গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
ইতালি ও ফ্রান্স প্রবাসীদের তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে পাসপোর্ট প্রদান এবং সংশোধন আবেদনকারীদের দ্রুত পাসপোর্ট ডেলিভারির দাবিতে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সামনে কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ করেছেন প্রবাসী ও তাদের স্বজনরা।
গতকাল সকালে পাসপোর্ট প্রত্যাশী প্রবাসী ও তাদের স্বজনরা অধিদপ্তরের সামনে বিক্ষোভ করেন এবং দ্রুত পাসপোর্ট দেয়ার দাবি জানান।
আবেদনকারীরা জানান, তারা দিনের পর দিন পাসপোর্ট অফিসে ঘুরছেন। এক কর্মকর্তা থেকে আরেক কর্মকর্তার কক্ষে গেছেন। কর্মকর্তারা তাদের একেক সময় একেক কথা বলেছেন। তারা শর্তগুলো মেনেছেন। প্রয়োজনীয় কাগজও জমা দিয়েছেন। কিন্তু, কেউ তাদের সমাধান দিচ্ছেন না। নানা অজুহাতে তাদের বার বার ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। অনেকেই তাদের মতো সমস্যায় পড়লেও দালালদের দ্বারস্থ হয়ে সমাধান করেছেন।
দালালদের তারা মোটা অংকের টাকা না দেয়ার কারণে তাদের সমাধান হচ্ছে না। সরকারি অফিসে তারা সরকারি সেবা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিতের দাবি জানান। সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সদর দপ্তরের সামনে প্রায় ৩০০ জন বিক্ষুদ্ধ প্রবাসীর স্বজন ও পাসপোর্ট না পাওয়া গ্রাহকরা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তাদের কর্মসূচিতে অনেক সেবা প্রত্যাশী একাত্মতা প্রকাশ করেন।
অনেকের হাতে প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। প্ল্যাকার্ডে পাসপোর্ট না পাওয়া, দালালদের দমনের জন্য পুলিশের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এ সময় তারা পাসপোর্ট পাওয়ার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বিক্ষুব্ধরা পাসপোর্টের মহাপরিচালকের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা তাদের ভেতরে যেতে দেয়নি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
পাসপোর্ট প্রত্যাশী সারোয়ার হোসেন জানান, তার ভাই থাকেন ইতালিতে। তিনি ৪ বছর আগে দেশ থেকে ইতালিতে গেছেন। তার পাসপোর্টটি হারিয়ে গেছে। তিনি আরও জানান, তার পাসপোর্ট হারিয়ে গেছে তার প্রমাণসহ পাসপোর্ট অফিসে জমা দেয়া হয়েছে। কিন্তু, অফিসের কর্মকর্তারা তাদের বার বার ফিরিয়ে দিয়েছেন। তার ভাইয়ের নতুন পাসপোর্ট না পাওয়ার কারণে সেখানে নাগরিকত্বের আবেদন এবং টাকা পাঠানোসহ নানা সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
সুমন নামে আরেক প্রবাসীর স্বজন জানান, আমরা পাসপোর্ট অফিসে ঘুরতে ঘুরতে বিরক্ত হয়ে সড়কে নেমেছি। তার ভাই গ্রিসে থাকেন। ৫ বছর আগে সেখানে গেছেন। তিনি জানান, নতুন পাসপোর্টের জন্য তার ভাই আবেদন করেছেন। তিনি পাসপোর্ট অফিসের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তোলেন।
বয়স সংশোধন ও পাসপোর্ট না থাকায় চিকিৎসা সেবাসহ তার ভাই প্রবাসে নানারকম অসুবিধায় আছেন। খালেক নামে আরেক গ্রাহক জানান, তার ভাই থাকেন রাশিয়ায়। যখন তিনি রাশিয়ায় যান তখন দেশে তার পাসপোর্ট ছিল না। এক দালালের মাধ্যমে তিনি রাশিয়ায় গেছেন। এখনতো তার পাসপোর্ট পাওয়া নৈতিক অধিকার। কিন্তু, পাসপোর্ট অফিস তাকে বার বার ঘুরাচ্ছে। ফ্রান্স প্রবাসীর এক স্বজন তোফাজ্জল হোসেন জানান, ৩ মাস আগে তার ভাই আবেদন করেছেন। পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা শুধু বলছেন তার পুরনো পাসপোর্ট জমা দিতে হবে। তিনি তা দিয়েছেন। কিন্তু, তিনি এখনো পাসপোর্টটি পাননি। এ বিষয়ে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. নুুরুল আনোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিদপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মানবজমিনকে জানান, যারা সঠিকভাবে পাসপোর্টের আবেদন করেছেন তারা পাসপোর্ট পাবেন। যাদের পুরনো পাসপোর্ট আছে তারা যদি নতুনভাবে আবেদন করেন তাহলে তাদের পুরনো পাসপোর্টটি জমা দিতে হবে। না হলে আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না। যাদের পাসপোর্ট হারিয়ে গেছে তাদের একাধিক প্রমাণ দেখাতে হবে যে, তার পাসপোর্টটি হারিয়ে গেছে। এ বিষয়ে শেরেবাংলা নগর থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন শেষে সেবা প্রত্যাশীরা সেখান থেকে চলে গেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।