া কামিল মাদরাসা ও আনজুমানে কাদেরীয়া চিশ্তীয়া আজিজিয়া বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে পবিত্র জশনে ঈদ-এ মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে ১২ দিনব্যাপী আজিমুশ্শান মিলাদ মাহফিলের কর্মসূচির অংশ হিসাবে ১২ রবিউল আউয়াল ফজরের নামায জামাতে আদায়ের পর মাদ্রাসা জামে মসজিদ হতে বিভিন্ন এলাকা হতে আগত আলেম-ওলামা ও বিপুল সংখ্যক নবী প্রেমিকের অংশগ্রহণে বিশাল জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)’র যাত্রা শুরু হয়। জশনে জুলুসের উদ্বোধন করেন আজিজিয়া কাজেমী কমপ্লেক্স (ট্রাস্ট) বাংলাদেশ’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আল্লামা মুহাম্মদ আজিজুল হক আল্কাদেরী। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও আনজুমানের সভাপতি আল্লামা আবুল ফরাহ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিনের নেতৃত্বে ছিপাতলী মাদ্রাসা হতে জুলুস শুরু হয়ে ছিপাতলী ইউনিয়ন মোজাফ্ফপুর, মেখলের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ইছাপুর হয়ে রাঙ্গামাটি রোড়, হাটহাজারী পৌরসভার সড়ক হয়ে চারাবটতল, জাফরাবাদ, মুহাম্মদপুর এলাকা হয়ে গাউছিয়া মাদ্রাসা ময়দানে জমায়েত হয়। জুলুস শেষে মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন আল্লামা মুহাম্মদ আজিজুল হক আল্কাদেরী।
মুসল্লী কল্যাণ সংস্থা
জমিয়তুল ফালাহ মুসল্লী কল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ ও কমপ্লেক্সের সহকারী পরিচালক মীর মুহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন তৈয়বিয়া ইসলামিক মিশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাওলানা এ এম মঈন উদ্দিন চৌধুরী হালিম। প্রধান বক্তা ছিলেন আগ্রাবাদ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা গাজী মোজাম্মেল হক কাদেরী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।